৬১ বছরে পা রেখেছেন
বাংলা সংগীতের ইতিহাসে কিংবদন্তি নাম মাহফুজ আনাম জেমস। ‘গুরু’, ‘নগরবাউল’ খ্যাত এই পপ কিংবদন্তীর আজ জন্মদিন। ১৯৬৪ সালের ২ অক্টোবর নওগাঁয় জন্ম তবে বেড়ে ওঠেন চট্টগ্রামে। আজ ৬১ বছরে পা রেখেছেন জেমস।
জেমসের জন্মদিনে তার ভক্তরা সবসময়ই নানা আয়োজনে পালন করতেন প্রিয় তারকার জন্মদিন। ২০১৫ সালে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ১০টি বিলবোর্ড টাঙিয়ে জেমসকে শুভেচ্ছা জানান কিশোরগঞ্জের যুবক প্রিন্স। ২০১৭ সালে তার জন্মদিনে ভক্তরা সারা দেশে এক কোটি গাছ লাগান। ২০১৮ সালেও নানা আয়োজনে মাতেন তারা।
বন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধায় জেমস
তবে ২০১৮ সালের অক্টোবরে ঘনিষ্ঠ বন্ধু, কিংবদন্তি গিটারিস্ট আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুর পর থেকে সবকিছু পাল্টে যায়। সেই শোক থেকে বের হতে না পেরে ভক্তদের নিজেই অনুরোধ করেন আর কোনো জন্মদিনের আয়োজন যেন না করা হয়। এরপর থেকে প্রতিবছরই নীরবতায় কেটে যায় তার জন্মদিন। যথারীতি এ বছরও কোনো আয়োজন নেই।
জেমস বর্তমানে ‘নগরবাউল’ ব্যান্ডের প্রধান ভোকালিস্ট ও গিটারিস্ট। আগের নাম ছিল ‘ফিলিংস’। ১৯৮৭ সালে সেই ব্যান্ডের সঙ্গে বের হয় প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’। এক বছর পর প্রকাশ পায় একক অ্যালবাম ‘অনন্যা’।
সাইকিডেলিক রকে জেমস
বাংলা ভাষায় প্রথম সাইকিডেলিক রক শুরু করেন জেমস। কেবল গান নয়, গিটার বাজানোতেও বেশ পটু তিনি। দিনে দিনে গেয়েছেন বহু কালজয়ী গান। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘পাগলা হাওয়া’, ‘মীরাবাঈ’, ‘মা’, ‘বাবা’, ‘ফুল নেবো না’, ‘এক নদী যমুনা’, ‘লিখতে পারি না কোনো গান’ ইত্যাদি। চলচ্চিত্রে গান করেও সাফল্য পেয়েছেন জেমস। তার কণ্ঠে ‘আসবার কালে আসলাম একা’, ‘তোর প্রেমে অন্ধ হলাম’, ‘আমি জেল থেকে বলছি’ ইত্যাদি গানগুলো তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে সিনেমায়।
বলিউডে জেমস
বাংলাদেশ ছাড়াও বলিউডও কাঁপিয়েছেন নগর বাউল। ২০০৫ সালে বলিউডের ‘গ্যাংস্টার’ চলচ্চিত্রে তিনি প্লেব্যাক করেন। তার গাওয়া ‘ভিগি ভিগি’ গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় এবং এক মাসেরও বেশি সময় তা বলিউড টপচার্টের শীর্ষে অবস্থান করে। এরপর ‘লামহে’ সিনেমায় ‘চল চলে’, ‘লাইফ ইন এ মেট্রো’ সিনেমায় ‘রিশতে’ ও ‘আলবিদা’ দুটি গানে কণ্ঠ দেন তিনি।
মডেলিং জগতেও পদচারণা করেছেন জেমস। ২০০০ সালে পেপসির বিজ্ঞাপনে প্রথমবার দেখা যায় তাকে। ২০১১ সালে এনার্জি ড্রিংক ‘ব্ল্যাক হর্সে’র বিজ্ঞাপনে কাজ করেন তিনি।
প্রযোজনাতেও কাজ করেছেন জেমস। ব্যবসায়ী হিসেবেও রয়েছে তার সুনাম। গাজী আহমেদ শুভ্রর সঙ্গে ‘রেড ডট এন্টারটেইনমেন্ট’ নামে একটি প্রডাকশন হাউজ চালান তিনি। এখান থেকে ২০১১ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি ভিডিওচিত্র তৈরি করেন। এছাড়া প্রচুর রিয়্যালিটি শো প্রযোজনা করেছেন তিনি। সম্প্রতি তিনি আত্মপ্রকাশ করেছেন একজন আলোকচিত্রী হিসেবেও।