জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতন আন্দোলনে ব্যাপক সরব ছিলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। ছাত্র জনতার পক্ষে রাস্তায়ও নেমেছিলেন। তবে পট পরিবর্তনের পর অনেকটা নীরব ছিলেন অভিনেত্রী।সম্প্রতি আড়াল ভেঙেছেন তিনি। অভিনয় থেকে কিছুটা দূরে থাকলেও সামাজিক মাধ্যমে আছেন এই অভিনেত্রী।
শনিবার ৩ মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নতুন করে একটি পোস্ট করেছেন এ অভিনেত্রী। তিনি লিখেছেন, ‘আমি পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বসবাস করি, কিন্তু আমি সেখানে মরতে রাজি নই। আমি এমন পৃথিবী দেখতে চাই না যেখানে অধিকার নির্ধারিত হবে ক্ষমতায় এবং শর্তসাপেক্ষে হবে স্বাধীনতা। আমি এমন ভবিষ্যতে বিশ্বাসী যেখানে প্রতিটা মানুষের কথা বলার অধিকার থাকবে, পছন্দ থাকবে এবং থাকবে নিজেদের জীবন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার- যা কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারো নেই’।
বাঁধনের এই পোস্টে ওঠে আসে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি। বাঁধনের এমন পোস্টের কারণ জানতে চাইলে বাঁধন জানান, এটা শুধু আজকের নয়, তার সব সময়ের উপলব্ধি। এমন সমাজেই বসবাস করে বড় হয়েছেন তিনি।
এ ধরনের পরিবারেই তার বেড়ে ওঠা। নিজের পরিবারকেও পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার একটা অংশ বলে উল্লেখ করেন বাঁধন। এমনকী তার বাবার বিষয়েও অভিনেত্রীর মতামত একই।
নারীদের প্রতি সহিংসতা ও নারী অধিকার নিয়ে বৈষম্য প্রসঙ্গে রাষ্ট্রকেই দায়ী করলেন এ অভিনেত্রী। তার মতে, এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের দায়টা সবচেয়ে বেশি। রাষ্ট্রের উচিত, সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের পথ দেখানো। এরপর মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। রাষ্ট্রের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কটা সম্পূরক। নারী সংস্কার কমিশনে যে প্রস্তাব রয়েছে, সেগুলোর বেশির ভাগের সঙ্গে একমত রয়েছেন বলেও জানান বাঁধন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নারী বিদ্বেষ বাড়ছে জানিয়ে বাঁধন জানান, আমরা কোন সমাজব্যবস্থায় বাস করি, সেটার একটা প্রতিফলন এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। মানুষ কী চিন্তা করছে, প্রকাশ্যে বলতে না পেরে অনেকে ফেক আইডি দিয়ে ফেসবুকে লিখছে। মানুষের প্রতি বিদ্বেষ, বিশেষ করে নারীর প্রতি বিদ্বেষ সেটি প্রকাশ করছে। অভিনেত্রী জানান, সোশ্যাল মিডিয়াতে তাকেও অনেকে বাজে ও কুৎসিত মন্তব্য করেন। তবে তিনি সমাজের বাস্তব চিত্র হিসেবে এসব প্রমাণ হিসেবেই রেখে দিতে চান।