কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের নাম বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা। চলে গেলেও কাজের মাধ্যমে তিনি দর্শকদের মনে স্থায়ী ঠিকানা গড়ে রেখেছেন। নায়করাজের দুই ছেলে- বাপ্পারাজ ও খালিদ হোসেন সম্রাট। বড় ছেলে বাপ্পা ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে কিছুটা সফলতার দেখা পেলেও সম্রাট নিজের জায়গা গড়তে সক্ষম হয়নি। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন স্বয়ং সম্রাট।
‘কোটি টাকার ফকির’ খ্যাত সম্রাট অভিমানের সুরে জানান, ‘আমি প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছি, সহকারী পরিচালকের কাজ করেছি। প্রোডাকশনে কাজ করেছি। আমি অভিনয়ের জন্য কাজ করেছি। একজন শিল্পীর তৈরি হওয়ার জন্য একটু সময় লাগে। নিজেকে যখন আমি তৈরি করে একটা অবস্থানে এসেছি, তখন আমাদের দেশের হলগুলো প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি যখন শুরু করেছিলাম, তখন একশ থেকে দেড়শ’র মত সিনেমা হল ছিল। ঐ সময় ঈদকে কেন্দ্র করে আমার সিনেমা মুক্তি পায়নি, স্বাভাবিক সময়েই মুক্তি পেত এবং টাকা উঠিয়ে আনা সম্ভব হতো। কিছু সিনেমার লাভ হতো, আবার কিছুর লোকসানও হতো।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি যোগ করেন, ‘মূলত একজন শিল্পী হতে চাইলে তাকে শৈল্পিক বিষয়গুলো শিখে আসতে হয়। আমি তো রাজনীতি শিখে আসিনি। এ কারণে রাজনীতি করতে পারিনি, ফলে ইন্ডাস্ট্রিতে আমি টিকতে পারিনি। আর এটা কেবলই আমার ব্যক্তিগত মতামত। তবে আমাকে অনেক কষ্ট করে কাজ শিখতে হয়েছে।। শুধু আমি কেন, প্রতিটি শিল্পীরই একটা অবস্থানে যেতে কষ্ট করতে হয়।’
সব মিলিয়ে সম্রাট দাবি করেছেন ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ একটা সময় চলে গেছে তার। আর এফডিসিতে তার কাউকে মিস করার, বা কেউ তাদের মিস করার মতও নেই বলে জানান তিনি। তার মনে, তিনি কষ্ট নিয়ে এসব জানাননি, বরং কেবল মাত্র বাস্তবতাটুকু জানিয়েছেন তিনি। কারণ সম্রাট যাদের সাথে কাজ করেছেন তাদের অনেকে এই পেশা ছেড়ে চলে গেছেন, অনেকে আবার মারা গেছেন। ফলে এফডিসির সাথে বন্ডিংটাও তার আর আগের মত নেই।
এছাড়াও বাবা নায়করাজের কথা মনে হলে নাকি বাবার সিনেমা দেখেন সম্রাট। কীভাবে নায়করাজ হয়েছেন রাজ্জাক, সেটি বোঝার জন্যও তিনি দেখেন তার বাবার সিনেমাগুলো।
প্রসঙ্গত, নায়করাজের পরিচালনায় ‘কোটি টাকার ফকির’ সিনেমার মাধ্যমে বড়পর্দায় অভিষেক করেছিলেন সম্রাট। এরপর আরও কয়েকটি সিনেমায় দেখা গেছে তাকে। কিন্তু সিনেমার অভিনয় করার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেননি তিনি। মাঝে একবার অভিমান ভেঙে ফিরলেও তেমন কিছু করতে পারেননি। অতঃপর একেবারে পর্দার আড়ালেই চলে যান রাজ্জাকপুত্র সম্রাট।