Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
শুক্রবার, অক্টোবর ৩, ২০২৫

কোনো মেয়ে যেন আমার মতো ভুল না করে- গুলতেকিন খান

হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী গুলতেকিন খান

প্রখ্যাত লেখক হুমায়ূন আহমেদের প্রথম ও সাবেক স্ত্রী গুলতেকিন খান আজ বিকালে তার সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস শেয়ার দিয়েছেন। যেখানে তিনি হুমায়ূন আহমেদের সাথে তার বৈরিতাপূর্ণ সম্পর্কের একটি চিত্র তুলে ধরেন। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে নানামুখী আলোচনা।

তিনি লিখেছেন, ‘এই লেখাতে আমার সম্পর্কে একটিও খারাপ মন্তব্য দেখতে চাই না!

এই সত্যি কথাগুলো আমি লিখেছি শুধু মাত্র কিশোরী, তরুণী এবং তাদের অভিভাবকদের জন্যে।

এতো ব‍্যক্তিগত ঘটনা লিখেছি কারণ আর কোনো মেয়ে আমার (পুরো বিয়েটাতে আমার চেয়ে অভিভাবকদের বেশি ভুল ছিলো।)মত ভুল যেনো না করে।

জুন মাসের ৬ তারিখ ছিল রবিবার।শীলাকে যেমন হাসতে হাসতে বলেছিলাম প্রায় একই ভাবে ইকবাল ভাইকেও জানালাম।

ড. ইয়াসমীন হক তাঁর পরিচিত কয়েকজন lawyer আমার বাসায় পাঠান। তাঁদের একজন আমাকে জিজ্ঞেস করেন, ব‍্যাংকে টাকা পয়সা কেমন আছে?

আমি বলি, কার ব‍্যাংকে?

আপনাদের জয়েন্ট account এ?

আমাদের তো কোনো জয়েন্ট account নেই!

ব‍্যাংকে হুমায়ূন আহমেদের কতো টাকা আছে?

সেটা তো আমি জানি না

তখন উনি upset হয়ে বলেন, কিছু একটা বলেন?

আমি বলি, একজন মেয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আছে!

কী ধরণের সম্পর্ক ?

: যতদুর জানি সব ধরণের সম্পর্ক। উনি নিজেই আমাকে জানিয়েছেন! আমি বাকি করো নাম বললাম না! তারা এখন বিয়ে করে শান্তিতে আছেন।কী দরকার তাদের নাম বলার!#

Lawyer রা দখিন হাওয়ায় (আমার ফ‍্যাটে যেখানে আমার মৌখিক agreement নিয়ে হুমায়ূন আহমেদ থাকছিলেন) সেখানে যান। এবং চলেও আসেন আমার কাছে। একজন বলেন তিনি তো কয়েকটি বই দেখান যেখানে আগে থেকেই আন্ডার লাইন করা ছিলো।

:হোটেল গ্রেভারিন, মেফ্লাওয়ার আরো কিছু বই। আপনি নাকি অনেক আগে থেকেই ডিভোর্স চাচ্ছিলেন?

: ওগুলো সত্যি না। ডিভোর্সের নিয়ম আমি এখনো জানি না! এ‍্যামেরিকাতে কী ভাবে জানবো? “ হোটেল গ্রেভারিনে” ওসব বানিয়ে লেখা! তাঁর আত্মজীবনী মূলক বই এ অনেক কিছুই তাঁর কল্পনা থেকে লেখা। ঐসব বই লেখার সময় আমি তাঁকে বার বার বলেছিলাম ওসব না লিখতে! কিন্তু উনি আমাকে তখন বলেছিলেন, একদম সত্যি হচ্ছে জলের মতো, কোনো স্বাধহীন, তাই কিছু মিথ‍্যা থাকলে লোকজন পড়ে মজা পাবে! আমি শুধু তাঁর পায়ে ধরে বাকি রেখেছিলাম ।বার বার বলেছি, আমার সম্পর্কে কিছু না লিখতে। আমি বাসার থেকে বের হয়ে যাইনি! ওর তখন খারাপ একটি সময় যাচ্ছিল, নর্থ ডাকোটা ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডির জন্যে একটি পরীক্ষা হয় যার নাম কিউমিলিয়েটিভ, সেখানে দশ নাম্বার থাকে। পরীক্ষার জন‍্যে সম্ভবত দুই বছর সময় থাকে। সেখানে অনেকগুলো পরীক্ষা হয় এবং দশের মধ‍্যে তিনটি ২ নাম্বার পেতে হয়, বাকি গুলো ১ নাম্বার পেলেই হয়। কিন্তু সেঁ অনেকগুলো পরীক্ষা দিয়েও একটিতেও ২ নাম্বার পাননি তখনো। এটা নিয়ে তাঁর মধ্যে ফ্রাসটেশন কাজ করছিলো। তাছাড়া তিনি রেগে গেলেই বলতেন, বাসা থেকে বের হয়ে যাও। সেদিনও পরীক্ষায় ১ পেয়ে মেজাজ খুব খারাপ ছিল। বাসায় এসেই অকারণে রাগারাগি শুরু করে। এবং এক পর্যায়ে কোনো কারণ ছাড়াই আমাকে বলেন, বাসা থেকে বের হয়ে যাও!

:আমি বলি কোথায় যাবো?

:উনি বলেন যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাও! আমাকে চুপচাপ কাঁদতে দেখে আরো রেগে যান এবং আমাকে ধাক্কা দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে দেন। আমার গায়ে তখন একটি শার্ট এবং প‍্যান্ট, পায়ে স্পন্জের স‍্যান্ডেলছিল। আর বাইরে ডিসেম্বর মাসের প্রচন্ড ঠান্ডা! আমি শীতে কাঁপতে কাঁপতে দরজা ধাক্কা দেই আর বলি, দরজা খোলো প্লিজ, কলিংবেল বাজাতে থাকি কিন্তু দরজা খুলে না।বেশ কিছুক্ষণ পরে আমার হাত পা প্রায় জমে যায়! তখন দৌড়াতে থাকি। আমাদের বাসার কাছে একটি দোকান ছিলো। একজন এ‍্যামেরিকান বৃদ্ধা মহিলা তাঁর বিশাল ড্রয়িং রুমকে নানারকম মসলা, আচার, হারবাল জিনিস দিয়ে দোকান বানিয়েছিলেন। নাম ছিল “টচি”। আমরাও ওখান থেকে মসলা কিনতাম এবং প্রায়ই যেতাম নতুন কোনো মসলার খোঁজে! এমনিতে কাছেই মনে হতো কিন্তু সে শীতের সন্ধ্যায় যেন দোকানটি বাসার কাছে ছিলো সেটি মনে হলো বহু দূরে চলে গেছে! শেষ পর্যন্ত টচি পৌঁছেই দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলাম । মনে হলো স্বর্গে ঢুকেছি! বয়স্ক ভদ্রমহিলাকে অনুরোধ করলাম, আমি একটি ফোন করতে পারি কিনা! টাকা পরে দেবো! উনি বললেন, টাকা লাগবেনা, তুমি ফোন করো। তিনি আমার প্রাইভেসির জন‍্যে একটু দুরে সরে গেলেন। আমার একমাত্র মুখস্থ নাম্বারে ফোন করলাম ।

:এ‍্যান, আমি টিংকু বলছি।

: কী হয়েছে টিংকু, এমন ভাবে কথা বলছো কেনো?

: এ‍্যান, তুমি কি আমাকে একটু তুলে নিতে পারবে?

আমি ( এ‍্যানের ছেলে, এ‍্যারোনকে আমি বেবিসিট করি। কিন্তু আমরা ভালো বন্ধুও)

ওকে ঠিকানা বলি। এ‍্যান চলে আসে। আমি টচির বয়স্ক ভদ্রমহিলাকে ধন্যবাদ জানিয়ে গাড়িতে উঠি। ও আমাকে একটি জ‍্যাকেট দেয়। আমি ভাবি, ও কেমন করে জানলো যে আমার গায়ে জ‍্যাকেট নেই?

ওর বাড়িতে যেতে যেতে সবকিছু বলি ওকে।

বাসায় পৌঁছে এ‍্যান আমাকে একটি রুম দেখিয়ে বলে, এখন তুমি

ঘুমাওতো! সারাদিন কাজ করার ক্লান্তি, বাসা পরিষ্কার, রান্না কতো কী করেছি! কোনো কিছুতেই ঘুম আসেনা! ভয়ে, উৎকণ্ঠায় এতোক্ষণ কাঁদতেও পারিনি! বালিশে মাথা রাখতেই ঝর্নার মতো দু’চোখের জলে বালিশ ভিজে গেলো! নোভার কথা ভেবে কষ্ট গলার ভেতর আটকে গেলো! এখানে আমার মা-বাবা, ভাইবোন, কোনো আত্মীয়স্বজন নেই! কি করে সে পারলো এমন করতে? সারা রাত কাঁদতে কাঁদতে কাটলো।

বাথরুমে গিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে আমি বসে থাকি।

এ‍্যান আর স্টেইনলি নাস্তার টেবিলে এসে বসে।

আমিও বসি ওদের সাথে ॥

টেবিলে এ‍্যান বলে, কি ঠিক করলে?

: কী বলছো, এ‍্যান?

: লয়‍্যারের সাথে কথা বলব না? একবারে ডিভোর্স পাঠাতে বলবে?

আমি ভয়ে আতকে উঠি!

না, না। হুমায়ূন আমাকে অনেক ভালোবাসে! রাগের মাথায় ওসব করেছে!

তুমি আমাকে একটু বাসায় দিয়ে আসতে পারবে? নোভার জন‍্যে খুব মন খারাপ লাগছে!

ওরা দু’জন অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে থাকে

বাসায় ঢুকেই আমি নোভাকে কোলে নিয়ে দুতালায় যাই। বিছানায় বসে নোভাকে জড়িয়ে ধরে শব্দ করে কাঁদতে থাকি।

আর বলি, নোভাকে আমার বোকামি করতে দেবোনা। ওর হাজবেন্ডের যেনো সাহস না হয় ওকে ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেবার!

আমার চোখের সামনে অসংখ‍্য ছবি দেখতে পাই যেখানে একটি ১৮/১৯ বয়েসের তরুনী চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে এবং একজন হুমায়ূন আহমেদ তাকে যা ইচ্ছে তা বলে বকছে।

আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল ইয়াসমীনের পাঠানো ঐ লয়‍্যারকে জিজ্ঞেস করতে “আসলে তখনি নোভাকে নিয়ে দেশে ফিরে ঐ ভদ্রলোক কে ডিভোর্স দেয়া উচিত ছিলো, তাই না?” কিন্তু পারিনি!

গুলতেকিন খান ও হুমায়ূন আহমেদ

১৯৭৩ সালে হুমায়ূন আহমেদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন গুলতেকিন। ব্যক্তিগত জীবনে পাঁচ সন্তানের জননী তিনি। ২০০৩ সালে হুমায়ূন আহমেদের সাথে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

Share this article
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Read next

ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত ইলিয়াস কাঞ্চন

ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত দেশের এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন…

আপন ভাইয়ের সাথে ছবি দিয়ে বিপদে কেয়া পায়েল    

বিপাকে পড়েছেন কেয়া পায়েল দেশের ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী কেয়া পায়েল। কাজের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ…
আপন ভাইয়ের সাথে ছবি দিয়ে বিপদে কেয়া পায়েল

আহত-নিহতদের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছেন থালাপতি বিজয়

তামিলাগা ভেটরি কাজাগাম অতীত জীবনে থালাপতি বিজয় এত বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি কখনোই হয়নি। অভিনয় থেকে রাজনীতিতে পা…
ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিলেন থালাপতি বিজয়
0
Share