সামান্থা রুথ প্রভু
দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু সম্প্রতি একটি ভারতীয় বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের ব্যক্তিগত জীবন, বিচ্ছেদ ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অকপটে কথা বলেছেন। গ্ল্যামার জগতের ঝলমলে মুখোশের আড়ালে কীভাবে তিনি এক কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে গেছেন, সেই গল্পই উঠে এসেছে তার মুখে।
অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া আত্মজ্ঞান
সামান্থা জানান, জীবনের নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়েই তিনি নিজের সম্পর্কে নতুন করে উপলব্ধি পেয়েছেন। তার ভাষায়,
“সব কিছু গোছানো নয়, জীবনে এখনো অনেক কিছু গুলিয়ে আছে। কিন্তু অন্তত আমি সে বিষয়ে খোলামেলা কথা বলতে পারি। আমি নিখুঁত নই; ভুল করতে পারি, হোঁচট খেতে পারি, কিন্তু আমি চেষ্টা করছি আরও ভালো হতে।”
তিনি বলেন, তার বাস্তবতা নিয়ে বোঝাপড়াটা এসেছে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই “আমার জীবনের টানাপড়েন, বিচ্ছেদ, অসুস্থতা, সবই খোলা বইয়ের মতো ছিল। এজন্য আমাকে ট্রল হতে হয়েছে, সমালোচনাও সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, সমস্যা কখনো দুর্বলতা নয়; একদিন না একদিন তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।”
অসুস্থতা ও মানসিক লড়াইয়ে সামান্থা রুথ প্রভু
কোভিড পরবর্তী সময়েই সামনে আসে সামান্থা ও নাগা চৈতন্যের বিচ্ছেদের খবর। সেই সময় তিনি ‘মায়োসিটিস’ নামের একটি অটো ইমিউন ডিজিজে আক্রান্ত ছিলেন। মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়লেও ধীরে ধীরে নিজেকে পুনর্গঠনের পথে এগিয়েছেন অভিনেত্রী।“সেই সময়টা ছিল ভয়ানক কঠিন। কিন্তু আমি বুঝেছি, জীবনের অন্ধকার সময়গুলোও শেখার সুযোগ দেয়,” বলেন সামান্থা।
গ্ল্যামার ও বাস্তবতার ভারসাম্য
সাক্ষাৎকারে সামান্থা বলেন, গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডে খাঁটি থাকা সহজ নয়।“সবসময় নির্ভেজাল থাকা যায় না, জীবনে এমন সময় আসে যখন বাস্তবতা ও প্রতিচ্ছবি মিলেমিশে যায়। অথেনটিক থাকা মানে কখনো কখনো নিজের অপূর্ণতাকেও গ্রহণ করা।”সাফল্য মানে শুধু খ্যাতি নয় সাফল্যের সংজ্ঞা নিয়ে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করেন সামান্থা।
“আমি উচ্চাকাঙ্ক্ষী, কিন্তু শুধুমাত্র নাম বা খ্যাতির পিছনে ছোটা অর্থহীন। উদ্দেশ্য ছাড়া সাফল্য শূন্য। আমি অনেক পডকাস্ট শুনেছি, এমন মেন্টরদের কথাও শুনেছি যারা আমার ভাবনা পাল্টে দিয়েছে।”
তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে তিনি বলেন,“মেন্টর বাছাই করার সময় সতর্ক হতে হবে, কারণ ভুল পথপ্রদর্শক পুরো জীবন ঘুরিয়ে দিতে পারে।” মূল্যবোধই টিকে থাকার ভিত্তি সামান্থা তার শিকড় ও অতীত ভুলে যাননি।“আমি খুব সাধারণ পরিবার থেকে এসেছি। একসময় টেবিলে খাবার তুলতেও কষ্ট হতো। পরে নাম, খ্যাতি, অর্থ, সব পেয়েছি, কিন্তু সেই সবই এক সময় বিভ্রান্ত করেছিল। তবুও আমি আমার মূল্যবোধের সঙ্গে আপস করিনি। হয়তো সেই কারণেই এখনো টিকে আছি।”