ভক্তদের কাছে বেশ জনপ্রিয় ও উদাহরণস্বরূপ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত বলিউড দম্পতি আয়ুষ্মান খুরানা ও তাহিরা কাশ্যপ। তারা উদাহরণ এই কারণে যে খারাপ সময়েও কেউ কাউকে অবমাননা-ছেড়ে যাওয়ার মতো ঘটনায় জড়াননি।
এই দম্প্রতির শুরুর সময়টা সহজ ছিল না মোটেও। দাম্পত্য জীবনের শুরুতে ভীষণ আর্থিক কষ্টে কেটেছে তাদের সময়। এমনও দিন পার করতে হয়েছে, যখন বাজার করার মতো টাকাও তাদের হাতে থাকত না। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সংসারের শুরুর দিকের কঠিন সময়ের স্মৃতি তুলে ধরেছেন তাহিরা।
‘দ্য অফিশিয়াল পিপল অব ইন্ডিয়া’ কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাহিরা জানিয়েছেন, বিয়ে–পরবর্তী সময় তাদের জন্য ভীষণ কঠিন ছিল। কারণ, আয়ুষ্মান তখন প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা ছিলো না। আয়ুষ্মানের তখন তেমন আয় ছিল না। তাহিরার রোজগারে চলত সংসার। তাহিরাও একসময় বেকার হয়ে পড়েন, তখন সঞ্চয় ভেঙে সংসার চালান তিনি। কিন্তু একটা সময় পর তা–ও শেষ হয়ে যায়। এ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও মা–বাবার কাছ থেকেও সাহায্য চাননি তাহিরা।
নিজেদের অবস্থার কথা বলতে গিয়ে তাহিরা বলেন, ‘এই ছেলেটার (আয়ুষ্মান) কোনো ধারণাই ছিল না যে ঘরে বাজার কীভাবে আসত। আমার ব্যাংকের সঞ্চয় আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যায়। খুব খারাপ পরিস্থিতি দেখতে হয় আমাদের। কোনো দিন কারও কাছ থেকে টাকা চাইনি, এমনকি বাবা-মায়ের কাছ থেকেও না’।
আয়ুষ্মান-তাহিরা এমনও দিন পার করেছেন, যখন বাসায় আম আনার মতোও টাকা ছিল না। একদিনের ঘটনা মনে করে তাহিরা বলেন, ‘একদিন আমাকে আয়ুষ্মান জিজ্ঞেস করে, আমি কেন আম কিনে আনিনি। সেদিন আমার ভীষণ রাগ হয়, কাঁদতে শুরু করি। বলি, “তুমি ভেবে দেখেছ, আমরা বাজারের জিনিসপত্র কীভাবে কিনছি? আমার অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই। সাত-আট মাস হয়ে গেছে। আমি কাজ খুঁজছি, অথচ শুধু আমার সঞ্চয় দিয়ে সংসার চলছে’।
‘ভিকি ডোনার’ অভিনেতা আয়ুষ্মান তখন বুঝতে পারেন পরিস্থিতি কতটা সংকটের। তিনি তাহিরাকে প্রশ্ন করেন, কেন তাহিরা তাকে কিছু বলেননি। উত্তরে তাহিরা বলেন, তিনি কোনো দিন কারও কাছে টাকা চাইতে পারেননি। এরপর আয়ুষ্মান তার ক্যারিয়ার শুরু করেন ভিডিও জকি হিসেবে। আস্তে আস্তে আর্থিক সংকট কাটতে থাকে।
প্রসঙ্গত, স্কুলে পড়াকালীনই একে অপরের ভীষণ ভালো বন্ধু হয়ে উঠেছিলেন তাহিরা ও আয়ুষ্মান। ২০০৮ সালে তারা বিয়ে করেন। তাদের রয়েছে বিরাজবী নামে এক ছেলে ও ভারুস্কা নামে এক মেয়ে।