৭৮তম কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের স্বল্পদৈর্ঘ্য শাখায় সেরা সিনেমার পুরস্কার জিতেছে ‘আই অ্যাম গ্লাড ইউ আর ডেড নাউ’। সিনেমার পরিচালক একজন ফিলিস্তিনি। সংবাদ সম্মেলনে গাজার ২০ বছর আগের বিভীষিকাময় দিনগুলো নিয়ে কথা বলেন তরুণ নির্মাতা তৌওফিক বারহোম। কথা বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এই ফিলিস্তিনি নির্মাতা। নির্যাতিত মানুষের হয়ে কথা বলতে থাকেন তিনি। এ সময় বারহোমের পিঠে হাত দিয়ে সান্ত্বনা দেন বাংলাদেশের নির্মাতা আদনান আল রাজীব।
আদনান আল রাজীবের সিনেমা ‘আলী’ কান উৎসবের স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা বিভাগে “জুরি স্পেশাল মেনশন” স্বীকৃতি পেয়েছেন। তাদের দুজনকে নিয়েই ছিল এই সংবাদ সম্মেলন।
পরিচালক বারহোম বলেন, ‘আমি এখন ফিলিস্তিন থেকে অনেক অনেক দূরে। আমি এখন চাইলে ইউরোপের যেকোনো জায়গায় যেতে পারি। এর কারণ প্রধানত, দেশগুলোর সরকার বুঝতে পারে, মানুষেরা এগুলো বোঝেন। মানুষের মুক্তি যেন অন্য কারও বিরোধিতা না করে হয়। এটাই মুক্তি ও শান্তির মধ্যে পার্থক্য রচনা করে দেয়।’
একসময় গাজায় খুব কাছ থেকে যুদ্ধ দেখেছেন তৌওফিক বারহোম। দেখেছেন নিজের কাছের মানুষদের দুর্দশা। নিরীহ মানুষের আর্তনাদ এখনো তার কানে বাজে।
নির্মাতা পুরস্কারটি ফিলিস্তিনের মানুষকে উৎসর্গ করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘এটা ফিলিস্তিনের শান্তিকামী মানুষের জন্য। ঘৃণা যথেষ্ট হয়েছে। এই পাগলামি বন্ধু করুন। এটাই আমি বলার চেষ্টা করেছি।’
এ সময় উপস্থাপক বলেন, ‘সিনেমা ও শিল্পমাধ্যম সব সময়ই নানাভাবে মানুষকে সঠিক পথ দেখায়। এ রকম কোনো কিছু কি আপনি সিনেমায় দেখাতে চেয়েছেন?’ তার সঙ্গে একমত হয়ে তৌওফিক জানান, এমনটাই তিনি সব সময় চেয়েছেন। এই পথেই তিনি হাঁটতে চান।
সিনেমা একটি জাদুর মতো মাধ্যম, যেখানে অবিশ্বাস্য সবকিছু করা যায়। আমি কথা বলতে চেয়েছি সহিংসতার বিরুদ্ধে। সবাই সব সময় যে ধরনের গল্প বলে, সেটা আমি বলিনি। আমি গতানুগতিক কোনো কিছু করতে চাই না। আমরা সবাই মানুষ। এখনো ফিলিস্তিনের অনেক মানুষ রয়েছে, যারা একেবারেই অসাধারণ। তারা অনেক সদয়, ভদ্র। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে প্রোপাগান্ডাগুলো এমনভাবে ছড়ায় যা আমাকে উত্তেজিত করে তোলে। যে কারণে আমি সিনেমায় ফিলিস্তিনের মানুষের ভিন্ন একটি দৃষ্টিভঙ্গি দেখানোর চেষ্টা করেছি’।