কনটেন্ট নির্মাতা রিপন মিয়া
জনপ্রিয় কনটেন্ট নির্মাতা রিপন মিয়া আবারও উঠে এসেছেন আলোচনার কেন্দ্রে। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাঁকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা গেছে নানা প্রতিক্রিয়া—কখনো সমালোচনার তীব্র ধারা, কখনো বা আবেগঘন সহানুভূতি।
এক টেলিভিশন প্রতিবেদনে রিপনের বিরুদ্ধে মা-বাবাকে ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগ, অন্যদিকে রিপনের মাকে জড়িয়ে ধরা এক আবেগঘন ভিডিওতে দেখা গেছে কান্নার বন্যা। দুই বিপরীত দৃশ্য একসঙ্গে আলোড়ন তুলেছে পুরো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
দুপুরে একাধিক ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত একটি প্রতিবেদনে রিপনের মা বলেন, “অনেক কষ্ট করে মানুষ করছি, এখন সে পরিচয় দেয় না। আমরা গরিব মানুষ, ওর যদি সম্মান চলে যায় তাই চায় না।‘ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রিপন এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আলাদা বাড়িতে থাকেন, তবে মা–বাবার সঙ্গে আর থাকেন না এবং ভরণপোষণও দেন না।
এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। কেউ মন্তব্য করেন, “খ্যাতি মানুষকে বদলে দেয়।‘ আবার কেউ বলেন, “মায়ের কষ্টের কথা শুনে চোখে পানি আসে।‘
‘তোমারে দেহি না আমি?
আবার মঙ্গলবার রাতেই ভাইরাল হয় আরও একটি নতুন ভিডিও, যেখানে দেখা যায় রিপন মিয়া তার মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন। ভিডিওতে আঞ্চলিক ভাষায় তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘তোমারে দেহি না আমি? আব্বারে দেহি না আমি? তুমি ইড্ডা কী করলা? আমার জীবনডা শেষ করলা!”
মায়ের গলাতেও আবেগ। ছেলেকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে তিনিও কাঁদছেন।
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই পাল্টে যেতে থাকে মানুষের প্রতিক্রিয়া। অনেকেই তখন মন্তব্য করেন, “মা–ছেলের সম্পর্ক পবিত্র। ভুল–বোঝাবুঝি হতেই পারে, কিন্তু সম্পর্কটা অটুট থাকে।‘
পরে রাতেই গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন রিপন মিয়া। তিনি বলেন, “এই ঘটনা নিয়ে কথা বলার মানসিক অবস্থায় আমি নেই। তবে খুব তাড়াতাড়ি সব প্রশ্নের উত্তর দেব। আমি আমার পরিবারকে সব সময়ই দেখেছি, ভবিষ্যতেও দেখব। যদি কোনো ঘাটতি থেকে থাকে, সেটাও পূরণ করব। তবে আমার সরল বাবা-মাকে নিয়ে যারা ব্যবসা করেছে, তাদের বিচার একদিন হবেই।”
অভিযোগ করলেন রিপন মিয়া
এর আগেই, সোমবার নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে রিপন মিয়া অভিযোগ করেন, “কিছু টিভি সাংবাদিক অনুমতি ছাড়াই আমার বাড়িতে প্রবেশ করে। ঘরে নারী সদস্য থাকার পরও ভিডিও করে, পরিবারকে হেনস্তা করে।”
নেত্রকোনার সদর উপজেলার কাঠমিস্ত্রি রিপন মিয়া প্রথম আলোচনায় আসেন ২০১৬ সালে। তার তৈরি একটি আবেগঘন ভিডিও, “বন্ধু তুমি একা হলে আমায় দিয়ো ডাক,/ তোমার সাথে গল্প করব আমি সারা রাত’ মুহূর্তেই যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে, ছুঁয়ে যায় লাখো মানুষের মন।
এরপর থেকে হাস্যরসাত্মক, আঞ্চলিক ভাষাভিত্তিক কনটেন্ট নির্মাণ করে জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন রিপন। বর্তমানে তার ফেসবুকে অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ১৯ লাখ। বিজ্ঞাপন, নাটক ও সিনেমার প্রচারণাতেও তাকে দেখা গেছে।
এই মুহূর্তে আবেগ, সমালোচনা এবং সংশয়ের মাঝে দাঁড়িয়ে কনটেন্ট নির্মাতা রিপন মিয়া।