মে দিবসে সিনেপ্লেক্সের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশের নির্মতারা।
১ মে সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পায় হলিউডের ‘দ্য ফল গাই’ এর আগে থেকেই হলে চলছিল ‘কুংফু পান্ডা ৪’, ‘গোস্টবাস্টার্স: ফ্রোজেন অ্যাম্পায়ার’ ও ‘ডিউন: পার্ট টু’ ও ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’। তাই ‘দেয়ালের দেশ’, ‘কাজলরেখা’র মত সিনেমার দর্শক থাকা সর্তেও বেশকিছু বাংলা ছবির প্রদর্শনী কমিয়ে দিচ্ছে আবার কোনোটির প্রদর্শনী ইতিমধ্যে একেবারে বন্ধ করে দিয়েছে।
‘রাজকুমার’ ছবির পরিচালক হিমেল আশরাফ বুধবার ( ১ মে ) সিনেপ্লেক্স প্রদর্শনীর টিকিটের স্ক্রিনশট ফেসবুকে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘ঠিক গত সপ্তাহে টিকিট বিক্রিতে ১ নম্বরে ছিল যেই সিনেমা, সেই সিনেমার কোনো শো পরের সপ্তাহে নেই, একটা শো–ও না! ঈদের সব বাংলা সিনেমা উধাও হয়ে গেল! প্রতিদিন ৫০টার ওপরে শো স্টার সিনেপ্লেক্সের। এর মধ্যে একটা শো পাওয়ার যোগ্যতা নেই ঈদের কোনো সিনেমার? অথচ আজকে সন্ধ্যার ‘রাজকুমার’, ‘কাজলরেখা’র শোর টিকিট অনলাইনে চেক করে দেখেন—৬০ শতাংশ অলরেডি বিক্রি হয়ে গেছে। এখনো চার ঘণ্টা বাকি! আমি আজকে সন্ধ্যার শো স্ক্রিনশট দিলাম, যেখানে ‘রাজকুমার’–এর ৮৫ শতাংশ টিকিট সোল্ড আউট। আগামী শুক্রবার থেকে বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্সে ছয়টা বিদেশি সিনেমা চলবে, যেখানে বাংলা সিনেমা চলবে একটা! ১৬টা শো বিদেশি সিনেমার, ৪টা শো বাংলা সিনেমার! বাংলাদেশের সিনেমা হল, বাংলাদেশের মানুষই দর্শক, বাংলা সিনেমার দর্শক থাকার পরও বাংলা সিনেমা নেই! এই দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়াতে অনেক পথ বাকি, অনেক…।’
একইভাবে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম ও মিশুক মনি।
ক্ষোভের বিষয়টি স্টার সিনেপ্লেক্সের নজরে পড়লে গণমাধ্যমের কাছে প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র ম্যানেজার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশি হিসেবে বাংলা সিনেমাকেই প্রাধান্য দিয়ে এসেছি সব সময়। বাংলা সিনেমার পৃ্ষ্ঠপোষকতায় এই প্রতিষ্ঠান নিজেরাও বাংলা সিনেমা প্রযোজনা করে। অথচ মে দিবসের এই দিনে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠবে কখনও ভাবিনি।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘দর্শক চাহিদা রয়েছে এমন সিনেমার শো নামিয়ে ফেললে প্রতিষ্ঠানেরই ক্ষতি। সেটা কেন করতে যাবে সিনেপ্লেক্স? বলতে বাধ্য হচ্ছি, আজ মে দিবস। বন্ধের দিন। সিনেমা হলের টিকিট বিক্রি হবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু নামিয়ে ফেলা সিনেমাগুলোর দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহের টিকিট বিক্রি দেখলে বোঝা যাবে, কেন সিনেমাগুলো নামাতে বাধ্য হয়েছি।’
সবশেষে কিছুটা আফসোস নিয়ে মেসবাহ উদ্দিন বলেন, ‘সিনেমার শো নামিয়ে ফেলাই শেষ সিদ্ধান্ত নয়। দর্শকচাহিদা আর গ্লোবাল নিয়ম মেনেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাগুলো চালানো হয়। মূল পরিস্থিতিটা নির্মাতাদের বুঝতে হবে। সিনেমা না চালালে আমাদেরই ক্ষতি। সে ক্ষতি কেন আমরা করব? বাংলা সিনেমায় স্টার সিনেপ্লেক্সের এত অবদান, অথচ আমাদের প্রতি তাদের এমন ঠুনকো বিশ্বাস সত্যি কষ্টকর!’