ইমতিয়াজ বর্ষণ ও শার্লিন ফারজানা
শুরুটা ছিল একদম সাধারণ। একটিমাত্র নাটকে একসঙ্গে কাজ, সেটিও কেবল সহশিল্পী হিসেবে। দেখা হলে কুশল বিনিময়, হাই–হ্যালো, ব্যস। কেউই তখন ভাবেননি, এই পরিচয় একদিন গভীর বন্ধুত্বে রূপ নেবে। সময়ের সঙ্গে সেই সম্পর্ক ধীরে ধীরে বদলে যায়, পরিণত হয় বিশ্বাস আর পারিবারিক আপনত্বে। বলছি অভিনয়শিল্পী ইমতিয়াজ বর্ষণ ও শার্লিন ফারজানার কথা। এবার একই ফ্রেমে বর্ষণ ও শার্লিন- তবে মাঝে কাটলো আট বছর।
২০১৭ সালে মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের পরিচালনায় ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ সিনেমায় প্রথমবার জুটি বাঁধেন তাঁরা। সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০২০ সালে এবং দর্শক–সমালোচকদের প্রশংসাও কুড়ায়। সেই ছবির পর দীর্ঘ আট বছর পেরিয়ে আবার বড় পর্দায় একসঙ্গে ফিরছেন এই দুই অভিনয়শিল্পী। সৈকত রায়ের পরিচালনায় নতুন সিনেমা ‘রেকর্ডিংস’-এ দেখা যাবে বর্ষণ ও শার্লিনকে।

বর্ষণ জানালেন, প্রথম সিনেমার সময় দীর্ঘ রিহার্সাল আর শুটিংয়ের ভেতর দিয়েই তাঁদের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি হয়। প্রতিদিন চরিত্র নিয়ে আলোচনা, একে অন্যের ভাবনা ভাগ করে নেওয়া থেকেই বন্ধনটা গাঢ় হয়। সেই সম্পর্কই পর্দায় আলাদা মাত্রা যোগ করেছিল। দর্শকও তাঁদের জুটিকে গ্রহণ করেছিলেন। এরপর একসঙ্গে বেশ কিছু কাজের প্রস্তাব এলেও তাঁরা খুব বেছে বেছে এগোতে চেয়েছিলেন।
একই ফ্রেমে বর্ষণ ও শার্লিন – কি নিয়ে ফিরছেন?
নাটকে একসঙ্গে কাজের প্রস্তাব এলেও তাতে রাজি হননি তাঁরা। বর্ষণের ভাষায়, সিনেমা করে এসে নাটকে নাম লেখাতে চাননি দুজনেই। ভালো গল্পের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটল ‘রেকর্ডিংস’-এর মাধ্যমে। তাঁর কথায়, গল্পটা এমন, যা আবার বড় পর্দায় ফেরার আগ্রহ তৈরি করেছে।

‘রেকর্ডিংস’ মূলত একজন লেখকের জীবনকে কেন্দ্র করে নির্মিত। গল্পে সময়, স্মৃতি আর মানুষের ভেতরের দ্বন্দ্বকে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্ষণ নিজেই অভিনয় করছেন লেখকের চরিত্রে, আর তাঁর স্ত্রীর ভূমিকায় থাকছেন শার্লিন। এখানে সম্পর্কের টানাপোড়েন, মানসিক সংঘাত আর পারস্পরিক বোঝাপড়ার সূক্ষ্ম দিকগুলো তুলে ধরা হবে।
শার্লিন ফারজানার কাছে এই কাজটি আরও ব্যক্তিগত। তিনি বললেন, সহশিল্পী থেকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়া খুব কম ক্ষেত্রেই সম্ভব হয়। কিন্তু তাঁদের বন্ধুত্বটা সেটের গণ্ডি ছাড়িয়ে বাস্তব জীবনেও ছড়িয়ে গেছে। নিয়মিত দেখা, আড্ডা, এমনকি পারিবারিক সম্পর্কও তৈরি হয়েছে। এই বোঝাপড়াই একসঙ্গে কাজ করার শক্তি দিয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরেই একসঙ্গে বড় একটি কাজের অপেক্ষায় ছিলেন শার্লিন। তাঁর মতে, একজন ভালো সহশিল্পীর অবদান একটি চরিত্র গড়ে তুলতে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। সেই জায়গায় বর্ষণকে পাশে পাওয়া তাঁর জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া।
চলতি মাসেই সিনেমাটিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তাঁরা। এখন চলছে প্রি-প্রোডাকশনের কাজ। ২৩ ডিসেম্বর শুরু হবে শুটিং, যা শেষ হওয়ার কথা জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে।
সহশিল্পী থেকে বন্ধু, আর বন্ধু থেকে আবার পর্দার দম্পতি ইমতিয়াজ বর্ষণ ও শার্লিন ফারজানার এই ফিরে আসা শুধু আরেকটি সিনেমা নয়, সময়ের ভেতর দিয়ে গড়ে ওঠা একটি সম্পর্কের নতুন অধ্যায়।