নচিকেতা চক্রবর্তী
নচিকেতা চক্রবর্তী দুই বাংলার জনপ্রিয় গায়ক। বহুপ্রজন্মের সাথে জড়িয়ে আছে তার নাম। বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন নচিকেতা। জানা গেছে, হৃদ্যন্ত্রের জটিলতা দেখা দেওয়ায় ৬ ডিসেম্বর (শনিবার) সন্ধ্যায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
ভারতের একাধিক গণমাধ্যম জানায়, বর্তমানে নচিকেতা চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে কিছুটা সুস্থ আছেন। প্রতিবেদন থেকে আরো জানা গেছে, কয়েকদিন ধরে শরীর ভালো যাচ্ছিল না নচিকেতার। শারীরিক অসুস্থতার কারণে আসানসোলে শো’ও বাতিল করেছেন তিনি। আজ রোববার শো করার কথা ছিল তার। এছাড়াও শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় আগামী শো-গুলো বাতিল করা হয়েছে।

অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে নচিকেতা
এর আগে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতেও এমনটা ঘটেছিলো। অসুস্থতার কারণে রামপুরহাটের শো বাতিল করতে বাধ্য হন তিনি। সেসময় তার পরিবার জানিয়েছিলো, নচিকেতার সারভাইকাল স্পন্ডিলাইটিস রয়েছে। এটি শীতে বেড়ে যায় এবং শীতে টানা শো থাকায় সমস্যা আরও বাড়ে।
তবে এবারের অসুস্থতা ভিন্ন রকম। সারভাইকাল স্পন্ডিলাইটিস নয় বরং হার্টের রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন নচিকেতা। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে বর্তমান অসুস্থতা নিয়ে এখনও কিছু জানানো হয়নি। তার এই অসুস্থতার খবরে ভক্তরা বেশ উদ্বিগ্ন। তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন তার শ্রোতা-অনুরাগীরা।

নচিকেতার গান
নচিকেতা বাংলার জীবনমুখী শিল্পী হিসেবে খ্যাত। বহু কালজয়ী গানের গায়ক তিনি। তার সুরে আর গানে গানে উঠে এসেছে ফুটপাতে থাকা মানুষের গল্প, সাধারণ মধ্যবিত্তের চাওয়া-পাওয়া, মানসিকতা, সমাজের নানা স্তরের ন্যায়-অন্যায়ের গল্প।
নচিকেতার বিখ্যাত সব গানের মধ্যে অন্যতম আছে, ‘নীলাঞ্জনা, ‘বৃদ্ধাশ্রম, ‘যখন সময় থমকে দাঁড়ায়, ‘ ডাক্তার ও ডাক্তার,’ রাজশ্রী তোমার জন্য,’সহ অসংখ্য গান।
এ ছাড়া ‘এই বেশ ভালো আছি’, ‘কে যায়’, ‘কি হবে’, ‘চল যাব তাকে নিয়ে’, ‘একলা চলতে হয়’, ‘কুয়াশা যখন’, ‘আমি পারি’, ‘দলছুট’, ‘দায়ভার’, ‘এই আগুনে হাত রাখো’, ‘আমার কথা আমার গান’, ‘তীর্যক’, ‘এবার নীলাঞ্জনা’, ‘হাওয়া বাদল’, ‘সব কথা বলতে নেই’, ‘দৃষ্টিকোণ’, ‘আয় ডেকে যায়’সহ অনেক একক অ্যালবামের কথা স্মরণ করা যেতে পারে। বেশ কয়েকটি যৌথ অ্যালবাম ও প্লেব্যাকও করেছেন তিনি।
নচিকেতার বাপ-দাদার বাড়ি বাংলাদেশের পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলায়। ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার চেচরীরামপুর গ্রামে রয়েছে তার মামার বাড়ি। দেশ ভাগের সময় তার পরিবার কলাকতায় চলে যায়। শৈশবে গান লেখা শুরু করেছিলেন নচিকেতা চক্রবর্তী, পাশাপাশি নিজের মতো করে গাওয়া। নব্বই দশকের প্রথম ভাগে ‘এই বেশ ভালো আছি’ অ্যালবাম প্রকাশের পর থেকে মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হন নচিকেতা।