আজ, ১৭ এপ্রিল বাংলা সিনেমার সোনালি যুগের অন্যতম অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীর প্রয়াণ দিবস। ২০২১ সালের এই দিনে কিডনির জটিলতায় ও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
‘মিষ্টি মেয়ে’ খ্যাত এই অভিনেত্রী ১৯৫০ সালে চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার আগের নাম ছিল মিনা পাল। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গি বাজারে। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে আবির্ভাব তার। এরপর থেকে ধীরে ধীরে টেলিভিশন এবং সিনেমা জগতে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি।
পর্যায়ক্রমে ১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের পরিচালনায় ‘সুতরাং’ সিনেমার মাধ্যমে অভিনয় জীবনের শুরু করেন কবরী। এরপর থেকে প্রায় শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
‘রংবাজ’ সিনেমায় রাজ্জাকের সাথে জুটি বেধে অভিনয় করেন কবরী প্রতিটি দৃশ্যকেই যেন জীবন্ত করে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতেন এই জুটি। রাজ্জাক-কবরীর রসায়নে মুদ্ধ হয়নি এমন হয়তো কেউ নেই।
দীর্ঘ তিন দশকের ক্যারিয়ারে ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘ময়নামতি’, ‘সুজন সখী’, ‘স্মৃতিটুকু থাক’ ,‘সারেং বউ , ‘সাত ভাই চম্পা’ , লালন ফকির’ , ‘দেবদাস’ কাচ কাঁটা হীরা’ ‘জলছবি’ , ‘পারুলের সংসার সহ তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। ভারতের কিংবদন্তি নির্মাতা ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায়ও অভিনয় করেন তিনি। এছাড়া জহির রায়হানের নির্মিত উর্দু ভাষার সিনেমা ‘বাহানা’ তেও তার অভিনয় প্রশংসিত হয়।
অভিনেত্রী কবরী একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কলকাতায় গিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। সেখানে বিভিন্ন সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন; সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছেন।
২০০৫-২০০৬ সালে ‘আয়না’ নামে একটি চলচ্চিত্রের পরিচালনার মধ্য দিয়ে নির্মাণে অভিষেক ঘটে কবরীর। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সরকারি অনুদানে ‘এই তুমি সেই তুমি’ নামে দ্বিতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণ হাত দিয়েছেন তিনি। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭-তে প্রকাশিত হয়েছে তার আত্মজীবনী মূলক বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’।
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন কবরী। ১৯৭৮ সালে ‘সারেং বউ’ সিনেমায় অনবদ্য অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন কবরী।