শনিবার ২৬ জুলাই থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনেতা খাইরুল বাসারের নামে অপেশাদারিত্বের অভিযোগ তুলে আলোচনা-সমালোচনা উঠেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সিনেমা কনফার্মেশনের টাকা নিয়ে তিনি আর ফোন ধরছেন না। এই নিয়ে মুখ খেলেছেন অভিনেতা নিজেই।
সম্প্রতি খবর উঠেছে টলীউডে বলিউড অভিনেতা শারমান যোশির সাথে ‘ভালোবাসার মরশুম’ সিনেমায় অভিষেক হচ্ছে দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানজিন তিশার আর তাতেই আরেকটি চরিত্রে থাকছেন খাইরুল বাসার। তবে সেই সিনেমার জন্য সাইনিং মানি নিয়েছেন খাইরুল বাসার কিন্তু সিডিউল জটিলতায় পরে পরে সিনেমা থেকে তিনি সরে আসতে চাইলে তাকে অপেশাদারিত্বের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।
এই নিয়ে দেশের গণমাধ্যমকে খাইরুল বাসার বলেন, ‘আমার ক্যারিয়ারে এ পর্যন্ত এমন কোনো রেকর্ড নেই। কেউ আমার পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন, এ আমার ধারণার মধ্যেই ছিল না। মিটিং ডে–পরবর্তী তৃতীয় দিন আমি আমার সিদ্ধান্ত জানিয়েছি, আমার জটিলতা সম্পর্কেও বিস্তর বলেছি। শুটিং হবে আগামী সেপ্টেম্বরে। আর মিটিং করেছি গত তিন দিন আগে এবং এই তিন দিনের ভেতর শিডিউল জটিলতায় কাজটি করতে না পারার সিদ্ধান্ত জানানো অপেশাদারিত্ব নয়। আমাকে উনাদের কনফার্মেশন মানি পাঠিয়েছিলেন, তা আন্তরিকতা এবং গুরুত্ব হিসেবেই নিয়েছিলাম। আমার সিদ্ধান্ত এই ছিল যে আমি পারছি না এবং আপনাদের কনফার্মেশন মানি ফেরত নিন। এটা খুবই সিম্পল ব্যাপার। এমন নয় যে পরশু শুটিং, আজ বলছি আমি থাকছি না। উনাদের সঙ্গে মৌখিক সম্মতি ছাড়া কোনো চুক্তিপত্র হয়নি বা কিছুই ফাইনাল হয়নি। এখন শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় একটা কল রিসিভ করতে পারিনি বলেই আমার দীর্ঘদিনের অর্জন পেশাদারি নাই হয়ে গেল? কী আশ্চর্য!
ঘটনাটি বিস্তারিতভাবে খুলে বলেন খাইরুল বাসার। তিনি বলেন, ‘ কলকাতা থেকে আমার শুটিং সেটে একটি টিম দেখা করতে আসে। তারা জানায়, ‘ভালোবাসার মরশুম’ নামের একটি সিনেমায় আমাকেই দরকার। আমাকে গল্প শোনায়। সব শুনে তাদের জানাই, সেপ্টেম্বরে আমার শিডিউল দেওয়া আছে। আমাকে একটু সময় দিতে হবে। কিন্তু তারা আমাকে সিনেমাটিতে চায়। ২২ জুলাই প্রথম পরিচয়। তখনই তারা সব ফাইনাল করে যেতে চায়। তাদের মধ্যে অনেক তাড়াহুড়া লক্ষ করি। বারবার তাদের শিডিউল জটিলতার কথা বলি। একটা উপায় বের করে শিডিউলটা ম্যানেজ করে নিয়ে কথা হয়। ১০ দিন সময়ও চাই। এরপরও তারা আমাকে অ্যাগ্রিমেন্ট ছাড়াই পারিশ্রমিকের চার ভাগের এক ভাগ টাকা দিয়ে দেয়। এদিকে সিনেমাটি নিয়ে দেশের গণমাধ্যমে খবরও হতে থাকে। পরে আমি শিডিউল ম্যানেজ করতে পারিনি। তাদের অন্য কাউকে নিয়ে ভাবার কথা বলি। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য উনাদের কাছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট চাই, যা এখনো উনারা আমাকে পাঠাননি । আমি মনে করি, বোঝাপড়ার মধ্য দিয়েই সবকিছু এগিয়ে যাচ্ছিল।“
তিনি আরো বলেন, ‘ আমি দ্রুত শিডিউল জটিলতা অবসানের পথ খুঁজতে থাকি। কিন্তু আমি কোনো উপায় বের করতে পারিনি। যে কারণে আমি সরে দাঁড়ানোর কথা ভাবি। তাদের উচিত ছিল আমাকে একটু সময় দিয়ে সিনেমাটির ঘোষণা করা। যাহোক, সবকিছু আন্তরিকতার সঙ্গে হচ্ছিল। যেহেতু করতে পারছি না, সেহেতু আমি টাকা ফেরত দেব। এর মধ্যে পরিচালক একবার আমাকে ফোন দিয়েছেন। আমি শুটিংয়ে থাকায় ধরতে পারিনি। পরে তাঁকে টেক্সট পাঠিয়েছি। এদিকে দেখি আমাকে নিয়ে নিউজ, টাকা নিয়ে নাকি আমি অপেশাদারি আচরণ করছি; ফোন নাকি ধরছি না, টাকা নাকি দিচ্ছি না। এ খবরে আমি বিব্রত হই। এমন ঘটনা আমার ক্যারিয়ারে কখনো ঘটেনি।“
বর্তমানে এই অভিনেতা কথাসাহিত্যিক মাহমুদুল হকের উপন্যাস ‘জীবন আমার বোন’ থেকে একই নামে করা সিনেমায় শুটিং করছেন। এটি পরিচালনা করছেন এনায়েত করিম। সহশিল্পী হিসেবে থাকছেন শার্লিন ফারজানা।