সালমান শাহ’র ২৭ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে নানা আয়োজনের মাধ্যমে তাকে স্মরণ করেছে ভক্ত,আত্মীয়স্বজন ও সহকর্মীরা। ৬ সেপ্টেম্বর অভিনেতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে তাকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
সালমান শাহের মামা আলমগীর কুমকুম সিলেটে মৃত্যুবার্ষিকীর জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছেন। তবে অভিনেতার মা নীলা চৌধুরী লন্ডনে থাকায় তার জন্য দেশে কিছু না করতে পারলেও সেখানে ছেলের আত্মার শান্তির জন্য মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছেন।
অভিনেতার মৃত্যুর পর থেকে দীর্ঘ ২৭ বছর নায়কের মৃত্যুবার্ষিকীতে তার আত্মার মাগফিরাতের জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে আসছেন সালমান শাহ স্মৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ রানা নকীব। প্রথমদিকে চাঁদপুরে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করলেও ২০০২ থেকে ঢাকাতেই মিলাদের আয়োজন করছেন তিনি। ৬ সেপ্টেম্বর বাদ আসর মোহাম্মদপুর শহীদ পার্ক কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অভিনেতার জন্য মিলাদের আয়োজন করেন নকীব।
শুধু তার আত্মীয়-স্বজন ও ভক্তরাই তার জন্য দোয়ার আয়োজন করেননি। তার সহকর্মীরাও তাকে নিয়ে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছেন । ৬ সেপ্টেম্বর আসরের নামাজের পর অভিনেতার জন্য মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। খবরটি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন শিল্পী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক সায়মন সাদিক। দিনটিতে দোয়া ছাড়াও সিনিয়র আর্টিস্টরা তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন ।
তাকে স্মরণের জন্য শুধু যে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল তা কিন্তু নয়,৬ সেপ্টেম্বর নায়কের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার জীবনের উপর ভিত্তি করে নির্মিত তথ্যছিত্র দেখানোরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
নায়ককে স্মরণ করার জন্য ‘স্মৃতিতে সালমান শাহ’ নামক একটি অনুশন্ধানীমূলক তথ্যচিত্র নিয়ে হাজির হয়েছিল বৈশাখী টেলিভিশন। ৬ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিটে প্রচারিত ডকুমেন্টারিতে অভিনেতাকে নিয়ে সালমান শাহ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, মা নীলা চৌধুরী, মামা আলমগীর কুমকুম, সালমান শাহ’র স্ত্রী সামিরা, পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান, ছটকু আহমেদ, নায়ক ফেরদৌস, ডন, ঋতুপর্ণা, ভাবনা, নীরব, সাকিব সুলেরী, দুলাল খান, অভিনেতার বাসার মালিক জাকির , এবং আত্মহত্যার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমাদানকারী পিবিআই প্রধান বনোজ কুমার মজুমদারের বক্তব্য দেখতে পেয়েছিলেন দর্শক।
১৯৭১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় কমর উদ্দিন চৌধুরী ও নীলা চৌধুরীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন যিনি পরবর্তীতে সালমান শাহ হিসেবে পরিচিতি পান সাধারণ মানুষের কাছে। তার নানা অভিনয়শিল্পী হওয়ার কারণে অভিনয়ের দিকে ছোটবেলা থেকেই আগ্রহ দেখান তিনি। ছায়ানট থেকে গানের উপর তালিমও নিয়েছিলেন এ নায়ক। ১৯৮৫ সালে বিটিভিতে প্রচারিত ‘আকাশ ছোঁয়া’ নাটকের মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেন সালমান শাহ। পরবর্তীতে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে ১৯৯৩ সালে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন সালমান শাহ।নায়ক ‘মন মানে মানে’, ‘কে অপরাধী’, ‘তুমি শুধু তুমি’, ‘প্রেমের বাজি’সহ কয়েকটি ছবির কাজ অসমাপ্ত রেখে ৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে যেই শুন্যতা বাংলা সিনেমায় তৈরি হয়েছে এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গন।