Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১১, ২০২৫

আজ সলিল চৌধুরীর জন্মদিন – অমর গীতিকার সুরকারকে স্মরণ

সলিল চৌধুরীর জন্মশতবার্ষিকী
আজ সলিল চৌধুরীর জন্মদিন
অমর গীতিকার ও সুরকার সলিল চৌধুরী

আজ সলিল চৌধুরীর জন্মদিন – গানে গানে শ্রদ্ধা

আজ সলিল চৌধুরীর জন্মদিন তিনি ছিলেন কিংবদন্তি গীতিকার । তাঁর অসামান্য সৃষ্টি ও বহুমুখী প্রতিভা বাংলা সংগীতকে সমৃদ্ধ করেছে আজও সমানভাবে। গণমানুষের এই গায়ক ১৯২৫ সালের ১৯ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আসামে জন্মগ্রহণ করেন। আট ভাই-বোনের মধ্যে সলিল চৌধুরী ছিলেন দ্বিতীয় সন্তান। সলিল চৌধুরীর বাবা জ্ঞানেন্দ্রময় চৌধুরী চা–বাগানের চিকিৎসক ছিলেন। তিনিও প্রচণ্ড ব্রিটিশবিরোধী ছিলেন।  

কথিত আছে, ইংরেজ ম্যানেজার তাকে একবার ‘ইউ ডার্টি নিগার’ বলে গালি দিয়েছিলেন, তখন সেই বৃটিশ ম্যানেজারকে ঘুষি মেরে তার কয়েকটি দাঁত ভেঙে দিয়েছিলেন তিনি।

আজ সলিল চৌধুরীর জন্মদিন

গীতিকার ও সুরকার সলিল চৌধুরীর সংগীত যাত্রা

সলিল চৌধুরীর সংগীতে হাতেখড়ি হয় তার পিতা জ্ঞানেন্দ্র চৌধুরীর কাছেই। চা–বাগানের ঘন সবুজ পরিবেশেই। জানা যায়, তার পরিবারের সংগ্রহে ছিল পশ্চিমা সংগীতের বিশাল ভান্ডার। শিশু সলিল চৌধুরী সেগুলো শুনে শুনে বড় হয়েছেন। তিনি পিতৃব্য নিকি চৌধুরীর কাছেও সংগীতে তালিম গ্রহণ করেছেন। স্কুল শেষে কলকাতায় পড়তে এসে ভর্তি হলেন বঙ্গবাসী কলেজে।

স্নাতক পড়াকালীন ১৯৪৪ সালে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন। পার্টির সাংস্কৃতিক সংগঠন ভারতীয় গণনাট্য সংঘতে (আইপিটিএ) যোগ দিয়ে সক্রিয়ভাবে প্রচুর কাজ করেন।

এই সাংস্কৃতিক দলটি ভারতের প্রত্যন্ত নানা এলাকায় গান গেয়ে মানুষকে সচেতন করার এক বিশাল ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছে। ২২ বছর বয়সে তিনি ‘গাঁয়ের বধূ’ গান লিখে সুরও করেন।

গীতিকার ও সুরকার সলিল চৌধুরীকে নিয়ে লতা মঙ্গেশকর

সলিলকে নিয়ে আরেক কিংবদন্তী লতা মঙ্গেশকর বলেছিলেন, ‘আমার দেখা অন্যতম সেরা শিক্ষিত কম্পোজার।‘ আর শচীন দেববর্মন তো একদিন সলিল চৌধুরীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বলেই ফেলেছিলেন, ‘দেখ সলিল, পঞ্চম (রাহুল দেববর্মন) তো আমার গান শোনে না। ও সারা দিন তোমার গান শোনে।’

আজ সলিল চৌধুরীর জন্মদিন
লতা মঙ্গেশকর ও সলিল চৌধুরী

 গীতিকার ও সুরকার সলিল চৌধুরী ৭৫টির বেশি হিন্দি সিনেমায় সংগীত পরিচালনা করেন। এ ছাড়া তার ৪৫টি বাংলা সিনেমা, ২৬টি মালয়ালাম সিনেমা, তামিল, তেলেগু, কানাড়া, গুজরাটি, অসমিয়া ও উড়িয়া চলচ্চিত্রেও সংগীত পরিচালনা করেন। তার কিছু কালজয়ী সংগীত সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘রানার’, ‘অবাক পৃথিবী’, মাইকেলের ‘রেখ মা দাসেরে মনে’, সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘পাল্কির গান’, বিমল ঘোষের ‘উজ্জ্বল একঝাঁক পায়রা’ প্রভৃতি কবিতায় ও গানে সুর সংযোজন করেন।

যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষের পটভূমিকায় ‘বিচারপতি তোমার বিচার’, ‘ও আলোর পথযাত্রী’, ‘জন্মভূমি’, ‘হাতে মোদের কে দেবে’, ‘কোনো এক গাঁয়ের বধূ’, ‘কালো মেয়ে’, ‘তেলের শিশি ভাঙলো বলে’ ও ‘শান্তির গান’ প্রভৃতি অনবদ্য স্মরণীয় গান রচনা ও সুরকার হিসেবে প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেন।

যন্ত্র পারদর্শী সলিল চৌধুরী

 সলিল চৌধুরী ছয়–সাতটি যন্ত্র অনায়াসে বাজাতে পারতেন। তার মধ্যে বাঁশি, অ্যাকর্ডিয়ান, পিয়ানো, গিটার, ম্যান্ডলিন ও সেতার অন্যতম। তার সুরারোপিত গান গেয়ে ভারতের যেসব কণ্ঠশিল্পী অমর হয়েছেন, তারা হলেন মোহাম্মদ রফি, মুকেশ, মান্না দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, লতা মঙ্গেশকর, যিশু দাস, সুশীলা, গীতশ্রী, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।

যন্ত্র পারদর্শী সলিল চৌধুরী
যন্ত্র পারদর্শী সলিল চৌধুরী

সলিল চৌধুরীর কণ্ঠে লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া ‘উজ্জ্বল একঝাঁক পায়রা’, ‘আয় বৃষ্টি ঝেঁপে’, ‘মনের বসন্ত এসো’, ‘ও গা গা রে পাখি গা’, ‘সাত ভাই চম্পা জাগো’ প্রভৃতি এবং হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া ‘রানার’, ‘ধিতাং ধিতাং বলে’, ‘ঝড়ের কাছে রেখে গেলাম আমার ঠিকানা’, ‘পথ হারাবো বলেই পথে নেমেছি’, ‘দুরন্ত ঘূর্ণির ঐ লেগেছে পাক’ প্রভৃতি বাংলা গানের রাজ্যে সেরা গান হিসেবে স্বীকৃত।

তিনি চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালক হিসেবেও সুনাম অর্জন করেন। ‘পরিবর্তন’, ‘মধুমতি’, ‘দুই বিঘা জমি’, ‘মায়া’, ‘কাবুলিওয়ালা’ প্রভৃতি ছায়াছবির গানে সংগীত পরিচালনা করেছেন সলিল চৌধুরী।

কয়্যার অর্কেস্ট্রেশনে সলিল

ভারতীয় সংগীতে কয়্যার অর্কেস্ট্রেশনের সার্থক রূপকার তিনি। ২০০ শিল্পীকে সমবেতভাবে গান গাইয়েছেন তিনি। বম্বে কয়্যার, কলকাতা ইয়ুথ কয়্যার সলিল চৌধুরীর সৃষ্টি।

সলিল চৌধুরীর স্ত্রী সবিতা চৌধুরী একজন স্বনামধন্য শিল্পী। তার দুই কন্যার মধ্যেও অন্তরা চৌধুরীও একজন স্বনামধন্য শিল্পী। আরেক কন্যা সঞ্চারি চৌধুরী প্রবাসে জীবন যাপন করছেন।

সলিল চৌধুরী গত শতাব্দীর গণমানুষের নায়ক। তার গান জয় করে নিয়েছে স্বাধীনচেতা মানুষের হৃদয়। একের পর এক অবিস্মরণীয় জীবনবোধের গানে অমর হয়ে আছেন তিনি। আজ ১৯ নভেম্বর এই অবিস্মরনীয় শিল্পীর জন্মদিন। জন্মদিনে তার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।

Website |  + posts
Share this article
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Read next

হিলের জুতা পড়তে ভয় পান মিথিলা   

তানজিয়া জামান মিথিলা ৭৪ তম মিস ইউনিভার্সে বাংলাদেশের প্রতিনিধি ছিলেন তানজিয়া জামান মিথিলা। মিস ইউনিভার্সে সেরা…
হিলের জুতা পড়তে ভয় পান মিথিলা

স্মরণে সুরের ভুবনের নীরব জাদুকর আবু জাফর

গীতিকার ও সুরকার আবু জাফরের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী অকালে চলে যাননি আবু জাফর। অনেকদিনই বেঁচে ছিলেন এই দেশে। আমাদের…
স্মরণে সুরের ভুবনের নীরব জাদুকর আবু জাফর

শাকিরার সঙ্গে মঞ্চে গাইলেন তার দুই ছেলে

মঞ্চে দুই ছেলেদের সঙ্গে আবেগঘন শাকিরা প্রথমবার দুই ছেলেকে নিয়ে মঞ্চ মাতালেন কলম্বিয়ান পপ সংগীতশিল্পী ও মডেল…
শাকিরার সঙ্গে গাইলেন দুই ছেলে
0
Share