‘হেভেনলি ক্রিচার্স’ দিয়ে যাত্রা শুরু
কেট উইন্সলেট ১৯৯৪ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে ‘হেভেনলি ক্রিচার্স’ দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। এরপর কেটে গেছে তিন দশকেরও বেশি সময়। সেদিনের সেই কিশোরী কেট এখন ৫০ বছর বয়সের অভিজ্ঞ নারী। গেল ৫ অক্টোবর পূর্ণ হয়েছে টাইটানিকখ্যাত এই অভিনেত্রীর ৫০ বছর বয়স।
৫০ পূর্ণ করে কেট বললেন তার অনুধাবন। তিনি বলেছেন, ‘নারীরা বয়সে যত বড় হন, তত সুন্দর হয়ে ওঠেন।‘
‘নারীরা বয়সে যত বড় হন, তত সুন্দর হয়ে ওঠেন
বয়স বেড়ে গেলে অনেকেই অস্তিত্বসংকট, ভয় কিংবা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। কিন্তু কেট একেবারেই তা নিয়ে ভাবেন না। নিজের মুখের রেখা লুকানোর পরিবর্তে গর্ব করে বলেন, ‘আমি আমার বলিরেখা নিয়ে গর্ব করি। এগুলো আমার জীবনের গল্প বলে—আমি কে, কোথায় গিয়েছি, কী দেখেছি।’
৫০ পূর্ণ হওয়া উপলক্ষে ‘ভোগ ইউকে’তে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন অভিনেত্রী। সেই সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, ‘নারীরা বয়সে যত বড় হন, তত সুন্দর হয়ে ওঠেন। আমাদের মুখ আসলে আরও নিজের মতো হয়ে ওঠে, হাড়ের গড়নে ঠিকঠাক বসে যায় জীবনের ছাপ, ইতিহাস যুক্ত হয়। আমি চোখের কোণের রেখা, হাতের পেছনের বলিরেখাকে খুব সুন্দর মনে করি।’
তিন দশকের ক্যারিয়ারে নানা ধরনের কাজ করেছেন কেট উইন্সলেট, ঝুলিতে পুরস্কারের সংখ্যাও কম নয়। তবে এসব স্বীকৃতির চেয়ে সময়ের সঙ্গে তিনি যে পরিণত হয়ে উঠেছেন, সেটিই তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অভিনেত্রীর ভাষ্যে, ‘গত কয়েক বছরে আমি নারীদের নানা বিষয়ে কথা বলেছি। আজকালকার মেয়েদের উৎসাহিত করার চেষ্টা করেছি। অনেকেই বার্তা পাঠিয়ে জানিয়েছেন, আমার কথা তাঁদের ভালো লেগেছে। মানুষের সঙ্গে এই যে যোগাযোগ, এটি আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
অন্যেরা কী ভাবছেন তা নিয়ে ভয় করি না- কেট উইন্সলেট
বয়স, নারী অধিকারসহ নানা বিষয়ে কথা বলে ২০২২ সালে প্রথম আলোচনায় আসেন কেট। সেই সময়ে ‘বিবিসি : ওম্যানস আওয়ার’ অনুষ্ঠানে কেট বলেছিলেন, ‘অনেক নারী ৪০ পেরিয়েই ভাবেন, এটিই তাদের পতনের শুরু। এখন সবকিছু বদলে যাবে, ম্লান হয়ে যাবে। কিন্তু আমি এভাবে ভাবি না। আমরা এই বয়সে আরও নারী হয়ে উঠি, আরও শক্তিশালী ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠি। নিজের মনের কথা বলি, অন্যেরা কী ভাবছেন তা নিয়ে ভয় করি না। আমি মনে করি, এটা দারুণ।’
পঞ্চাশে পা দিয়ে নতুন পরিকল্পনা করেছেন কেট, ‘আমি ৫০তম বছরে ৫০টা ভালো কাজ করব। হয়তো কোনো পাহাড়ে উঠব, যেখানে আগে যাইনি, কিংবা কোনো নতুন জায়গায় যাব, অথবা নিছক কারও জন্য একটা ভালো কাজ করব। আমি একটা ছোট তালিকা তৈরি করছি।’
নব্বইয়ের দশক ছিল কেট উইন্সলেটের উত্থানের সময়। হেভেনলি ক্রিচার’, সেন্স অ্যান্ড সেন্সিবিলিটি’ দিয়ে সমালোচকদের নজর কাড়েন। এরপর আসে ১৯৯৭ সাল; জেমস ক্যামেরনের টাইটানিক’ দিয়ে রাতারাতি বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পান।
পরের বছরগুলোয় কেটকে দেখা গেছে ‘হোলি স্মোক!’, ‘কুইলস’, ‘ইটারনাল সানশাইন অব দ্য স্পটলেস মাইন্ড’ সহ নানা নিরীক্ষাধর্মী কাজে।
২০০৮ সালে ‘দ্য রিডার’–সিনেমার জন্য জিতেছেন অস্কার। সিনেমার সঙ্গে টিভিতেও সাফল্য পেয়েছেন কেট, এইচবিওতে তার মিনি সিরিজ ‘মেয়র অব ইস্টটাউন’ বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়েছে।
এই অভিনেত্রীর ভক্তরা প্রায়ই জানতে চান তার আয় ও সম্পদ সম্পর্কে। তবে জানা গেছে তার আয় কেবল অভিনয় থেকেই নয়, সম্পত্তি বিনিয়োগ থেকেও আসে। তিনি লন্ডন ও নিউইয়র্কে একাধিক বিলাসবহুল বাড়ির মালিক। নিউইয়র্কের চেলসি এলাকায় তার মালিকানাধীন একটি ডুপ্লেক্স পেন্টহাউস ছিল বেশ আলোচিত। এসব সম্পত্তি পরে বিক্রি করে তিনি বিপুল অর্থ লাভ করেছেন। কেটের মোট সম্পদের পরিমাণ ৬ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা) বলে জানা গেছে।