Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
সোমবার, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৫

২০২৫ সালের হলিউডের সেরা দশ সিনেমা

হলিউডের সেরা দশ সিনেমা | কোলাজ

হলিউডের সেরা দশ সিনেমা

শেষ হতে যাচ্ছে ২০২৫ সাল। এই বছরের সিনেমা শুধু বিনোদনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং সময়ের রাজনীতি, সমাজ, ভয়, বিশ্বাস ও মানুষের ভেতরের অস্থিরতাকে বড় পর্দায় তুলে ধরেছে ভিন্ন ভিন্ন ভাষায়। সেই প্রেক্ষাপটে ২০২৫ সালের হলিউডের সেরা দশ সিনেমা কোন গুলো জেনে নেয়া যাক। সূত্র: ভ্যারাইটি

১০. দ্য প্রেসিডেন্ট’স কেক (The President’s Cake)  

২০২৫ সালের হলিউডের সেরা দশ সিনেমা
‘দ্য প্রেসিডেন্টস কেক‘ সিনেমার পোস্টার

নির্মাতা: হাসান হাদি

১৯৯০-এর দশকের ইরাকের পটভূমিতে নির্মিত এই ছবিটি লামিয়া (বানীন আহমেদ নায়েফ) নামে একজন মেয়ের উপর নির্মিত। সিনেমায় দেখা যায় লামিয়াকে প্রেসিডেন্টস সাদ্দাম হোসেনের জন্মদিন উপলক্ষে কেক তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ৯ বছর বয়সী এক কিশোরীর জন্য এটি একটি বিশাল কাজ। কিন্তু লামিয়া চালাক, স্কুলের সহপাঠী এক পকেটমারের সাথে মিলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করে।  সিনেমাটি ইরাকের পাশ্ববর্তী দেশ- “দ্য হোয়াইট বেলুন” এবং “চিলড্রেন অফ হেভেন” এর মতো মানবিক ও শিশুকেন্দ্রিক চলচ্চিত্র, যেখানে শিশুদের উদ্বেগের ভিতর দিয়ে পুরো জাতির মানসিকতা ও তাদের গল্প তুলে ধরা হয়েছে।

৯. বুগোনিয়া (Bugonia)

পরিচালনা: ইয়োরগোস ল্যান্থিমোস

২০২৫ সালের হলিউডের সেরা দশ সিনেমা
‘বুগোনিয়া‘ সিনেমার পোস্টার

রহস্য, অস্বস্তি আর মানুষের অদ্ভুত অনুভুতির মিশেলে তৈরি এই ছবিটি ল্যান্থিমোসের স্বাক্ষর বহন করে। গল্পের কেন্দ্রে থাকা চরিত্রগুলোর অভিনয় ছবিটিকে কার্যকর করে তুলেছে। বিশেষ করে প্রধান দুই অভিনয়শিল্পীর উপস্থিতি ছবির প্রতিটি মুহূর্তে টান তৈরি করে রাখে। এটি সহজপাচ্য ছবি নয়, বরং দর্শককে ভাবতে বাধ্য করে।

৮. সোলেইমান’স স্টোরি (Souleymane’s Story)  

নির্মাতা: বরিস লোজকিন

২০২৫ সালের হলিউডের সেরা দশ সিনেমা
সোলেইমান’স স্টোরি

এই ছবিটি প্যারিসে বসবাসকারী গিনিয়ান অভিবাসী সোলেইমানকে কেন্দ্র করে নির্মিত। সিনেমায় দেখা যায় সোলেইমান বেশ দুর্বিসহ দিন কাটাচ্ছেন এবং রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়ার জন্য একটি সাক্ষাৎকারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খাদ্য সরবরাহ কর্মী হিসেবে কাজ করছেন জীবিকার তাগিদে। কিন্তু সবসময় তিনি নির্বাসনের ভয়ে থাকেন। ক্লান্তিকর শ্রম, আমলাতন্ত্রের জটিল কারাগারে পড়েছেন। বাস্তবসম্মত ও প্রায় তথ্যচিত্রের ধরণে বর্ণিত এই ছবিটি ইউরোপের অভিবাসন ব্যবস্থার মর্যাদা, বেঁচে থাকা এবং মানবিক মূল্যবোধ ও তাদের সংগ্রামকে কেন্দ্র করে নির্মিত।

৭. মার্টি সুপ্রিম (Marty Supreme)

পরিচালনা: বাকি ডলি

২০২৫ সালের হলিউডের সেরা দশ সিনেমা
মার্টি সুপ্রিম

এই ছবিটি এক নিঃশ্বাসে দেখার মতো। প্রচণ্ড গতি, মানসিক চাপ আর বিশৃঙ্খলার ভেতর দিয়ে এগিয়ে যায় গল্প। দর্শক এখানে আরাম পায় না, বরং চরিত্রদের সঙ্গে সঙ্গে দৌড়াতে বাধ্য হয়। এটি এমন এক অভিজ্ঞতা, যেখানে উত্তেজনা নিজেই গল্প হয়ে ওঠে।

৬. ওয়ান ব্যাটল আফটার এনাদার (One Battle After Another)

২০২৫ সালের হলিউডের সেরা দশ সিনেমা
ব্যাটল ওয়ান আফটার এনাদার

নির্মাতা: পল থমাস অ্যান্ডারসন

ব্যাটল ওয়ান আফটার এনাদার ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং আদর্শিক এক লড়াইয়ের গল্প। ছবিটি এমন চরিত্রদের নিয়ে যারা বারবার ক্ষমতা, অপরাধবোধ এবং দায়িত্বের মুখোমুখি হয়, যেখানে প্রতিটি সংকল্পবদ্ধ সংগ্রাম একটি নতুন সংগ্রামের পথ তৈরি করে। একটি একক ঘটনার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করার পরিবর্তে, গল্পটি পরীক্ষা করে যে কীভাবে মানুষ অতীতের যুদ্ধের ভার বর্তমানের দিকে নিয়ে যায়, জয় এবং পরাজয়ের মধ্যে রেখা ঝাপসা করে দেয়।

৫. ইট ওয়াজ জাস্ট এন এক্সিডেন্ট (It Was Just an Accident)

২০২৫ সালের হলিউডের সেরা দশ সিনেমা
ইট ওয়াজ জাস্ট এন এক্সিডেন্ট

পরিচালনা: জাফার পানাহি

কর্তৃত্ব, নিপীড়ন এবং ন্যায়ের প্রশ্নে এক সাহসী চলচ্চিত্র। কয়েকজন প্রাক্তন রাজনৈতিক বন্দির চোখ দিয়ে অতীতের ক্ষত আর প্রতিশোধের দ্বন্দ্ব এখানে তুলে ধরা হয়েছে। নির্মাতার ব্যক্তিগত বাস্তবতার কারণে ছবিটির প্রতিটি দৃশ্য আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এটি নিঃশব্দ প্রতিবাদের একটি শক্তিশালী উদাহরণ।

৪. টুয়েন্টি এইট ইয়ার্স লেটার (28 Years Later)

টুয়েন্টি এইট ইয়ার্স লেটার (28 Years Later)
টুয়েন্টি এইট ইয়ার্স লেটার

পরিচালনা: ড্যানি বয়েল ও অ্যালেক্স গারল্যান্ড

পোস্ট-অ্যাপক্যালিপ্টিক কাঠামোর ভেতর দিয়ে এই ছবি আসলে ব্রিটিশ সমাজের পরিচয় ও সংকট নিয়ে কথা বলে। অতীত ও বর্তমানের চিত্র একসঙ্গে ব্যবহার করে ছবিটি জাতিগত স্মৃতি, বিচ্ছিন্নতা এবং ভয়ের অনুভূতিকে গভীরভাবে তুলে ধরে। এটি শুধু হরর নয়, বরং রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিফলন।

৩. ওয়েপনস (Weapons)

টুয়েন্টি এইট ইয়ার্স লেটার (28 Years Later)
ওয়েপনস

পরিচালনা: যাচ ক্রেগার

এই ছবিটি দেখিয়ে দেয়, মৌলিক গল্প এখনো দর্শককে চমকে দিতে পারে। হরর ও হাস্যরসের ভারসাম্য, শক্তিশালী অভিনয় এবং নিখুঁত দৃশ্যায়ন ছবিটিকে বিশেষ করে তোলে। অন্ধকারের মধ্যেও দৃশ্য পরিষ্কার থাকে, রহস্য জমে ওঠে ধীরে ধীরে। এটি প্রাপ্তবয়স্ক দর্শকের জন্য নির্মিত একটি পরিণত হরর চলচ্চিত্র।

২. সিনার্স (Sinners)

পরিচালনা: রায়ান কোগ্লার

টুয়েন্টি এইট ইয়ার্স লেটার (28 Years Later)
সিনার্স

সংগীত, সংস্কৃতি আর স্মৃতির ভেতর দিয়ে এক পরীক্ষামূলক যাত্রা এই ছবি। সময় যেন এখানে সোজা পথে চলে না, বরং ভেঙে ভেঙে ফিরে আসে। বিভিন্ন সংস্কৃতির মিলন, সঙ্গীতের আবেগ আর চিত্রকল্পের শক্তি ছবিটিকে অনন্য করে তোলে। শেষ অংশে আবেগ ও উত্তেজনা একসঙ্গে চরমে পৌঁছায়।

১. সেন্টিমেন্টাল ভ্যালু (Sentimental Value)

টুয়েন্টি এইট ইয়ার্স লেটার (28 Years Later)
সেন্টিমেন্টাল ভ্যালু

পরিচালনা: জোয়াকিম ট্রিয়ার

সেন্টিমেন্টাল ভ্যালু হল একটি নরওয়েজিয়ান সিনেমা। সিনেমাটি নোরা এবং অ্যাগনেস, দুই প্রাপ্তবয়স্ক বোনের উপর নির্মিত। তাদের বাবা গুস্তাভ বোর্গের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন, যিনি একসময়ের বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ছিলেন এবং বহু বছর আগে তাদের পরিবার ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তাদের মায়ের মৃত্যুর পর, গুস্তাভ অসলোতে ফিরে আসেন এবং পুনরায় সংযোগ স্থাপনের আশায় নোরাকে একটি গভীর ব্যক্তিগত ছবিতে অভিনয় করার জন্য প্রস্তাব দেন। প্রকল্পটি বেদনাদায়ক এক পারিবারিক ইতিহাস এবং তার নিজের মায়ের আত্মহত্যার উপর ভিত্তি করে তৈরি। নোরা, তার অনুপস্থিতি এবং অতীতের মানসিক ক্ষতগুলির কথা ভেবে এই প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করে। গুস্তাভ তারপর সিনেমাটি এক তরুণ হলিউড অভিনেত্রীকে দেন, যা তাদের ইতিমধ্যেই টানাপোড়েনপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জটিল করে তোলে। শোক, বিরক্তি, হাস্যরস এবং অস্থায়ী পুনর্মিলনের মুহূর্তগুলির মধ্য দিয়ে, গল্পটি অন্বেষণ করে যে কীভাবে অমীমাংসিত ট্রমা এবং শৈল্পিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা একটি পরিবারের মধ্যে ছেদ ঘটায় এবং দেখায় প্রেম দীর্ঘস্থায়ী বিভাজনের মধ্যে কোন সেতু তৈরি করতে পারে কিনা।  

অনারেবল মেনশন

উল্লেখযোগ্য অন্যান্য চলচ্চিত্র

Caught Stealing

অস্বস্তিকর অনুভূতির মধ্যেও একধরনের আনন্দ তৈরি করা এই ছবিতে আসক্তি, বিশ্বাস ও যন্ত্রণার গল্প বলা হয়েছে। অন্য ছবির তুলনায় এখানে শেষভাগে সামান্য আশার আলো রয়েছে।

Henry Johnson

দীর্ঘ সংলাপনির্ভর সূচনাই ছবিটির সবচেয়ে বড় শক্তি। দর্শককে ধীরে ধীরে দার্শনিক ভাবনার ভেতরে নিয়ে যায়।

Honey Don’t

সম্পূর্ণ সফল না হলেও সাহসী নির্মাণ ও অপ্রত্যাশিত মোড় ছবিটিকে আলাদা করে আলোচনায় রেখেছে।

Springsteen: Deliver Me From Nowhere

প্রচলিত জীবনীচিত্রের বাইরে গিয়ে একটি সৃজনশীল ও চ্যালেঞ্জিং দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছে।

After the Hunt

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে নির্মিত এই ছবি দর্শককে ভাবতে বাধ্য করে, প্রশ্ন তোলে আধুনিক জীবনের গতিপথ নিয়ে।

Sound of Falling

২০২৫ সালের সিনেমা আমাদের শুধু গল্প দেখায়নি, বরং সময়কে বুঝতে সাহায্য করেছে। এই ছবিগুলো হয়তো ভবিষ্যতে ফিরে তাকালে একটি অস্থির যুগের সবচেয়ে স্পষ্ট দলিল হিসেবেই স্মরণে থাকবে।

Website |  + posts
Share this article
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Read next

জয়নুলের ১১১তম জন্মবার্ষিকী-থাকছে না মেলা-সম্মাননা

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ১১১তম জন্মবার্ষিকী আজ ২৯ ডিসেম্বর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ১১১তম জন্মবার্ষিকী। এ…
জয়নুলের ১১১তম জন্মবার্ষিকী

বিস্ফোরক মন্তব্য টাইটানিক ছবির নায়িকার

মেয়েদের প্রতি টানও ছিল কেট উইন্সলেটের বিশ্বজুড়ে কেট উইন্সলেটকে বেশিরভাগ মানুষ চেনেন ‘টাইটানিক’ সিনেমার রোজ…
বিস্ফোরক মন্তব্য টাইটানিকের নায়িকার

আনারসের জীবন নিয়ে ‘আনারসের ঢাকা সফর’ মঞ্চস্থ হচ্ছে

আনারসের জীবন নিয়ে ‘আনারসের ঢাকা সফর’ টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর আনারসের জন্য বিখ্যাত। সেই মধুপুরের একটি বাগানের…
আনারসের জীবন নিয়ে ‘আনারসের ঢাকা সফর'
0
Share