৭ জুলাই, ২০২৪। আজ থেকে ঠিক তিন বছর আগে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমার। ২০২১ সালের এই জুলাই মাসে মুম্বাইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সেই বছরের ৬ জুলাই, অভিনেতার স্ত্রী সায়রা বানু ভারতীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন এখন আগের চেয়ে ভালো আছেন অভিনেতা দিলীপ। তাকে বাড়ি নেয়ার অপেক্ষায় ছিলেন স্ত্রী সায়রা।
কিন্তু তা আর হয়নি। দীর্ঘ দিন বার্ধক্যজনিত সমস্যার সাথে লড়াই করে ২০২১ সালের ৭ জুলাই সকাল ৭ টায় অস্থায়ী ভাবে নিজের বাসায় নয়, বরং মানব জাতির চিরস্থায়ী ঠিকানায় পাড়ি জমান ‘মুভি মোগল’ খ্যাত কিংবদন্তি দিলীপ কুমার।
বলিউড সিনেমা জগতে দিলীপ কুমার হিসেবে পরিচিত হলেও তার ভালো নাম ইউসুফ খান। অভিনেতা হওয়ার কোনো প্ল্যানই ছিল না তার। পেশাদার ফুটবল কিংবা ক্রিকেট খেলোয়াড় হবার ইচ্ছা থাকলেও নিজের ছোট আট ভাইবোনের ভরণপোষণে বাবার সহায়তা করতে গিয়ে খেলাটা আর হয়ে ওঠেনি ইউসুফের।
কাজের খোজে গিয়েছিলেন বোম্বে টকিজ স্টুডিওতে। সেখানে অভিনেত্রী দেবিকা রানী ও তার স্বামী হিমাংশু রাই তাকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। নিজের জীবনদশায় যুদ্ধের তথ্যচিত্র ছাড়া অন্য কোনো সিনেমা না দেখা ইউসুফ, অভিনয় করার কথা দূর দূর পর্যন্ত কল্পনা করেননি।
তবে অভিনয় করলে কিছু টাকা পাবে, এই আশায় হ্যাঁ বলে দেন তিনি। তবে সময়টা তখন ১৯৪৪ সাল! ইতিমধ্যে ভারতীয়দের মধ্যে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা দানা বেঁধেছে। নায়ক ইউসুফ খান তৎকালীন বোম্বের যোগ্য নয় তাই কিছুটা চাকরি ভেবেই মাত্র ১২৫০ রুপির জন্য, নিজের নাম বদলে ১৯৪৪ সালে ‘জোয়ার ভাটা’ সিনেমায় দিলিপ কুমার হয়ে অভিষেক হয় মধ্যবিত্ত পরিবারের ইউসুফ খানের।
নিজের ছয় দশকের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন ‘মুঘল-ই-আজম’, ‘আন্দাজ’, ‘দেবদাস’, ‘কোহিনূর’-এর মত ৬৩টি সিনেমা। পেয়েছেন পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণের মত পুরস্কারের সম্মান! অভিনেতা হিসেবে সর্বোচ্চসংখ্যক পুরস্কার বিজয়ী হওয়ার গিনেজ রেকর্ডও রয়েছে অভিনেতা দিলীপ কুমারের।
লেখা: নূফসাত নাদ্বরুন