যৌন ব্যবসায় প্ররোচিত করার অভিযোগে
সংগীত জগতে সফল ক্যারিয়ার থাকা সত্ত্বেও ভয়ংকর অপরাধের দায় এড়াতে পারলেন না মার্কিন র্যাপার ও ব্যবসায়ী শন ‘ডিডি’ কম্বস। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি আদালত তাকে দুই নারীকে যৌন ব্যবসায় প্ররোচিত করার অভিযোগে ৫০ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। শুক্রবার বিচারক অরুণ সুব্রামানিয়ান এই রায় ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এর মধ্যে এক বছর ইতিমধ্যে কারাভোগ করায় কম্বসকে বাকি তিন বছরের মতো সময় জেলে থাকতে হবে। আদালতে বিচারক বলেন, “কম্বস সংগীত দুনিয়ায় প্রশংসনীয় অবদান রেখেছেন, কিন্তু তার সহিংসতা উপেক্ষা করার মতো নয়।”
শন ডিডি কম্বস ও স্ত্রী নিগ্রহ
রায় ঘোষণার সময় আদালতে একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়, যেখানে ২০১৬ সালে সাবেক প্রেমিকা ক্যাসান্দ্রা ‘ক্যাসি’ ভেনচুরাকে নৃশংসভাবে মারধর করতে দেখা যায় কম্বসকে। বিচারক বলেন,
“এই অপরাধ দুই নারীর জীবনকে চিরদিনের জন্য আঘাত করেছে। হয়তো ক্ষত মুছে যাবে না, কিন্তু ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া সম্ভব।”
রায় ঘোষণার আগে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিজের অপরাধ স্বীকার করেন কম্বস। তিনি বলেন, “আমার কাজ ছিল ঘৃণ্য ও লজ্জাজনক। নেশায় ডুবে গিয়েছিলাম, সাহায্য নেওয়া উচিত ছিল কিন্তু নিইনি। মা আমাকে ভালো মানুষ হতে শিখিয়েছিলেন, তবু সেই শিক্ষা ভুলেছিলাম।”
তিনি আরও যোগ করেন, “অহংকারে আমি অন্ধ হয়ে পড়েছিলাম। আমার সন্তানদের আরও ভালো এক বাবা প্রাপ্য ছিল।”
রায়ের অংশ হিসেবে আদালত তাকে ৫ লাখ ডলার জরিমানা এবং ৫ বছরের পর্যবেক্ষণকালীন মুক্তির নির্দেশও দিয়েছে। বিচারক ভুক্তভোগীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা সাহসী। সহিংসতা কখনো গোপনে চাপা পড়ে থাকা উচিত নয়।”
মাদকাসক্ত শন ডিডি কম্বস
বিবাদী পক্ষের আইনজীবী দাবি করেন, কম্বস মানসিক ট্রমা ও মাদকাসক্তির কারণে বিপর্যস্ত ছিলেন। জেলে থাকাকালে তিনি অন্য বন্দিদের ব্যবসা শেখানোর ক্লাস নিয়েছেন, যা তার পরিবর্তনের ইঙ্গিত। তবে কৌঁসুলিদের বক্তব্য, তিনি এখনো নিজের অপরাধ পুরোপুরি স্বীকার করেননি।
২০২৪ সালে শন কম্বসের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন, মানবপাচার ও সহিংসতার একাধিক মামলা হয়। কয়েকটি অভিযোগ থেকে খালাস পেলেও নারীদের যৌনকর্মে প্ররোচিত করার মামলায় শেষ পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।
ভুক্তভোগী ক্যাসি ভেনচুরা আদালতে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে বলেন, “এই রায় আমার জীবনের ক্ষত সারাবে না, তবে অন্তত ন্যায়বিচারের কিছুটা স্বাদ পেয়েছি।”