দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন জিৎ
একটি চরিত্রকে জীবন্ত করে তুলতে কখনো কখনো অভিনেতাদের যেতে হয় শারীরিক ঝুঁকির মধ্য দিয়েও। সেই ঝুঁকিই এবার সামনে এলো টালিউড সুপারস্টার জিৎ-এর ক্ষেত্রে। নতুন সিনেমার শুটিং চলাকালীন জিৎ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন । তার এই দুর্ঘটনার খবরে উদ্বেগ ছড়িয়েছে তার ভক্তদের মধ্যে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা জানিয়েছে, ‘কেউ বলে বিপ্লবী, কেউ বলে ডাকাত’ সিনেমার শুটিং চলাকালীন জিৎ-এর হাতে চোট লাগে। তবে দুর্ঘটনাটি ঠিক কীভাবে ঘটেছে, সে বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। এ প্রসঙ্গে অভিনেতা জিৎ কিংবা ছবির পরিচালক পথিকৃৎ বসুর পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি বিবেচনায় আপাতত সিনেমাটির শুটিং বন্ধ রাখা হয়েছে।

এই সিনেমায় জিৎকে দেখা যাবে ঐতিহাসিক চরিত্র অনন্ত সিংহের ভূমিকায়। অ্যাকশননির্ভর এই ছবিতে উঠে আসবে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের অন্যতম নায়ক এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা অনন্ত সিংহের জীবন ও সংগ্রামের গল্প। এমন এক বিপ্লবী চরিত্রে জিৎ-এর উপস্থিতি ঘিরে শুরু থেকেই দর্শকদের কৌতূহল ছিল তুঙ্গে।
নির্মাতাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ‘কেউ বলে বিপ্লবী, কেউ বলে ডাকাত’ সিনেমাটি ২০২৬ সালে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। যদিও এখনো নির্দিষ্ট মুক্তির তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। সিনেমাটিতে আরও রয়েছেন মিমি চক্রবর্তী। জানা গেছে, তিনি ছবির একটি বিশেষ গানে উপস্থিত থাকবেন।

শুটিং সেটের এই অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় কাজ সাময়িকভাবে থমকে গেলেও, ভক্তদের প্রত্যাশা একটাই- দ্রুত সুস্থ হয়ে জিৎ আবার ফিরবেন ক্যামেরার সামনে। আর পর্দায় জীবন্ত হবে এক বিপ্লবীর গল্প।
অনন্ত সিংহ-র চরিত্রে জিৎ
‘কেউ বলে বিপ্লবী, কেউ বলে ডাকাত’ ছবিতে অনন্ত সিংহ-র চরিত্রে অভিনয় করছেন জিত্। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের অন্যতম নায়ক এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতিবিদ ছিলেন অনন্ত। ১৯০৩ সালের, ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি মাস্টারদা সূর্য সেনের সংস্পর্শে আসেন। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন মামলায় অনন্ত সেনের যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর হয়। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি চলচ্চিত্র ও মোটর গাড়ির ব্যবসা করেছিলেন। তার প্রযোজিত অন্যতম চলচ্চিত্র , ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনীত ‘যমালয়ে জীবন্ত মানুষ’।

শোনা যায় তিনি নকশালপন্থী দল গঠনের সাথে তার সম্পৃক্ততা ছিলো। ১৯৬০ সালের কলকাতায় ধারাবাহিক ব্যাংক ডাকাতির অভিযোগে তাকে ঝাড়খণ্ডের জদুগড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ফের আট বছর কারাগারে থাকতে হয়। শোনা যায়, এই ডাকতির টাকা তিনি বাংলার অসহায় মানুষদের সাহায্যের কাজে লাগিয়েছিলেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৭৯ সালের ২৫শে জানুয়ারি অনন্ত সিং মৃত্যুবরণ করেন।