সৌন্দর্য নয়, মানবিকতাই ফাতিমা বশের শক্তি
মিস ইউনিভার্সের মঞ্চ মানেই আলো, হাসি আর উৎসব। কিন্তু ফাতিমা বশের পথটা ছিল অন্যরকম। তার পথে ছিল কটাক্ষ, তিরস্কার আর অপমানের। সব বাধা পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছেন তিনি। মেক্সিকোর সেই ফাতিমা বশের মাথায় উঠল মিস ইউনিভার্সের মুকুট। বিশ্বের ১২১ প্রতিযোগীকে হারিয়ে সেরা হন তিনি। মাথায় মুকুট পড়িয়ে দেন, গতবারের বিজয়ী ভিক্টোরিয়া কিয়ের থেইলভিগ। ঠিক সেই মুহূর্ত থেকে আলোচনায় এক নাম। ‘মিস ইউনিভার্স’ বিজয়ী কে এই ফাতিমা বশ?

জয় করেন মস্তিষ্ক জনিত জটিল রোগ
২০০০ সালের ১৯ মে মেক্সিকোর তাবাস্কোর ভিলাহেরমোসাতে জন্মগ্রহণ করেন ফাতিমা বশ। তার পুরো নাম ফাতিমা বশ ফার্নান্দেজ। ছোটবেলায় ভীষণ প্রাণবন্ত ছিলেন এই সুন্দরী। প্রকৃতির প্রতি গভীর প্রেমও তার তখন থেকেই। পাশাপাশি নিজ দেশের সংস্কৃতির প্রতি ফাতিমার ভালোবাসা মুগ্ধ করেছেন কোটি মানুষকে। মাত্র ৬ বছর বয়সে কঠিন বাস্তবার মুখোমুখি হন ফাতিমা। মস্তিষ্ক জনিত জটিল রোগ ধরা পড়ে তার। শিক্ষাজীবনকে ফেলে দেয় অনিশ্চয়তায়। তবে, এই প্রতিবন্ধকতা থামাতে পারেনি ফাতিমাকে। অধ্যবসায় ও দৃঢ় সংকল্পে প্রতিটি বাধাকে শক্তিতে পরিণত করেন।

১৭ বছরে জেতেন ‘ফ্লোর তাবাস্কো’ পুরস্কার
১৬ বছর বয়সে ফাতিমা উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভারমন্টে পাড়ি জমান। সেখানে এক বছর পড়াশোনা করে ফেরেন মেক্সিকোতে। ফাতিমার শৈশবের স্বপ্ন ছিল মেক্সিকোর ফ্লোর তাবাস্কো সুন্দরী প্রতিযোগিতার মুকুট জয়। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরেই স্বপ্নকে স্পর্শ করেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সে ‘ফ্লোর তাবাস্কো’ পুরস্কার জিতে নেন।
ফ্যাশনেই ক্যারিয়ার গড়লেন ফাতিমা বশ
পড়ার টেবিলে ফাতিমা বেছে নিয়েছিলেন ফ্যাশনকে। ফ্লোর তাবাস্কো জয়ের পর মেক্সিকো সিটির ইউনিভেরসিডাড ইবেরোমেরিকানাতে ফ্যাশন এবং পোশাক ডিজাইনে ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এরপর পড়তে যান ইতালি। দেশটির মিলানে নুওভা আক্কাদেমিয়া ডি বেল্লে আরতি-তে উচ্চতর ডিগ্রির জন্য পড়াশোনা করেন তিনি।

কটাক্ষের সামনে গড়ে তোলেন প্রতিরোধ
প্রিপ্যাজেন্টে প্রোমোশনাল কনটেন্ট দেরিতে দেয়ায় থাইল্যান্ডের পরিচালক নাওয়াত লাইভে ফাতিমাকে ‘ডাম্বহেড’ বলে কটাক্ষ করেন। ফাতিমা প্রতিবাদ করলে নিরাপত্তা দিয়ে তাকে চাপে ফেলার চেষ্টা হয়। এতে অন্যান্য প্রতিযোগীরা হল ত্যাগ করেন। ঘটনায় আলোড়ন সৃষ্টি হলে বিশ্বের সমর্থন পান ফাতিমা। আর নাওয়াতকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় আয়োজকরা।
মুকুট জয়ের পর ফাতিমা বশের বার্তা
মুকুট জয়ের পর ফাতিমা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এখনকার যুগে কোনো নারীই কারও হাতের পুতুল হয়ে থাকবে না। তিনি এখানে এসেছেন সব নারীর প্রতিনিধিত্ব করতে। নারীদের পক্ষের এই দৃঢ় অবস্থানই তাকে আরও শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।