পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তন
বটতলা নাট্যদল নিয়ে আসছে ‘যোজনগন্ধা মায়া’ । এটি তাদের নতুন প্রযোজনা। আজ ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে নাটকটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী। একই মঞ্চে আগামীকাল বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রয়েছে আরও দুটি প্রদর্শনী।

নাটকটি রচনা করেছেন বদরুজ্জামান আলমগীর এবং নির্দেশনায় রয়েছেন ইমরান খান। যোজনগন্ধা মায়ার পটভূমি লতিপুতি গ্রাম। সেখানে কুমিরপীরের মাজার ঘিরে আবর্তিত হয় এখানকার মানুষের জীবন। কুমিরপীর কৃষকের অধিকার ও মানুষকে তাদের অধিকার চিনে নিতে শেখায়। মানুষকে তাদের অধিকার প্রসঙ্গে সচেতন করার কারণে প্রাণ দিতে হয় তার। এরপর হয়ে উঠেন মানুষের সাহস ও প্রতিবাদের প্রতীক। পীরের রেখে যাওয়া বাণীর বাহক হয়ে ওঠে কুরুমণি। জমির অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে সে নিজের সন্তান জহরকে পাঠায় যুদ্ধে, শুরু হয় এক মায়ের দীর্ঘ অপেক্ষা।
এই অপেক্ষার মাঝেই গ্রামে আসে আলফ্রেড পাহান। অধিকার ও মুক্তির প্রতীকের এক নতুন রূপ। তবে শেষ পর্যন্ত জহরের মতো পাহানও আর ফিরে আসে না। মানুষের আয়ুর শেষ থাকলেও অপেক্ষার শেষ নেই এই উপলব্ধিই নাটকটির কেন্দ্রীয় ভাবনা। নাটকের ঘটনাপ্রবাহ মুক্তিযুদ্ধ, শূন্য দশক এবং আরও ১২০ বছর আগের অতীতের মধ্যে যাতায়াত করে, যা তৈরি করে এক আবহমান কালের বেদনার আখ্যান।

নাট্যকার বদরুজ্জামান আলমগীর জানান, ‘যোজনগন্ধা মায়া’ লেখা হয়েছে একধরনের গভীর মানসিক ঘোর থেকেই। তার মতে, ‘অপেক্ষা একটি গভীর মানবিক মানদণ্ড; যুদ্ধ শেষে সাধারণ মানুষ খোঁজে শুধু হারিয়ে যাওয়া আপনজনের কবর।’
‘যোজনগন্ধা মায়া’ নিয়ে নির্দেশক
নির্দেশক ইমরান খান বলেন, এই নাটকে মায়ের সন্তানের অপেক্ষা ও একটি জনপদের মুক্তির অপেক্ষা দু’টি অনুভব একসূত্রে মিলেছে। দেশীয় রীতির সঙ্গে মধ্য এশীয় ফর্মের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে নাটকটি মঞ্চে উপস্থাপিত হয়েছে ভিন্ন এক নান্দনিকতায়।
নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সামিনা লুৎফা, মোহাম্মদ আলী হায়দার, কাজী রোকসানা, গোলাম মাহবুব, মনিরা খাতুন, মুন ইসলাম, নিরঞ্জন দাস, আশরাফুল ইসলাম ও শাহাদত হোসেন। সুর ও সংগীত পরিকল্পনায় রয়েছেন পলাশ নাথ ও চন্দ্রাবতী ইভা, পোশাক পরিকল্পনায় মহসিনা আক্তার এবং আলোক পরিকল্পনায় ধীমানচন্দ্র বর্মন।
উল্লেখ্য, ‘যোজনগন্ধা মায়া’ বটতলা নাট্যদলের ২৫তম প্রযোজনা। এর আগে ২০২৩ সালে দলটি মঞ্চে এনেছিল ‘সখী রঙ্গমালা’।