বিশ্বের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, বার্লিন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ও নিউইয়র্ক অ্যানিমেশন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সম্প্রতি প্রদর্শিত হয়েছে নির্মাতা শারমিন আহমেদের ‘দ্য জায়ান্ট বার্ড’।
১৯৬৩ সালে প্রকাশিত লেখক আবু ইসহাকের বিখ্যাত গল্প ‘মহাপতঙ্গ’ অবলম্বনে নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি নিয়ে গণমাধ্যমকে শারমিন আহমেদ বলেন, ‘নিজের প্রথম অ্যানিমেটেড স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হিসেবে বেঁছে নেই আবু ইসহাকের বিখ্যাত গল্প ‘মহাপতঙ্গ’। অনেক দিন ধরেই গল্পটা নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা ছিল। কাহিনিটা অ্যানিমেশনের জন্য একদম যথার্থ। মানুষের কদর্য রূপ ফুটিয়ে তুলতে পাখির চোখ দিয়ে দেখানোর চেয়ে ভালো উপায় আর কী হতে পারে! আর কী আশ্চর্য ব্যাপার, ১৯৬৩ সালে লেখা গল্প এখনো সমান প্রাসঙ্গিক! ব্যাপারটা ভীষণ দুঃখজনকও বটে।’
অবশ্য গল্পটা হুবহু অনুসরণ করিনি নির্মাতা। মূল বার্তা ঠিক রেখে নিজের মত করে সহজ একটা রূপকাশ্রয়ী কাহিনি নির্মাণ করার চেষ্টা করেছেন তিনি। অ্যানিমেশনের পুরো কাজটা একা হাতে সেরেছেন শারমিন আহমেদ। সেই বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘চরিত্রগুলো ফ্রেম বাই ফ্রেম ডিজিটালি আঁকি। ব্যাকগ্রাউন্ডের একটা বেসিক থ্রিডি মডেল বানিয়ে তার ভিত্তিতে সব দৃশ্যের ব্যাকগ্রাউন্ড ডিজিটালি পেইন্ট করেছি।’
গত ৬ অক্টোবর ‘দ্য জায়ান্ট বার্ড’ দেখানো হয়েছে ফিমেল ফিল্ম ফেস্টিভাল বার্লিনে, ‘শিফটিং রিয়ালিটি’ বিভাগে। পুরো উৎসবে এটাই ছিল একমাত্র অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র। বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে সবার। মনোনয়ন পায় বেস্ট সাউন্ড ডিজাইন/মিউজিক বিভাগে। শুধু এই উৎসবেই নয়, চলচ্চিত্রটি গিয়েছিল নিউইয়র্ক অ্যানিমেশন ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডের ফাইনাল রাউন্ডেও।
উল্লেখ্য, ছোটবেলায় যখনই কোনো গল্পের বইয়ের প্রতি ভালোবাসা থেকে এই পথচলার শুরু শারমিন আহমেদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগে ভর্তির পর বিভিন্ন ভাষার, নানান ঘরানার, বিভিন্ন দেশের সিনেমা দেখতে দেখতে সিনেমা বানানোর ইচ্ছাটাও বেশ পাকাপোক্তভাবে মাথায় চেপে বসে তার।