মৃত্যু ভাবনা নিয়ে ‘মৃত্যু মস্ত ফাঁকি’
ওপাড় বাংলার জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। হাসপাতালে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায়, তার হার্টে ব্লক ধরা পড়েছে। চিকিৎসা শেষে ১২ ডিসেম্বর বাসায়ও ফেরেন। তবে হাসপাতালে থাকাকালীন নচিকেতা লিখেছেন মৃত্যু ভাবনা নিয়ে ‘মৃত্যু মস্ত ফাঁকি’ নামে। গতকাল ফেসবুকে নিজের কণ্ঠে নচিকেতা ‘মৃত্যু মস্ত ফাঁকি’শীর্ষক এই লেখা ও উপলব্ধি প্রকাশ করেন।
মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখা হয়েছে নচিকেতার। সেই উপলব্ধি জানালেন সবাইকে। নচিকেতার কথায়, ‘মৃত্যুর মুখ থেকে বারংবার ফিরে মন্দ লাগছে না। প্রথমবার বাইক থেকে পড়ে মাথায় লেগে কোমায়, তখন বয়স ১৫। দ্বিতীয়বার মানিকতলায় বাসভাড়া বৃদ্ধি আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে পাশের কমরেডের মৃত্যু আমার বদলে; হঠাৎ স্থান পরিবর্তনের কারণে। তখন বয়স কুড়ি। তৃতীয়বার পাতালরেলের নির্মিত হওয়া পরিত্যক্ত টানেলে জলে ডুবতে ডুবতে, তখন বয়স ১৬। ক্ষুদিরাম ছবি দেখে উৎসাহিত হয়ে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ে বেঁচে যাওয়া। দড়িটা হঠাৎ ছিঁড়ে যাওয়ায়, বয়স তখন ৭। নকশাল আন্দোলন দেখে উত্তেজিত হয়ে স্কুলে আগুন লাগিয়ে মরতে মরতে, তখন বয়স ৬। ৪৭ বছর বয়সে দিল্লির হাসপাতালে মোস্ট কমপ্লিকেটেড হুইপল সার্জারির টেবিল থেকে। এ ছাড়াও কত দুর্ঘটনা বা সুপরিকল্পিত গুজবের মৃত্যু থেকে আজ অবশেষে অ্যাপোলোতে হৃদয় ছন্দ বন্ধ থেকে এই বয়সে।’
হাসপাতালে নচিকেতা লিখেছেন তার মৃত্যু ভাবনা নিয়ে । তার এই অনুভূতির ভিডিওতে নেটিজেনদের প্রতি নচিকেতার অভিমান ফুটে উঠেছে। কারণ, অনেকবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে তাঁর মৃত্যুর গুজব। এবারও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর এমন খবর ছড়িয়েছিল। তাই তো অভিমানের সুরে নচিকেতা বললেন, ‘আমাকে তো আমার যা আয়ু, তার থেকে বেশিবার মারা হয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। হয়তো ভুল হয়ে গেছে, ক্ষমা করবেন। এবার আপনারা মৃত্যু ঘোষণা করলেই মরে যাওয়ার চেষ্টা করব। কথা দিচ্ছি। অন্তত আপনাদের মান রাখতে।’

ভিডিওর শেষে নচিকেতা তার ‘আগুনপাখি’ গানের দুটি লাইন জুড়ে কথা শেষ করেছেন। নচিকেতা বলেন, ‘মৃত্যু মস্ত ফাঁকি, দুচোখে আকাশ ডানায় আগুন, আরও আরও কত ওড়া বাকি’।