১৬ নভেম্বর ‘কারার ঐ লৌহকপাট’ গানের সুর বিকৃতির প্রতিবাদে কলকাতা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অনির্বাণ কাজী ও সম্পূর্ণ ‘পিপ্পা’ টিমের প্রতি আইনি পদক্ষেপের দাবী জানায় কাজী নজরুলের নাতি ও গিটারিষ্ট অরিন্দম কাজী ও নাতনি খিলখিল কাজী।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে অরিন্দম কাজী বলেন,”কাজী অনির্বাণের বিরুদ্ধে আমরা আইনি পদক্ষেপ নেবো। সেই সঙ্গে পিপ্পা টিমকেও চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কেননা এই কাজটা করার আগে দু’বার ভাবা উচিত ছিল। এমন একটি বিখ্যাত গানের কেস হিস্ট্রি স্টাডি করা উচিত ছিল। তাছাড়া এটি কেবল গান নয়। এটি একটি আন্দোলন, সংগ্রামের নাম। এর সঙ্গে বহু স্বাধীনতা সংগ্রামীর ইতিহাসও জড়িয়ে রয়েছে। আমি চাইবো এই গানটির রিমেক ওই ছবি থেকে প্রত্যাহার করে, আসল গানটিকে ফিরিয়ে আনা হোক। পাশাপাশি কাজী অনির্বাণ যে গর্হিত কাজ করেছেন, আমরা তার শাস্তির দাবি করছি।”
তিনি আরও বলেন, “আজ এই সংবাদ সম্মেলন থেকে রাজ্য সরকারের কাছে মৌখিক দাবি জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে লিখিত আকারে সেই দাবি জানানো হবে এবং আইনজীবীর মাধ্যমে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
কাজী নজরুল ইসলামের নাতনি খিলখিল কাজী এ আর রহমানের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন,”কারার ঐ লৌহ কপাট নিয়ে সুরকার যে কাজটি করেছেন, সেটি অত্যন্ত গর্হিত কাজ। তিনি মুম্বাইয়ের মতো জায়গায় গিয়ে কাজ করতে পারেন, বড় শিল্পী হতে পারেন কিন্তু কাজী নজরুল ইসলামকে ছাপিয়ে নয়। তিনি কি ভেবেছিলেন? যে এই গানে নিজের সুর দিয়ে কাজী নজরুল ইসলামকে ছাপিয়ে যাবেন? তিনি যে আদৌ সেই কাজটা করতে পারলেন না, আজকের এই প্রতিবাদই তার প্রমাণ। কাজী নজরুল ইসলামকে ছাপিয়ে কেউ উঠতে পারবেন না। তার গানে কেউ করাঘাত করতে পারবে না।”
কাজী অনির্বাণের কাছে থাকা কবি কাজী নজরুল ইসলামের যেসব পুরস্কার,লেখা,সৃষ্টি সংগৃহীত আছে সেগুলো, সরকারকে আর্কাইভ করার দাবীও জানান নজরুল পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে অরিন্দম কাজী, তার চাচাতো বোন খিলখিল কাজী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অরিন্দমের স্ত্রী সুপর্ণা ভৌমিক, তাদের দুই সন্তান অভিপ্সা ও অনুরাগ কাজী।
উল্লেখ্য, শুধু নজরুল পরিবারই নয়, এ আর রাহমানের ‘কারার ঐ লৌহকপাট’গানের রিমেক নিয়ে ইতোমধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবাংলার হৈমন্তী শুক্লা, লোপামুদ্রা মিত্র, অনিন্দ্য চ্যাটার্জি, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীসহ বাংলাদেশের ছায়ানট, নজরুল চর্চাকেন্দ্রসহ বেশিরভাগ শিল্পী।