সোমবার ৭ এপ্রিল ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফায় চলমান ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করছেন শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বর্জন করেছে ক্লাস-পরীক্ষা। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় জোরেশোরে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। দেশের বিনোদন অঙ্গনের তারকারাও এ বিষয়ে ছিলেন প্রতিবাদমুখর। সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ানও করেছেন প্রতিবাদ।
সংগীতশিল্পী সায়ান তার ফেসবুকে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। লিখেছেন কবিতাও। এক ফেসবুক পোস্টে সায়ান লিখেছেন, ‘পৃথিবীতে অনেক অন্যায্য রাষ্ট্র আছে। তারা অনেক বড়, অনেক সফল, কিন্তু খুব অন্যায্য, যুদ্ধবাজ ও যুদ্ধরাজ। এরা খুব সুন্দর করে মানবাধিকার আর গণতন্ত্রের মন্ত্র শেখায় দুনিয়াকে, কিন্তু রোজ রোজ জগৎকে অনেক লাশ উপহার দেয়। এরা কোনো দিন যুদ্ধ বন্ধ করবে না। এরা কোনো দিন যুদ্ধ বন্ধ করেনি’।
তিনি আরো লিখেছেন, ‘এদের অর্থনীতির দিকে তাকান। যুদ্ধ বন্ধ করলে এদের পেট চলবে না। যুদ্ধ বন্ধ মানে এদের সরকারের মানসিক ও অর্থনৈতিক হতাশা! তা ছাড়া এরা খুব ভালো কৃষিকাজ পারে না। এরা খুব ভালো বস্ত্র বানাতেও পারে না। তবে অস্ত্র বানাতে পারে। তাই এরা যুদ্ধকে জীবিত রাখবে সব সময়। এই দেশগুলোকে রাষ্ট্রশক্তি হিসেবে ঘেন্না জানাই। ধিক্কার জানাই। আর কিছু করার ক্ষমতা না থাকলেও ঘেন্না প্রকাশটাও শক্তি হিসেবে বা কর্ম হিসেবে কম কিছু না। রাষ্ট্র হিসেবে আমরা যদি কোনো দিন আরেকটু বড় হই, আমরা যেন হলে ভুটানের মতো হই, আমরা যেন মার্কিন দেশ বা ইসরায়েলের মতো হতে না চাই কোনো দিন। আমরা যেন অন্যায্যতাকে ঘেন্না করতে শিখি।’
https://www.facebook.com/Officialfarzanawahidshayan/videos/1202268558084088
জালিম ও ধনী দেশ এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্র নিয়ে নিয়ে সায়ান লিখেছেন, ‘আমরা যেন কোনো দিন অস্ত্রে শক্তিশালী কোনো দেশ না হই। তার চেয়ে গরিব আর ছোট হয়ে থাকা ভালো। অস্ত্রে বড় হওয়া মানেই দুনিয়ার জন্য জালিম হয়ে যাওয়া। আমরা এসব জুলুমকারীর ভিক্ষা নিই এখনো, তবে ঠিক জালিম হয়ে উঠিনি রাষ্ট্র হিসেবে। তবে সেটা আমাদের দরদের প্রকাশ না, কুসামর্থ্যের অভাব। রাষ্ট্র হিসেবে আমরা এখনো এসব জঘন্য ধনী দেশের খয়রাতের টাকা নেই। এই লজ্জা আমাদের স্বীকার করা উচিত। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত, ধীরে ধীরে আমাদের অর্থনীতিকে স্বনির্ভর করা। আর নিজেদের নিয়ত আর স্বপ্নকে পরিষ্কার রাখা। আমরা যেন কোনো দিন এদের মতো হতে না চাই। অন্ধের মতো কাউকে অনুকরণ না করে আমরা যেন নিজেদের মাটিতে মনোযোগ দিই। আমাদের অস্তিত্বে যেন মায়াদয়ার ছাপ থাকে। সফল ধনী যুদ্ধবাজ রাষ্ট্র হওয়ার চেয়ে ছোট গরিব “কিছুতেই যুদ্ধ বেচে খাব না”, এমন রাষ্ট্র হওয়ার স্বপ্ন যেন আমরা দেখি—এটাই আমার ফিলিস্তিনি হৃদয়ের কামনা।’