আজ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮৪তম মৃত্যুবার্ষিকী
আজ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮৪তম মৃত্যুবার্ষিকী । বিশ্বকবি, নোবেলজয়ী এই মহাপুরুষের সাহিত্য, সংগীত ও দর্শন আজও আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। তাঁর ভাবনা, সৃজনশীলতা ও মানবতাবাদ আজও সমান প্রাসঙ্গিক ও পথপ্রদর্শক। বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের অন্যতম প্রধান এই কালপুরুষের ৮৪তম প্রয়াণবার্ষিকী। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শ্রাবণ কলকাতার জোড়াসাঁকোর পৈতৃক বাড়িতে তার দেহাবসান হয়েছিল।
মাত্র আট বছর বয়সে লেখালেখির হাতেখড়ি হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন লিখে গেছেন বিচিত্র সব বিষয় নিয়ে। তিনি বাংলা কবিতা, উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, নাটক, ভ্রমণ, চিঠিপত্র, শিশুসাহিত্যসহ অসংখ্য শাখায় বিচরণ করে গেছেন, লিখেছেন বিপুল। গীত রচনা ও সুরস্রষ্টা হিসেবে তিনি নিজেই নিজের তুলনা। চিত্রকলা নতুন মাত্রা লাভ করেছে তার প্রতিভায়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিক্ষাবিস্তার, সাংগঠনিক কর্ম ও সমাজকল্যাণমূলক কাজেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি কৃষক ও পল্লি উন্নয়নের জন্য চালু করেছিলেন কৃষিঋণব্যবস্থা। নতুন ধরনের শিক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন বিশ্বভারতী। জালিয়ানওয়ালাবাগে দেশবাসীর ওপর ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ সেনাদের হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে ত্যাগ করেছিলেন বৃটিশ ‘নাইটহুড’ খেতাব।
দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সারদা সুন্দরী দেবী দম্পতির ১৫ সন্তানের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন ১৪তম। কলকাতার বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারের জোড়াসাঁকোর বাড়িতে তাঁর জন্ম ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ। ঠাকুর পরিবার তখন ছিল মর্যাদা ও সংস্কৃতিচর্চায় বিশেষ খ্যাতির অধিকারী। সেই পরিবেশ শৈশবেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনকে মুক্ত করে দিয়েছিল। পরবর্তীকালে বিশেষত বাংলার পদ্মা, মেঘনা, যমুনায় নৌকায় ভ্রমণের মধ্য দিয়ে তিনি প্রকৃতির আসল রূপ-আনন্দ, ও প্রত্যক্ষ করেছিলেন সাধারণ মানুষের জীবন ও যাত্রা। যার প্রভাব তার সাহিত্যে রয়েছে বিপুলভাবে।
নোবেল পুরস্কার
১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্যে পান নোবেল পুরস্কার যা বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বসাহিত্যের দরবারে মর্যাদার আসনে নিয়ে যায়। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতও নেয়া হয়েছে তার বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে লেখা থেকে।
বিশ্বকবির প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ২২ শে শ্রাবণ সন্ধ্যা সাতটায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট মিলনায়তনে রয়েছে ছায়ানটের অনুষ্ঠান। আগামীকাল ৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমির আয়োজনে হবে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিকেল চারটায় বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনারকক্ষে শুরু হবে এই অনুষ্ঠান।