পৈত্রিক সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারায় ব্যতিক্রমী নজির সৃষ্টি করলেন অভিনেত্রী রুনা খান ও তার ভাই তুহিন খান। বাবার সম্পত্তি তারা বণ্টন করে নিয়েছেন সমান সমান ভাগে। ঘটনাটি গতকাল ফেসবুকে তুলে ধরেন এই অভিনেত্রী।
রুনা খান জানান, তুহিন খান তার দেড় বছরের ছোট ভাই। তবে পড়াশোনায় তিনি ভাইয়ের চেয়ে পাঁচ বছরের বড়। বাবা সরকারি চাকরি করতেন। অবসর নেন ১৯৯৮ সালে। তবে ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পরই রুনা জানতে পারলেন, বাবার অবসর ভাতার সব টাকা ফুরিয়ে গেছে।
এর মধ্যেই বাবার অসুস্থতা, আয়-রোজগার বন্ধ। গোটা জীবনে সম্পদ বলতে গড়েছেন গাজীপুরের সখিপুরে ২৫ কাঠার ওপর একটি বাড়ি। রুনা বলেন, ‘আমি স্নাতকে ভর্তি হলাম, তখন তুহিন ক্লাস নাইনে। পরিবারে আমিই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি! টিউশনি-কোচিংয়ে পড়ানো, কুরিয়ার-সার্ভিস অফিসে চাকরি, এসব করে ঢাকায় নিজে চলি, বাড়িতে টাকা পাঠাই, সেই টাকায় ভাইয়ের লেখাপড়া, ঘরের অন্যান্য খরচ চলে। পরে টিউশনির পাশাপাশি শুরু হয় অভিনয়ের উপার্জন।’
কিছুদিন আগে রুনার বাবার রেখে যাওয়া সে বাড়িটি বিক্রি করা হয়েছে।
আর বিক্রির অর্ধেক টাকা রুনাকে দিয়েছেন তার ভাই। অনেকে তার ভাইকে বুঝিয়েছে, দেশের আইন অনুযায়ী সম্পদের বেশির ভাগ পুত্রের প্রাপ্য। তবে তুহিন মনে করেন, বোনের নিরলস চেষ্টায় তাদের পরিবার টিকে ছিল। সম্পত্তিও ছিল অক্ষয়।
রুনা লিখেছেন, ‘আমি যা করেছি, তা এই দেশের বহু মেয়ে হয়তো পরিবারের-ভাইয়ের জন্য করে। তবে আমার ভাই যা করল গত সপ্তাহে, তা এই দেশের কয়জন ভাই বাপের সম্পত্তি ভাগের ক্ষেত্রে বোনদের সঙ্গে করে, তা ঠিক জানি না! আমার থেকে শেখার তেমন কিছু না থাকলেও, আমার ভাইয়ের থেকে এ দেশের ছেলেরা শিখতে পারেন। মনে মনে হাসি আর ভাবি, অর্থ-বিত্ত-বিখ্যাত না হলেও ভাই আমার মানুষ হয়েছে, সত্যিকারের মানুষ’।