গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ
গুঞ্জন উঠেছে যে বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা ধর্মেন্দ্র মৃত্যুবরণ করেছেন। খবরটি মুহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক মাধ্যমে। বিষয়টি নজরে আসে তার স্ত্রী হেমা মালিনীর। বলিউড অভিনেতা ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর সত্যি নয় বলে জানিয়েছেন হেমা মালিনী। একইসাথে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন তিনি। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংবাদের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তার মেয়ে এশা দেওল। তিনি জানান, তার বাবা বরং সুস্থ হয়ে উঠছেন।

ইন্ডিয়া টুডে, মিড ডেসহ বেশ কয়েকটি ভারতীয় গণমাধ্যম সকালেও তার মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ করে। ভুল বুঝতে পেরে পরে সরিয়েও নেয়। পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহের বেশি ধরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি ধর্মেন্দ্র। সোমবার সকাল থেকে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়েছিল। পরে, অভিনেতাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। সোমবার রাতে সংবাদমাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরে হাসপাতাল জানায়–অভিনেতা ধর্মেন্দ্র বেঁচে আছেন।
বলিউড অভিনেতা ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর : ক্ষুব্ধ তার স্ত্রী
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ এক পোস্ট দেন হেমা মালিনী। তিনি লিখেছেন,
‘যা ঘটছে তা ক্ষমার অযোগ্য! দায়িত্বশীল গণমাধ্যমগুলো কীভাবে একজন ব্যক্তি যিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন এবং সুস্থ হয়ে উঠছেন সে সম্পর্কে মিথ্যা খবর ছড়াতে পারে? এটি অত্যন্ত অসম্মানজনক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ। অনুগ্রহ করে পরিবার ও তাদের গোপনীয়তার প্রয়োজনীয়তার প্রতি যথাযথ সম্মান জানান।’

ধর্মেন্দ্রর অভিনয় জীবন
১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর, পাঞ্জাবের নসরালি গ্রামে ধর্মেন্দ্রর জন্ম । প্রকৃত নাম ধর্মসিং দেওল। ১৯৬০ সালে দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় ধর্মেন্দ্রর অভিষেক। ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে রোমান্টিক, অ্যাকশন ও কমেডি সব ঘরানার সিনেমাতেই দর্শকদের মুগ্ধ করেন ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্র। সত্তর ও আশির দশকে অন্যতম জনপ্রিয় ও দাপুটে নায়ক হিসেবে রাজত্ব করেন হিন্দি সিনেমায়। আনপড়, বন্দিনী, অনুপমা ও আয়া সাওয়ান ঝুম কে সিনেমায় অভিনয় শৈলীতে হৃদয় জয় করেন সব শ্রেণির দর্শকদের। পরে শোলে, ধরম বীর, চুপকে চুপকে, মেরা গাঁও মেরা দেশ ও ড্রিম গার্লের মতো সিনেমা বলিউডের শীর্ষস্থানীয় নায়কদের কাতারে নিয়ে যায় তাকে। শুধু তাই নয়, হিন্দি সিনেমায় সর্বাধিক সুপারহিট চলচ্চিত্রে অভিনয়ের রেকর্ডও এই অভিনেতার।
কেবল অ্যাকশন বা রোমান্টিক সিনেমার হিরো নয়, কমেডিতেও ছিলেন পটু। ৬০ বছরের বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন ৩শটিরও বেশি সিনেমায়। হেমা মালিনী, আশা পারেখ, মীনা কুমারী থেকে শুরু করে রেখা, সবার সাথেই তার জুটি ছিলো অন্যন্য। স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার।
বলিউডের ড্রিম গার্ল হেমা মালিনীর সঙ্গে তার সম্পর্কও ছিলো একসময় আলোচিত অধ্যায়। ১৯৮০ সালে বিয়ে করেন দুজন। ধর্মেন্দ্রর উত্তরসুরি হিসেবে বলিউডে সুনাম কুড়িয়েছেন দুই ছেলে সানি দেওল ও ববি দেওলও। এরপর তার মেয়ে এষা দেওলও অভিনয়ে নাম লেখান।
পেশাগত সাফল্যের পাশাপাশি রাজনীতিতেও যুক্ত ছিলেন ধর্মেন্দ্র। ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত রাজস্থানের বিকানের থেকে বিজেপির সংসদ সদস্য ছিলেন। সম্প্রতি শহীদ কাপুর ও কৃতি স্যানন অভিনীত তেরি বাতোঁ মে অ্যায়সা উলঝা জিয়া ছবিতে ধর্মেন্দ্রকে দেখা গেছে। তার পরবর্তী ছবি ইক্কিস যা ২৫ ডিসেম্বর মুক্তির অপেক্ষায় ।