মিস ইউনিভার্স মিশন শেষে দেশে ফিরেছেন তানজিয়া জামান মিথিলা
চার সপ্তাহের অবস্থান শেষে মিস ইউনিভার্স মিশন থেকে দেশে ফিরেছেন তানজিয়া জামান মিথিলা । মঙ্গলবার বিকেলে দেশে ফিরেছেন তিনি। এ সময় গণমাধ্যমের সাথেও কথা বলেন। দেশের মানুষ ও বিনোদন অঙ্গনের সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় সেরা ত্রিশে জায়গা করে নিয়েছিলেন মিথিলা। দেখে নেয়া যাক দেশে ফিরে বিমানবন্দরে যা জানালেন মিথিলা।

থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ৭৪তম মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে অক্টোবরের শেষের দিকে থাইল্যান্ডে যান মিথিলা। ২ নভেম্বর থেকে শুরু হয় ক্যাম্প রাউন্ড। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সেরা ৩০-এ জায়গা পান মিথিলা। কিন্তু এরপরে আর এগোতে পারেননি তিনি। তবে ক্লোজডোর ভোটিংয়ে নির্বাচিত মিস ইউনিভার্স ফাতিমা বোশের উপরের অবস্থানেই ছিলেন মিথিলা।
ক্লোজডোর ভোটিং
ক্লোজডোর ভোটিংয়ে বিচারকদের রায়ে মিথিলা পেয়েছিলেন ৯.৬৪০ নম্বর আর ফাতিমা পেয়েছিলেন ৮.৯৭৫৫ নম্বর, মিথিলা জানান।
মিথিলা বলেন, ‘প্রথম ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে ঠিকঠাক উপস্থাপন। বাংলাদেশের পতাকা বহন করছি। বাংলাদেশকে উপস্থাপনের জন্য যত কষ্ট করা দরকার, পরিশ্রম করা দরকার, তা আমি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত করে গেছি। আমার এই পথচলায় প্রথম সারির তারকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সবাই আমার প্রতি যে বিশ্বাস, ভালোবাসা দেখিয়েছেন-তাতে আমি অভিভূত।’

গণমাধ্যমকে মিথিলা বললেন, ‘বাংলাদেশের হয়ে যতটা অবস্থান করা সম্ভব, তা আমি চেষ্টা করেছি। আমি এটা উপলব্ধি করতে পেরেছি, এ ক্ষেত্রটায় আমাদের আরও অনেক বেশি কাজ করতে হবে, যাতে পরে যে প্রতিযোগী এই প্ল্যাটফর্মে অংশ নেবে, তার জন্য পথচলাটা যেন সহজ হয়।’
এবারের মিস ইউনিভার্সে বিশ্বের ১২১ দেশের প্রতিযোগীরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলো। এ নিয়ে মিথিলা বলেন, ‘এটা এমন একটা প্রতিযোগিতা, যেখানে ৫০ থেকে ৬০ বছর চেষ্টা করেও অনেক দেশ আছে তারা পজিশন পায়নি। এমন উদাহরণ অনেক আছে। তারপরও তারা অংশ নিচ্ছে। আমি যেটা দেখেছি, একটা দেশের সরকারি পর্যায়ে মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষের সম্পর্ক থাকতে হয়। দেশের মানুষের সমর্থন থাকতে হয়, যেটা আমি আন্তরিকভাবে পেয়েছি। আমরা আশা করছি, পরবর্তী সময়ে যেসব প্রতিযোগী যাবে, তাদের আমরা সহযোগিতা করতে পারব, পরামর্শ দিতে পারব। আমরা এবার কিন্তু এক রকম দেখিয়ে দিয়েছি, বাংলাদেশিরা চাইলে একসঙ্গে কী করতে পারি। যারা প্রতিযোগিতায় আমাকে ভোট দিয়েছেন, সত্যি বলতে তারা আসলে আমাকে দেননি, দিয়েছেন বাংলাদেশকে। আমি নিজেও মিথিলাকে রিপ্রেজেন্ট করতে যাইনি, বাংলাদেশকে করেছি। বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরতে গিয়েছি।’

দেশে ফেরা নিয়ে বিমানবন্দরে যা জানালেন মিথিলা
এবারের দেশে ফেরা ভিন্ন কোন অনুভূতি জাগাচ্ছে কিনা মনে জানতে চাইলে মিথিলা বলেন, ‘এর আগে অনেকবার বিদেশ গিয়েছি। দেশে এসেছি। কিন্তু এবার বিমানবন্দরে এসে এমন অনুভূতি হয়েছে, যা এর আগে কখনো হয়নি। আমি খুবই ইমোশনাল। সবাই আমাকে এভাবে ভালোবাসবে, এভাবে বিশ্বাস করবে, কখনো কল্পনাই করিনি। প্রথমবারের মতো আমি বুঝতে পেরেছি, বাংলাদেশ কত বড় দেশ। কত মানুষের আবেগ নিয়ে আমি ওখানে কাজ করে এসেছি। এই পথচলায় আমি শিখলাম, আমরা বাংলাদেশিরা কতটা শক্তিশালী। আমরা চাইলে কী না করতে পাারি। বাংলাদেশের একজন প্রতিযোগীর জন্য ২০ লাখ ভোট করেছে। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় ব্যাপার।’
পিপলস চয়েসে ভোট
পিপলস চয়েসে মোট ২১ লাখ ১ হাজার ৫৭২ ভোট পেয়েছেন বলে মিথিলা জানালেন। ‘ক্লোজডোর ইন্টারভিউ, ইভিনিং গাউন, ন্যাশনাল কস্টিউম, সুইমস্যুট ওয়্যার এই চারটি জিনিসের ওপর নম্বর দেওয়া হয় বলে তিনি জানান।
বিকিনি বিতর্কে মিথিলা বলেন, ‘এগুলো যদি কেউ ঠিকমতো করতে না পারে, তাহলে সে সেরা ৩০ কিংবা টপ পজিশনে যেতে পারবে না। আমি সেরা ৩০ হয়েছি, এটাও পারতাম না যদি সুইমস্যুট ওয়্যার না করতাম। বিকিনি বাংলাদেশ থেকে আমি প্রথম পরিনি, আগেও অনেকে পরেছে। আমি কোনোভাবে আমার দেশকে ছোট করিনি।’
সেরার দৌড়ে ৩০ এর পরে আর এগোতে না পারলেও এই নিয়েই বেশ সন্তুষ্ট বলেও জানালেন তানজিয়া জামান মিথিলা।