রাশমিকা–বিজয়ের প্রেমের অ আ ক খ
অভিনেতা বিজয় দেবরাকোন্ডা ও অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কে থাকার পরে সম্প্রতি বাগদান সম্পন্ন করেছেন। বেশ অনেকদিন ধরেই দক্ষিণ ভারতের এই দুই তারকার প্রেম নিয়ে ভক্ত–অনুসারীদের মধ্যে আগ্রহ তুঙ্গে। তাদের গোপন বিয়ের খবরও রটেছিলো এর আগে। সেসময় এই সবই কেবল গুজব ছিল। তবে এবার সত্যি সত্যি বাগদান সেরেছেন এই যুগল। বেশকিছু ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, গত শুক্রবার হায়দরাবাদে একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে বাগ্দান সেরেছেন তারা। এই সুবাদে চলুন রাশমিকা–বিজয়ের প্রেমের অ আ ক খ জেনে নেয়া যাক।
রাশমিকা–বিজয় যুগলের প্রথম দেখা
২০১৭ সালে রাশমিকার সাথে ‘কিরিক পার্টি’ অভিনেতা রক্ষিত শেঠির প্রেমের খবরে সয়লাব হয় নেটদুনিয়া। প্রেম চলাকালীন তারা বাগ্দানও সম্পন্ন করেন ২০১৭ সালেই। তবে এরপরেই আসে দুঃসংবাদ। বাগ্দান ভেঙে দিয়ে আলাদা হয়ে যান তারা। একই সময়ে রাশমিকা শুরু করেন তেলেগু সিনেমা ‘গীতা গোবিন্দাম’–এ শুটিং। সেই শুটিংই রাশমিকা-বিজয়-এর প্রথম ঘনিষ্ঠ হওয়ার সূত্রপাত করে দেয়।
পরে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিজয় জানিয়েছেন, সাদামাটা গল্পের সিনেমা ‘গীতা গোবিন্দম’ নিয়ে তার বেশি প্রত্যাশা ছিল না। এমনকি শুরুতে সেই সিনেমা তিনি করতেও চাননি। কিন্তু মুক্তির পর সুপারহিট সিনেমা, বিজয় ও রামশিকার পর্দার রসায়ন ভক্তদের মুগ্ধ করে। তখন থেকেই তাদের সম্পর্কের শুরু।
‘গীতা গোবিন্দম’ হিট হওয়ার পরই ২০১৯ সালে আসে ‘ডিয়ার কমরেড’ সিনেমাটি। ছবিতে প্রতিবাদী কলেজশিক্ষার্থীর চরিত্রে অভিনয় করেন বিজয়, রাশমিকা করেন জাতীয় দলের ক্রিকেটারের চরিত্র। ব্যতিক্রমী গল্পের এ সিনেমাটিও দর্শক–সমালোচকদের কাছে প্রশংসিত হয়। পর্দার মতো ততদিনে বাস্তবের জুটিও জমে উঠেছে, একে অপরের প্রেমে মজেছেন বিজয় ও রাশমিকা।
চুক্তিতে রাশমিকা ও বিজয়
টানা দুই ছবি হিট হলেও পরে আর সিনেমায় জুটি হননি রাশমিকা ও বিজয় যুগল। জানা গেছে, প্রেমের গুঞ্জন ধামাচাপা দিতেই এই অলিখিত নিয়ম করেছিলেন তারা। তবে ২০২০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে তাদের প্রায়ই একসঙ্গে দেখা গেছে। কখনো ডিনারে, কখনো বিমানবন্দরে; কখনো আবার বিদেশে ছুটি কাটিয়েছেন। ছুটি কাটাতে গিয়ে রাশমিকা আর বিজয় একই জায়গা থেকে আলাদা আলাদা ছবি পোস্ট করেছেন। তাদের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে অনেক সময় পেছনে একই ব্যাকগ্রাউন্ড দেখা গেছে।
প্রেমের খবর বেশি দিন লুকিয়ে রাখতে পারেননি রাশমিকা ও বিজয়। ২০২৩ সাল থেকে তাদের যে সম্পর্ক আছে সেটা দুজনেই পরোক্ষাভাবে ইঙ্গিত দেন। যদিও কেউ কারও নাম উল্লেখ করেননি। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে রাশমিকা একটি লাইভ অনুষ্ঠানে জানান, তিনি নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে তার এক বন্ধুর বাসায় আছেন। এর পরপরই ব্যাকগ্রাউন্ডে বিজয় দেবরাকোন্ডার কণ্ঠ শোনা যায়। তারপরই তাড়াহুড়া করে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন রাশমিকা।
বন্ধুত্বে রাশমিকা ও বিজয়
২০২৪ সালে এক সাক্ষাৎকারে বিজয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বের প্রসঙ্গে রাশমিকা বলেন, ‘বিজু (বিজয়) আর আমি প্রায় একসঙ্গে বড় হয়েছি। তাই আমি জীবনে যা-ই কিছু করি না কেন, তাতে তার ভূমিকা থাকে। তার থেকে সব ব্যাপারে পরামর্শ নিই। সব ক্ষেত্রে তার মতামত আমার কাছে খুবই জরুরি। সে সহজে ‘হ্যাঁ’ বলার পাত্র নয়। বিজু সব সময় যুক্তি দিয়ে কথা বলে। কোনটা ঠিক, কোনটা ঠিক নয়, সে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়। আমার জীবনে যে কারও চেয়ে সে অনেক বেশি সমর্থন করেছে। সে এমন এক ব্যক্তি, যাকে আমি সবচেয়ে বেশি সম্মান করি।‘ তারা যে চুটিয়ে প্রেম করছেন, এই সাক্ষাৎকারের পরেই সে আর কারও অজানা থাকে না।
গত বছর মুম্বাইয়ে এক সিনেমার প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন বিজয়। সেখানেই সিঙ্গেল কি না—এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বিজয় বলেন, ‘আমার বয়স ৩৫। এই বয়সে কি কেউ সিঙ্গেল থাকে?’ এরপরেই হঠাৎ বিজয় বলে ওঠেন, ‘আমি ডেটিংয়ে বিশ্বাসী নই। আমার কাছে কোনো সম্পর্কে এগোনো মানে বন্ধুত্ব করা। এই বন্ধুত্ব পুরোনো হলেই, আমি ভবিষ্যৎটা ভাবতে পারি।‘ এত কিছু বললেও বিজয় কিন্তু গোপন রেখেছেন তার প্রেমিকার নাম। অবশেষে বাগদানের খবরের মাধ্যমেই প্রকাশ্যে এলো বিজয় ও রাশমিকার এতোদিনের প্রেমের গুঞ্জনের সত্যতা।