‘আলো আসবেই’ নামের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে ১৯০টির মত স্ক্রিনশট ভেসে বেড়াচ্ছে অন্তর্জালে। আর তাতে শিহরিত এবং অবাক হয়েছেন বাকী শিল্পীরা।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এক মাস হয়ে চলার সময় এমন একটি গ্রুপের আত্মপ্রকাশে অনেকে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। কারণ সহকর্মীরা নিজেদের মানুষের মাঝে এভাবে হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ে থাকবেন তা অনেকেই ভাবেননি।
মৌসুমী হামিদ, মুমতাহিনা টয়া, সৈয়দ জামান শাওন, সিয়াম আহমেদ, সাদিয়া আয়মান, মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীসহ অনেকেই হতবাক তাদের নাম দেখে। অনেকেই স্পষ্ট জানিয়েছে, তারা বিস্মিত সেই গ্রুপের সদস্যদের নাম দেখে এবং কারা তাদের নাম দিয়েছে সেটা দেখে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে নামগুলো দিয়েছেন কাছেরই কোনও সহকর্মী।
এই চ্যাটগ্রুপের বিভিন্ন আলাপে বার বার এসেছেন শামীমা তুষ্টি, উর্মিলা শ্রাবস্তী কর ও রোকেয়া প্রাচী। বিভিন্ন পরিকল্পনায় সাবেক এমপি ফেরদৌস এবং একসময়ের চিত্রনায়ক রিয়াজকে দেখা গেছে। জামশেদ শামীম নামের একজন তরুণ অভিনেতাকে অনেকের ব্যক্তিগত প্রোফাইলের স্ক্রিনশট নিতে দেখা গেছে।
সম্প্রতি ভারতীয় চ্যানেলে উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য রেখে সমালোচনার শিকার হওয়া রোকেয়া প্রাচী ১ আগস্ট ফার্মগেটে উপস্থিত শিল্পীদের ভিডিও থেকে সকলের স্ক্রিনশট নিয়ে পরিচয় বের করার চেষ্টায় দেখা গেছে। তাদের সহায়তায় ছিলেন একজন বিনোদন সাংবাদিক লিমন আহমেদ।
আরজে কিবরিয়াকে শিবির বলে পরিচয় করিয়ে দেন এই সাংবাদিক। পাশাপাশি পরিচালক মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর পোস্টকে ‘তালেবানি’ কায়দার বলেও আখ্যা দেন।
যে শিল্পীরা বিভিন্ন সময়ে বিপ্লবের মিছিলে বা আয়োজনে অংশ নিয়েছেন তাদের ’চিনে রাখার’ মত হুশিয়ারি এই গ্রুপ থেকে পাওয়া গেছে। অভিনেতা সাজু খাদেম, সোহানা সাবাও বেশ এক্টিভ ছিলেন এই গ্রুপে। পাশাপাশি তানভীন সুইটিও নানা ধরণের আলাপে অংশ নেন।
তবে সবচেয়ে বেশি সমালোচনায় পড়েন ‘গরম জল ঢেলে’ দেবার পরামর্শদাতা অরুণা বিশ্বাস। তিনি বিপ্লব চলাকালে বিটিভি পরিদর্শন, এফডিসিতে প্রেস কনফারেন্সসহ নানা ধরনের কাজে নেতৃত্ব দেন।
এই গ্রুপের নিজস্ব কাজ ছাড়াও তাদের বাইরে অন্যদের তালিকা করাকে ভালোভাবে নেয়নি শিল্পীরা। অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, রাজনৈতিক ফলাফল আজ ভিন্ন হলে তাদেরও হয়তো হয়রানির শিকার হতে হতো। নিজেদের সামাজিক মাধ্যমে টয়া, শাওন, মৌসুমী হামিদ, সায়েম সালেক, সাদিয়া আয়মান এবং ফারুকীসহ এমনটাই জানিয়েছেন।
তবে এই তালিকা কেন করা হচ্ছিলো? কী ছিল এক সহকর্মীর জন্য অন্য সহকর্মীর পরিকল্পনা- তা নিয়ে আলোচনা যেন শেষই হচ্ছে না।
অবশ্য আশফাক নিপুন লিখেছেন, ‘আলো আসবেই’ গ্রুপে আমার যত সহকর্মী ছিলেন সবাইকে বলতে চাই এখনো সময় আছে ‘আলোতে আসেন’। খুনী শাসক না, জনগণই সকল আলোর উৎস।
আপনাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। এটার SS নিয়েও ছড়িয়ে দেন যদি এখনো আপনাদের কোন গোপন গ্রুপ থাকে।’
লেখা: সৈয়দা ফারজানা জামান রুম্পা