Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪

চলচ্চিত্র উৎসবের আদ্যোপান্ত

দ্বাবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের একটি খন্ডচিত্র । ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা শহর জমে উঠেছিল নয়দিনব্যাপী চলচ্চিত্র উৎসব। একদিকে শীতের শৈত্যপ্রবাহ, অন্যদিকে শিল্পের উষ্ণতা- সব মিলিয়ে জমজমাট ছিল মাঘের কয়েকটা দিন।

রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত দ্বাবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এবারের আসরে ৭৫টি দেশের ২৫২টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়েছে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে। এরমধ্যে পূর্ণদৈর্ঘ্য ১২৯টি, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন চলচ্চিত্র ১২৩টি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ছিল ৭১টি।

এর মাঝে ৩৪ টি চলচ্চিত্রই বাংলাদেশী চলচ্চিত্র শিক্ষার্থীদের নির্মিত। যার মাঝে উল্যেখযোগ্য রয়েছে, আসিফ রহমান সৈকতের ‘বনফুল’, সাদমান শাহরিয়ারের ‘সিটি ডায়েরি’, রাগীব শাহরিয়ার সৈকতের ‘মধুর মাধবী’, সৈয়দা নিগার বানুর ‘নোনা পানি’, আফিফা আক্তারের ‘কালার্স অফ সোল’, ইকবাল হাসান খানের ‘বাড়ি ফিরে বুদ্ধা’, ফুয়াদুজ্জামান ফুয়াদের ‘স্যালভেশন অফ ট্রি’ ও ‘ডেথ এন্ড ল্যান্ডস্কেপ’- সহ আরো অনেক।

এবারের চলচ্চিত্র উৎসবে আশার আলো জ্বেলে তরুণরা প্রমাণ করেছে- তারাই হয়তো আগামঈর সিনেমার ফেরিওয়ালা।

এছাড়াও সদ্য মুক্তি পাওয়া বা ইতিমধ্যে পুরস্কার পাওয়া একাধিক বাংলাদেশি সিনেমা দেখানো হয়েছে এই উৎসবে। প্রদর্শিত হয়েছে রাইসুল ইসলাম অনিকের ‘ইতি চিত্রা’, লীসা গাজীর ‘বাড়ির নাম শাহানা’, গোলাম রাব্বানির ‘ছুরত’।

রাইসুল ইসলাম অনিকের সিনেমা বানানোর হাতেখড়ি ‘ইতি চিত্রা‘র মাধ্যমে। নব্বই দশকের চিঠির প্রেম বা প্রেমের চিঠিই যেন এই সিনেমার মূল আকর্ষণ। ইভন এতে অভিনয় করেছেন মূল চরিত্রের একটিতে। তার চোখ দিয়ে রোমান্টিসিজমের ভিন্ন রূপ দেখতে যেন পাচ্ছেন দেশীয় দর্শকরা। সিনেমা দেখে বের হয়ে অনেকেই বলেছেন – পাওয়া গেছে অন্যরকম রোমান্টিক হিরো। এদিকে ইভনও জানান, তিনি দর্শকদের সাড়া দেখে আশাবাদী। এমন একটি আয়োজনে তার অভিনীত চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে এটা তাকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দিচ্ছে।

লীসা গাজীর ‘বাড়ির নাম শাহানা’ মানেই যেন নারী শক্তির এটি পরোক্ষ উপস্থিতি তা তিনি জানালেন নিজেই। কারণ এর মূল শিল্পীরা নারীতো বটেই, সঙ্গীত পরিচালকও নারীই। ক্ষ-খ্যাত সোহিনী আলম সঙ্গীত করেছেন ‘বাড়ির নাম শাহানা’ চলচ্চিত্রটির জন্য। ‘বাড়ির নাম শাহানা’ সত্য কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত। বিবাহ বিচ্ছেদকারী এক নারীর গল্প এটি, যে নিজের মতো করে বাঁচার স্বপ্ন দেখে। চলচ্চিত্রটি নব্বইয়ের দশকের বাংলাদেশের এক রক্ষণশীল মফস্বলের আবহের বিপরীতে দৃঢ়চেতা এক নারীর বেঁচে থাকার পথ অন্বেষণ করে।

জিও মামি মুম্বাই চলচ্চিত্র উৎসবে ‘জেন্ডার সেনসিটিভিটি অ্যাওয়ার্ড’সহ বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করেছে সিনেমাটি। লীসা গাজী ও আনান সিদ্দীকার চিত্রনাট্যে সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে কমলা কালেকটিভ ও গুপী বাঘা প্রডাকশন লিমিটেডের যৌথ প্রযোজনায়।

এতে অভিনয় করেছেন আনান সিদ্দীকা, লুৎফর রহমান জর্জ, ইরেশ যাকের, কাজী রুমা, নাইলা আজাদ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়।

নীরিক্ষাধর্মী আয়োজনে কোনো সংলাপ নেই গোলাম রাব্বানির ‘ছুরত’ সিনেমায়। আছে দুটি গান ও আবহ সংগীত রয়েছে। গান দুটি গেয়েছেন শম্পা দাস ও রাশেদ সাগর। এই উৎসবে ‘স্পিরিচুয়াল চলচ্চিত্র বিভাগ’ এ প্রদর্শীত হয় গোলাম রাব্বানীর ছোট ছবি ‘ছুরত’। ১৩ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ছবি এই ’ছুরত’। এর আগে ছবিটি প্রদর্শিত হয়েছিল নেদারল্যান্ডস উৎসব, ম্যানহাটান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, লন্ডনের লিট উৎসব, চীনের মাইক্রো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। গোলাম রাব্বানি বলেন, মানুষের প্রতিদিনের বেলায় বেলায় বদলে যাওয়া রূপই এই সিনেমার মূল চিত্রনাট্য। দর্শকদের উপস্থিতি তাকে উৎসাহ যুগিয়েছে।

২৫ ডিসেম্বর ইভান মনোয়ারের ’প্যাসেঞ্জার’ সিনেমাটির প্রিমিয়ার হয়। একটি সিএনজি ও তার প্যাসেঞ্জার নিয়েই সিনেমাটির গল্প। এতে অভিনয় করেছেন মীর রাব্বি, আনোয়ার ও সাদিয়া মাহি। পেন্টাগন ফিল্মসের ব্যানারে এটি প্রযোজনা করেছেন অন্তু করিম। এর অন্যতম অভিনয় শিল্পী মীর রাব্বি জানান, নানা দেশের ফেস্টিভ্যাল ঘুরলেও নিজ দেশে নিজের সিনেমা দেখার আনন্দেই অন্যরকম। সিনেমা শেষে হলভর্তি দর্শক দাঁড়িয়ে শুভেচ্ছা জানান উপস্থিত কলাকুশলিদের।

২৬ জানুয়ারি হয় নোনাপানি চলচ্চিত্রের প্রিমিয়ার শো। প্রিমিয়ার সময়ে দর্শকের উপস্থিতি ছিল সাড়াজাগানো।জয়িতা মহলানবীশ অভিনীত চলচ্চিত্রটি আগ্রহ নিয়ে দেখেছেন উপস্থিত দর্শক। ‘নোনা পানি’ চলচ্চিত্রের পরিচালক সৈয়দা নিগার বানু জানান , ‘নোনা পানি টিমের জন্য এটা খুবই আনন্দের যে, ঢাকা আন্তজার্তিক চলচ্চিত্র উৎসব মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রটি ‘বাংলাদেশ সিনেমা’-র যাত্রা শুরু করল। আমরা আশা করছি, বাংলাদেশের সুন্দরবন সংলগ্ন নোনা পানি দেশের সাধারণ মানুষের না-বলা গল্পটি বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দেবে।’

বাংলাদেশি সিনেমার আনন্দমাখা যাত্রায় এই উৎসবের পর্দা নামে বটে, চিত্রালীও আনন্দের সাথে এই যাত্রার পথিক আগে থেকেই। ইতিমধ্যে জয়িতা মহলানবীশ, মীর রাব্বি, ইভনসহ উৎসবে প্রদীপের আলোয় আসা অনেকেই এসেছেন চিত্রালীর বিভিন্ন আয়োজনে। তাই চিত্রালীর আজকের ফিচারটিও তাদের নিয়েই।

Share this article
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Read next

৩৬-২৪-৩৬: বিনোদন নাকি বাস্তবতার গল্প?

তথাকথিত সমাজে বর্তমানে একটা মেয়ে সুন্দর হয়ে ওঠে তার শরীরের গঠনে। আর নারীর শরীরের সেই পার্ফেক্ট গঠনের নির্দিষ্ট…
0
Share