তামিলাগা ভেটরি কাজাগাম
অতীত জীবনে থালাপতি বিজয় এত বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি কখনোই হয়নি। অভিনয় থেকে রাজনীতিতে পা রাখার পর নিজের রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেটরি কাজাগাম (টিভিকে) গঠন করেছেন তিনি। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে তামিলনাড়ুতে দলটির একাধিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে প্রতি সমাবেশেই সমর্থকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
তামিলনাড়ুর কারুর জেলায় শনিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত বিজয়ের নির্বাচনী সমাবেশেও সেই ব্যতিক্রম ছিল না। তবে শেষ মুহূর্তে ঘটে যাওয়া দুঃখজনক পদদলনের ঘটনায় ৩৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৭ জন নারী ও ৯ জন শিশু রয়েছে। বর্তমানে ১৫০ জনেরও বেশি আহত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই মিছিল থেকে ঘটে যাওয়া এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা পুরো ভারতবাসীকে স্তব্ধ করেছে।
গভীর বেদনায় আচ্ছন্ন থালাপতি বিজয়
বিজয় এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। নিহতদের পরিবার ও আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। গতকাল তামিলাগা ভেটরি কাজাগামের এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি লিখেছেন, আমার মন গভীর বেদনায় আচ্ছন্ন। প্রিয়জনদের হারানোর শোকে হৃদয়ে যে যন্ত্রণা হচ্ছে, তা প্রকাশের ভাষা আমার নেই। এটি আমাদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তবুও আপনাদের পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে ঘোষণা করছি, যারা চলে গেছেন, তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ লাখ রুপি, আর যারা আহত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদের জন্য ২ লাখ রুপি করে দেওয়া হবে। আমি জানি, এই অর্থ যথেষ্ট নয়। তবুও এই মুহূর্তে আমার দায়িত্ব হলো আমার প্রিয়জনদের পাশে দাঁড়ানো।’
দুর্ঘটনার পর তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিনও শোক প্রকাশ করেছেন। নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি করে এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য এক লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ডিএমকে-নেতৃত্বাধীন তামিলনাড়ু সরকার বিজয়ের দলকে নিয়ে কঠোর সমালোচনা করছে। অভিযোগ উঠেছে, সমাবেশে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না, এবং আয়োজকরা পর্যাপ্ত পানি ও খাদ্যের ব্যবস্থা করেননি। যার কারণে গরমে অনেকে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন।
থালাপতি বিজয় ও ৩০ হাজার মানুষ
জানা গেছে, বিজয়ের ওই সমাবেশে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন। নামাক্কালের সমাবেশের পর কারুরের মঞ্চে যোগ দেওয়ার কথা ছিল বিজয়ের, কিন্তু সেখানে পৌঁছাতে সাত ঘণ্টার বেশি বিলম্ব হয়। সেই সময়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বিজয়ের বক্তব্য শুরু হলে হুড়োহুড়ি শুরু হয়।
অতিরিক্ত ভিড় ও গরমে অনেকেই শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকেন। পরিস্থিতি বুঝে বিজয় বক্তব্য বন্ধ করেন। তার প্রচারণার জন্য তৈরি বিশেষ বাস থেকে পানির বোতল ছুড়ে দেওয়া হয়। সমর্থকদের একাংশ বাসের দিকে এগিয়ে গিয়ে পড়ে গেলে সেই স্থান থেকে পদদলনের ঘটনা ঘটে।