হিমালয় হয়ে দুঃখ এসেছে বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে। কারণ, ‘ফেরানো গেল না’ আশি ও নব্বইয়ের দশকের শ্রোতাপ্রিয় সংগীতশিল্পী, ‘চাইম’ ব্যান্ডের ভোকালিস্ট খালিদ সাইফুল্লাহকে। ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন তিনি। গায়কের অকাল মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন তারকাদের অনেকেই স্মৃতিচারণ করছেন তাকে নিয়ে। এই তালিকায় আছেন ‘পেন্টাগন’ ব্যান্ডের ভোকালিস্ট এবং প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী সুমন।
১৯ মার্চ সকালে সুমন তার অফিশিয়াল ফেসবুক হ্যান্ডেল থেকে পোস্ট করেছেন একটি স্ট্যাটাস। যেখানে তিনি তার প্রিয় ‘খালিদ ভাই’-কে নিয়ে ১৯৮৮ কিংবা ১৯৮৯ সালের একটি স্মৃতি শেয়ার করেছেন তার অনুরাগীদের সাথে।
সুমন তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘সারা বাংলাদেশ দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছি চাইমকে নিয়ে, এমনই এক রমজান মাসে আমাদের প্রচন্ড প্র্যাকটিস চলছে বাবুভাইয়ের সেই নাখালপাড়া ড্রাম ফ্যাক্টরির কাছের বাড়িতে, কারণ ঈদের পরই শো’র চাপ। তো বিকেলে আসরের আজান দিলে আমরা ব্রেক নিয়ে প্যাডের সামনে একটা বারান্দায় বসে চা খাচ্ছি আর গল্প -গুজব করছি। আজান একটার পর একটা হচ্ছে। আজান যখন শেষ, তখন হঠাৎ একটা অন্যরকম আজান শুরু হলো যেটা শুনে আমরা স্তব্ধ হয়ে গেলাম। মনে হলো যেন অন্য কোন ডাইমেনশন থেকে ভেসে আসছে।’
স্ট্যাটাসে এরপরই সুমন উল্লেখ করেন খালিদের আজান দেয়ার কথা। তিনি লেখেন, ‘মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে আজানটা শুনতে শুনতে সবাই প্যাডে ঢুকে দেখি স্বয়ং খালিদ ভাই আমাদের সেই মনট্র্যাবো স্পিকারে রিভার্ব দিয়ে আজানটা দিচ্ছে।’
গায়ক যোগ করেন, ‘আমার জীবনে শোনা শ্রেষ্ঠ আজান আমি শুনেছি ঐদিন। অপুর্ব সুরেলা, নির্ভুল উচ্চারণে খালিদ ভাই যখন শেষ করলেন, আমি হতবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম। আর খালিদ ভাই তার সেই মন মাতানো হাসি দিয়ে বললেন ‘আমি ছোটবেলায় গোপালগঞ্জে আজান দিয়ে গোল্ড মেডেল পেয়েছিলাম’!’
খালিদের কণ্ঠে আজানের এমন অজানা স্মৃতি জানতে পেরে সুমনের স্ট্যাটাসের মন্তব্যের ঘরে অনেকেই ইতিবাচক মন্তব্য করছেন খালিদ স্মরণে। গানের মাধ্যমে তো বটেই, এমন সব স্মৃতিচারণে গায়ক খালিদ সকলের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
প্রসঙ্গত, কন্ঠশিল্পী খালিদের মরদেহ ইতিমধ্যেই পৌঁছে গেছে গোপালগঞ্জে। জোহরের পর সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে তাকে।