মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল আগামী ১৩ জানুয়ারি
সালমান শাহ মামলায় তদন্তে বিলম্ব । চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় স্ত্রী সামিরা হকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল দিন পেছালো।প্রতিবেদন দিতে ৫ সপ্তাহ সময় পেয়েছে পুলিশ। আগামী ১৩ জানুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ঠিক করেছে আদালত। রোববার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা ছিল। তবে, তদন্ত কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার পরিদর্শক প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। তাই আদালতের কাছে সময় আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম খন্দকার।

সালমান শাহ হত্যার আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় ২৯ বছর পর গত ২০ অক্টোবর, মা নীলা চৌধুরীর পক্ষে তার ভাই আলমগীর কুমকুম মামলা করেন। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, সামিরার মা লতিফা হক লুসি, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, খলনায়ক ডন, ডেডিড, জাভেদ, ফারুক, রুবী, আব্দুস ছাত্তার, সাজু, রিজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ। অভিযোগে বলা হয়েছে, এজাহারে নাম থাকা আসামি ছাড়াও আরও কিছু অজ্ঞাত ব্যক্তি পরিকল্পিতভাবে সালমান শাহকে হত্যা করেছে। আসামিরা যেন দেশত্যাগ করতে না পারে সেজন্য ইমিগ্রেশনের সহায়তা চায় পুলিশ।

সালমান হত্যার অভিযোগের প্রমাণ পায়নি পিবিআই
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের ফ্ল্যাটে মারা যান চিত্রনায়ক সালমান শাহ। প্রথমে অপমৃত্যু মামলা হলেও, সালমান শাহর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই হত্যার অভিযোগ তুলে আদালতে আবেদন করেন। পরে আদালত অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে হত্যার তদন্তের নির্দেশ দেয় সিআইডিকে। সে বছরের ৩ নভেম্বর প্রতিবেদনে এটিকে আত্মহত্যা বলে জানায়। এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে কমরউদ্দিন রিভিশন মামলা করেন। এরপর ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠানো হয়।
দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে দেওয়া সেই প্রতিবেদনে হত্যার অভিযোগও নাকচ করা হয়। সালমান শাহর বাবার মৃত্যুর পর তার মা নীলা চৌধুরী মামলাটি চালিয়ে যান। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি তদন্ত প্রতিবেদনে ‘নারাজি’ দিয়ে ১১ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করেন। এরপর র্যাব তদন্ত শুরু করলেও আদালত ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট র্যাবকে তদন্ত থেকে সরিয়ে দেয়। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পিবিআইকে।

প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান সালমান শাহর পরিবারের
চার বছর তদন্ত করে পিবিআই ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি জানায় ৫৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও সব আলামতে হত্যার কোনো প্রমাণ নেই। তাদের মতে, পারিবারিক ঝামেলা ও মানসিক চাপের কারণে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন। এই প্রতিবেদনে প্রত্যাখান করে নীলা চৌধুরী অধিকতর তদন্তের দাবি জানান।

২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত পিবিআইয়ের প্রতিবেদন গ্রহণ করে আসামিদের অব্যাহতি দেয়। পরে সালমান শাহর পরিবার রিভিশন আবেদন করে। যা ২০২২ সালের ১২ জুন আদালত গ্রহণ করে। কয়েক বছর বিরতির পর শুনানি শেষ হয় ১৩ অক্টোবর। এরপর ২০ অক্টোবর আদালত নতুন করে হত্যা মামলা দায়েরের নির্দেশ দেয়।