Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
মঙ্গলবার, অক্টোবর ১৪, ২০২৫

ববিতার মনে দোলা জাগিয়েছে যে চার পরিচালক   

বরেণ্য অভিনেত্রী ববিতা

বরেণ্য অভিনেত্রী ববিতা

বাংলাদেশের বরেণ্য অভিনেত্রী ববিতা অভিনয়ে বেশ অনেকবছর ধরেই নেই। সর্বশেষ ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’ সিনেমা করেছিলেন ১০ বছর আগে। ১৯৬৮ সালে জহির রায়হানের ‘সংসার’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে পর্দায় অভিষেক হয় তার। তারপর হয়ে উঠেছেন ইতিহাস। চার দশকের বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে গ্রামীণ, শহুরে কিংবা সামাজিক অ্যাকশনসহ বৈচিত্র্যেভরা অভিনয় দিয়ে নিজেকে করে তুলেছিলেন রঙিন। সত্তর ও আশির দশকে তরুণ-তরুণীদের কাছে তিনি ছিলেন ভীষণ জনপ্রিয়। তার ফ্যাশন-ভাবনা তরুণীদের প্রভাবিত করত। বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে ববিতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেন। তার অভিনীত ছবির সংখ্যা ২৫০টিরও বেশি।

দর্শকদের রূপে-গুণে মুগ্ধ করে রাখলেও কেউ কেউ আবার মুগ্ধ করেছেন ববিতাকেও। ববিতাও হয়েছেন কারো কারো ভক্ত। ববিতা যাদের ভক্ত বনে গেছেন তাদের মধ্যে আছেন দেশ–বিদেশের বেশ কয়েকজন পরিচালক। চলুন জেনে নেয়া যাক ববিতার প্রিয় ৪ জন পরিচালককে।  

ববিতার প্রিয় আলফ্রেড হিচকক

আলফ্রেড হিচকক ববিতার প্রিয় পরিচালকদের মধ্যে একদম প্রথম সারিতেই আছেন বলে জানান তিনি। এই পরিচালকের ‘দ্য বার্ডস’ ছবিটি তার দেখা সবচেয়ে বেশি ভালো লাগার সিনেমা বলেও তিনি উল্লেখ্য করেন।  

“আমি তো ছবিটি দেখে এতটাই মুগ্ধ হয়েছি, বলার অপেক্ষা রাখে না। আমি শুনেছি, হিচকককে খুব সম্মান দেওয়া হতো। তাকে কেন সম্মান দেওয়া হতো, কেন তিনি এতটা বিখ্যাত, তার ছবিগুলো দেখার পর উপলব্ধি করতে পেরেছি। মনস্তাত্তিক, থ্রিলার ও সাসপেন্সের দক্ষতায় হিচককের সিনেমাগুলো সাধারণ গল্প হলেও তিনি সাসপেন্স এবং উত্তেজনা তৈরি করার অসাধারণ ক্ষমতা রাখতেন। “দ্য বার্ডস” ছবিটি মানুষের ভয়ের প্রতীকী হিসেবে কাজ করেছে। তবে তিনি যে শুধু দর্শককে ভয় দেখাতে চাননি, বরং মানুষের মানসিক দুর্বলতা ও অপ্রত্যাশিত বিপদের রিফ্লেকশনও দেখাতে চেয়েছিলেন।’

ববিতার দেখা আলফ্রেড হিচককের অন্য সব প্রিয় ছবির তালিকায় আছে ‘দ্য লেডি ভ্যানিশেস’, ‘শ্যাডো অব আ ডাউট’, ‘সাইকো’ এবং ‘ভার্টিগো’।

ববিতার প্রিয় পরিচালকের তালিকায় সত্যজিৎ রায়

কিংবদন্তী অভিনেত্রী ববিতা তার প্রিয় পরিচালকের তালিকায় এগিয়ে রেখেছেন আরেক কালজয়ী নির্মাতা সত্যজিৎ রায়কে। করেছেন সত্যজিৎ-এর ‘অশনি সংকেত’ সিনেমা অভিনয়ও। সেই অভিনয়ের সুবাদে তাকে (সত্যজিৎ) খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগও হয়েছিলো ববিতার। অভিনেত্রী জানালেন এখনো সময় পেলে সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা দেখেন তিনি। দেশবরেণ্য এই অভিনয়শিল্পীর মতে, সত্যজিৎ রায় অলরাউন্ডার। সারা পৃথিবীর মধ্যে তিনি অন্যতম শ্রেষ্ঠ একজন পরিচালক। তিনি যেসব বিষয় নিয়ে ছবি বানিয়েছেন, সবই অন্য রকম; তার শিল্পী বাছাই, গল্প, চিত্রনাট্য, ক্যামেরার কাজ সবই ভিন্নধর্মী।

ববিতার ভাষ্যে, ‘আমি যখন “অশনি সংকেত” করতে গিয়েছিলাম, তখন আমি একদম ইনোসেন্ট ছিলাম। সিনেমার অত কিছু বুঝতামও না। তার কাজের ধরন আমাকে অবাক করেছে, মুগ্ধ করেছে। এককথায় বলতে গেলে, তিনি খুবই পারফেকশনিস্ট একজন পরিচালক। তার চিত্রনাট্যের একটা দিক আমার ভালো লাগত, বাঁ পাশে লেখা থাকত, শর্টটা কী রকম হবে, ক্যামেরার অ্যাঙ্গেলটা কেমন হবে। আর ডান পাশে লেখা থাকত চরিত্রের বর্ণনা, সংলাপ এসব।

অত্যন্ত গোছানো একজন পরিচালক। ওই বয়সে যতটুকু বুঝেছি, তাতে বলব, এখনো মনে পড়ে—যেখানে “অশনি সংকেত” ছবির শুটিং করেছি, গঙ্গাচরণের যে বাড়ি, আমি তো ভেবেছিলাম, সত্যি সত্যি বাড়ি। বাড়ির চালে লাউ, কুমড়ার গাছ, শাকসবজি, টিয়া পাখি ডাকছে। এদিক–সেদিক কুকুর  ঘুরছে, সামনে ধানক্ষেত; কোথাও সবুজ, কোথাও আবার সোনালি—ওই বাড়িতে প্রথমে ঢুকেই মনে করেছি, সত্যি সত্যি কোনো বাড়িতেই বুঝি শুটিং করছে। পরে বুঝলাম, এটা সিনেমার জন্যই বানানো হয়েছে। সত্যজিৎ রায়ের সব ছবিই দেখেছি। তবে আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে “পথের পাঁচালী”। এরপর “চারুলতা”, “অপুর সংসার”, “তিন কন্যা”, “হীরক রাজার দেশে”, “গুপী গাইন, বাঘা বাইন”।’

শ্যাম বেনেগালের সমাজচেতনা

ভারতের আধুনিক নির্মাতাদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী নির্মাতা ছিলেন শ্যাম বেনেগাল। যিনি কিছুদিন আগেই প্রয়াত হয়েছেন। শ্যাম বেনেগালও আছেন ববিতার প্রিয় নির্মাতার তালিকায়। তাকে নিয়েকথা প্রসঙ্গে ববিতা বলেন, শ্যাম বেনেগালের ছবি সাধারণত সামাজিক, রাজনৈতিক ও মানবিক বিষয়কে ঘিরে তৈরি হতো। তার সিনেমাগুলোতে সাধারণ মানুষের জীবন, সমস্যা ও সংগ্রামের বাস্তব চিত্র ফুটে ওঠে। তার চরিত্রগুলো জটিল, বাস্তবসম্মত এবং জীবনের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিত্ব করে। সংলাপগুলো সাধারণ কিন্তু অর্থবহ, দর্শককে ভাবতে বাধ্য করে। তার কাজ শুধু বিনোদন নয়, বরং সমাজচেতনা, নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের বার্তা বহন করে।

স্টিভেন স্পিলবার্গে মুগ্ধ ববিতা

হলিউডের বিখ্যাত নির্মাতা স্টিভেন স্পিলবার্গের ‘ই.টি.: দ্য এক্সট্রা টেরিস্ট্রিয়াল’ ছবিটি নিয়ে বেশ প্রশংসা করেন ববিতা। কল্পকাহিনিনির্ভর এই ছবিও ববিতার দেখা অন্যতম সেরা ছবির তালিকায় রেখেছেন তিনি।

ববিতা বলেন, ‘স্পিলবার্গের গল্প বলার ক্ষমতা অভূতপূর্ব। সাধারণ বিষয়কেও এমনভাবে উপস্থাপন করেন, যা দর্শককে আটকে রাখে—“ই. টি.”, “জুরাসিক পার্ক” তার মধ্যে অন্যতম। অ্যাডভেঞ্চার, সায়েন্স-ফিকশন, ড্রামা, হিস্টোরিক্যাল সিনেমা নির্মাণে তার স্টাইল অন্য রকম। স্পিলবার্গ ভিজ্যুয়াল ইফেক্টসকে গল্পের অংশ করে নিয়েছেন। তিনি সিনেমার কেন্দ্রবিন্দুতে সব সময় চরিত্রের আবেগ, পরিবার, বন্ধুত্ব ও মানবিক সম্পর্ক রাখেন। গল্পে থ্রিলার বা অ্যাকশন থাকলেও আবেগ দর্শককে ছুঁয়ে যায়।’

Share this article
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Read next

হুমায়ূনের গল্পে বড় পর্দায় আসছে মোশাররফ-চঞ্চল ও সাবিলা

গল্পকার হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘কিছুক্ষণ’ বাংলা সাহিত্যের অনন্য গল্পকার হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘কিছুক্ষণ’…
হুমায়ূনের গল্পে বড় পর্দায় আসছে মোশাররফ-চঞ্চল ও সাবিলা

ওমর সানীর ক্যারিয়ার ধ্বংসের ৩ কারণ জানালেন পরিচালক

ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে অভিনেতা ওমর সানী ঢালিউড সুপারস্টার হয়েও ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে। পরিচালক ও অভিনেতা…
ওমর সানীর ক্যারিয়ার ধ্বংসের ৩ কারণ জানালেন পরিচালক

সালমান শাহ হত্যা মামলার রায় ২০ অক্টোবর

সালমান শাহ হত্যা মামলা ‎দেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিষ্পত্তির আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশন…
;; সালমান শাহ হত্যা মামলার রায় ২০ অক্টোবর

বাংলাদেশে ভ্রাম্যমাণ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী শুরু করল আইওএম

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য ‘সিনেমা আঙ্গিনা’ নামে বাংলাদেশে…
বাংলাদেশে ভ্রাম্যমাণ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী শুরু করল আইওএম
0
Share