Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
সোমবার, জুলাই ১৪, ২০২৫

দিলদার: হাসালেন যিনি, কাঁদালেন যিনি

মা-বাবার দেওয়া নাম ছিল দেলোয়ার হোসেন। এদিকে এক মামার নামও ছিল দেলোয়ার হোসেন। তাই চলচ্চিত্রে আসার আগে ভাবলেন নামটা বদলে ফেলবেন। নতুন নাম রাখলেন দিলদার হোসেন। আর সেই নামটি হয়ে উঠলো দর্শকহৃদয়ে আনন্দের প্রতিশব্দ হিসেবে। বলছি ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় ও কালজয়ী কৌতুক অভিনেতা দিলদারের কথা। আজ তাঁর ২২তম মৃত্যুবার্ষিক। ২০০৩ সালের এই দিনে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই কৌতুক অভিনেতা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৫৮ বছর।  

পরিবারের সদস্যদের সাথে দিলদার | ছবি: ফেসবুক

সিনেমার নায়ক বসে আছেন। তাঁকে ঘিরে ধরেছেন ভক্তরা। এমন সময় সেখানে গাড়ি নিয়ে এসে দাঁড়ালেন দিলদার। আর সঙ্গে সঙ্গে নায়কের সামনে থাকা ভক্তরা জড়ো হলেন দিলদারের সামনে। বেশ কয়েকবার ঘটেছে এমন ঘটনা। চলচ্চিত্র পরিচালক মালেক আফসারী এক ফেসবুক লাইভে এমন একটি ঘটনা ভক্তদের সঙ্গে ভাগাভাগিও করেছিলেন। বোঝাই যাচ্ছে ঢালিউডে কতটা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এই অভিনেতা। তবে দীর্ঘায়ু হতে পারেননি তিনি, চলে গেলেন হুট করেই।

১৯৪৫ সালের ১৩ জানুয়ারি চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলার শাহতলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন দিলদার। এসএসসি পাস করার পর পড়ালেখা ছেড়ে দেন তিনি।

দিলদারের মেয়ের বিয়েতে চিত্রনায়িকা শাবানা | ছবি: ফেসবুক

তাঁর বয়স যখন ২০ তখন সিনেমায় আগমন। ১৯৭২ সালে ‘কেন এমন হয়’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন দিলদার। এরপর থেকে অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। বিশেষ করে আশি ও নব্বই দশকের বাংলা সিনেমায় কৌতুক অভিনেতা মানেই ছিলেন দিলদার। শুধু কৌতুক অভিনেতা নয়, নায়ক হিসেবেও সবার প্রশংসা কুড়ান এই অভিনেতা। দিলদার থাকা মানেই সিনেমা হিট। কৌতুক অভিনেতা হলেও অনেক সিনেমায় তিনিই ছিলেন দর্শকদের আসল আগ্রহের কেন্দ্র।   

তাঁর জনপ্রিয়তায় মুগ্ধ হয়ে তাকে নায়ক চরিত্রে অভিনয়ে নিয়ে আসেন ‘বেদের মেয়ে জোছনা’ ছবির পরিচালক তোজাম্মেল হক বকুল। ‘আবদুল্লাহ’ নামের সেই ছবিতে দিলদারের নায়িকা ছিলেন নূতন। ছবিটি তখন বেশ হিট হয় এবং দর্শকমহলে বেশ সাড়া পড়ে যায়। সিনেমার গানগুলোও দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল সেসময়।

বউয়ের সাথে দিলদার | ছবি: ফেসবুক

২০০৩ সালে ‘তুমি শুধু আমার’ সিনেমায় অভিনয়ের সুবাদে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও অর্জন করেন দিলদার। কিন্তু যে বছর তিনি সেরার স্বীকৃতি পান, সে বছরই সবাইকে কাঁদিয়ে চলে যান না ফেরার দেশে। দিলদারের আছে এক স্ত্রী ও দুই মেয়ে।

অভিনেতার মৃত্যুর পর আরো অনেক কৌতুক অভিনেতাই এসেছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রে। তবে কেউই পূরণ করতে পারেননি দিলদারের অভাব। তৈরি করতে পারেননি নিজের শক্ত অবস্থান।

দিলদারের উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হচ্ছে— ‘বেদের মেয়ে জোসনা’, ‘বিক্ষোভ’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘কন্যাদান’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘সুন্দর আলীর জীবন সংসার’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘শান্ত কেন মাস্তান’সহ অসংখ্য চলচ্চিত্র। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের বিশেষ পাতায় এই অভিনেতার নাম উজ্জ্বল থাকবে চিরকাল।

Share this article
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Read next

জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে কনসার্ট ও সিনেমা

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বিশেষ আয়োজন করছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সোমবার (১৪ জুলাই)…

নির্মাতা ইংমার বার্গম্যানকে নাজি সমর্থক বললেন অভিনেতা স্টেলান স্কারসগার্ড

চেক প্রজাতন্ত্রে অনুষ্ঠিত ‘কার্লোভি ভ্যারি’ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে কালজয়ী নির্মাতা ইংমার বার্গম্যানের সাথে কাজ করার…

মালয়ালম ছবির অনুপ্রেরণায় বদলে যাচ্ছে ক্লাসরুম  

‘ব্যাক বেঞ্চার’ শব্দটি বেশ পরিচিত শিক্ষাঙ্গনে। ক্লাসে যারা পড়াশোনায় পিছিয়ে, কম মনোযোগী এবং দুষ্টুমিতে ওস্তাদ,…
Exit mobile version