সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সমর্থিত শোবিজ তারকাদের ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের কথোপকথনের স্ক্রিন শট ভাইরালের ধারাবাহিকতায় সংগঠনটি সংস্কারের দাবিতে সংস্কারকামী বেশ কয়েকজন শিল্পী নিজেদের দাবি তুলে ধরেছেন। যার প্রেক্ষাপটে অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশের সকল সদস্যের প্রতি আহবান জানিয়েছেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন।
৭ সেপ্টেম্বর একত্রিত হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় অশিল্পীসুলভ আচরণ করায় ক্ষমা চাওয়ার জন্য বলা হয়েছে অভিনয়শিল্পী সংঘকে। পরদিন ৮ সেপ্টেম্বর নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে একটি দীর্ঘ পোস্টে অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশের সকল সদস্যের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানিয়ে অভিনেত্রী বাঁধন লেখেন, ‘আপনারা প্লিজ সংগঠনের কাছে জানতে চান, চলমান এই সংস্কারের আলাপের বিষয়টা আপনারা যারা সংগঠনের সদস্য আছেন কমিটির পক্ষ থেকে আপনাদের সাথে তারা শেয়ার করেননি কেন? সংগঠনের পক্ষ থেকে বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি রাষ্ট্রের ক্রাইসিস মুহুর্তে যে বিবৃতি প্রদান করেছে সেটার জন্য সাধারণ সদস্যদের অনুমতি নেওয়া হয়নি কেন? এখন যে তারা বলছেন, তারা তখন এত কিছু করেছেন সেটা সকল সাধারণ অভিনয়শিল্পী জানে না কেন? কেন তারা ওই ‘আলো আসবেই’ গ্রুপে এমন আলোচনা হচ্ছে জেনেও গণহত্যাকে প্রশ্রয় দিয়েছেন? তারা কেন প্রতিবাদ করেননি জোড়ালোভাবে? কেন একটা ন্যাশনাল ক্রাইসিসে তারা এমন আচরণ করবেন? আমরা তাদের আমাদের প্রতিনিধি মনে করি। আমরা তাদেরকে দেশের সকল অভিনয়শিল্পীর প্রতিনিধি হিসেবে গণ্য করি। প্রতিনিধিরা এমন কেন হবে যে অন্যায়কে সমর্থন করে? কোন দল কী করছে সেটার দায় শিল্পী কেন নেবে? এটা তো গঠনতন্ত্রের বিরোধী। এটা তো একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। তাহলে কিভাবে রাষ্ট্রীয় রাজনীতির পাপেট হয়ে গেল এই সংগঠন? জিজ্ঞেস করেন… জিজ্ঞেস করেন… জিজ্ঞেস করেন… সাধারণ কিছু অভিনয়শিল্পী সংগঠনের সাথে বসতে চাইলেন যখন তাদের মতামত প্রকাশের জন্য, তখন সেই বিষয়ে তারা কেন আপনাদের সাথে আলাপ করলেন না? কেন আপনাদের জানালেন না?’
বর্তমান অভিনয় শিল্পী সংঘের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের উল্লেখ্য করে অভিনেত্রী লেখেন, ‘যেহেতু আপনারা বিভেদকারী এবং আপনাদের সকল অভিনয়শিল্পীর সাথে মুখোমুখি আলোচনায় বসার সদিচ্ছা নাই, আপনাদের আহবান জানাচ্ছি প্লিজ দায়িত্ব ছেড়ে দেন। চলেন সবাই মিলেমিশে সকল দৃশ্যমাধ্যমের পেশাদার অভিনয়শিল্পীদের নিয়ে একত্রিত করে সংগঠিত হয়ে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের সকল স্বার্থ, অধিকার এবং মর্যাদা নিশ্চিত করি। আমাদের বর্তমান সংগঠনটিকে সুন্দর করে এমন একটা সংগঠন বানাই যেটা সকল অভিনয়শিল্পীর ছায়া হবে। একসঙ্গে। ভেদাভেদহীন। অভিনয়শিল্পী পরিচয়ে।
সবশেষে আজমেরী হক বাঁধন লেখেন, ‘শিল্পীদের সকল অধিকার, স্বার্থ, মর্যারা রক্ষা যদি সংগঠন নিশ্চিত করে তাহলেই না অভিনয়শিল্পী নিশ্চিন্তে শুধু অভিনয়টাই করতে পারবে। আসেন সবাই মিলে জানতে চাই। সংগঠনকে প্রশ্ন করি।’
অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই সরব ছিলেন। শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই নয়, দেশ সংস্কারের দাবিতে রাজপথেও নেমেছিলেন বাঁধন। ছাত্র-জনতার পক্ষে হত্যা, গুম, নির্যাতনসহ সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।