বিপাশার পর আনুশকাকে আক্রমণ করলেন অভিনেত্রী ম্রুনাল
যেখানে যত বড় ইন্ডাস্ট্রি সেখানে প্রতিযোগিতা তত বেশি। বলিউডের বেলায়ও কথাটি হাঁড়ে হাঁড়ে সত্যি। প্রতিযোগিতা, উত্থান-পতন আর আলোচনা-সমালোচনা নিজেই একটা ইন্ডাস্ট্রি হয়ে গেছে বলিউডে। তবে অভিনেতার চেয়ে অভিনেত্রীরা এ সবে একটু এগিয়ে। বিপাশার পর এবার আনুশকাকে আক্রমণ করলেন অভিনেত্রী ম্রুনাল । বলিউডে তুমুল আলোচনা, ভক্তদের মধ্যে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্কের ঝড়।
তাদের যোগ্যতা, ভাগ্য আর পরিশ্রমের সমন্বয়ের পাশাপাশি অন্যকে খোঁচাও দিতে হয়। আলোচনায় আসতে মাঝে মাঝে খোঁচাই বড় ভূমিকা রাখে। সাম্প্রতিক সময়ে তেমন করেই আলোচনায় ম্রুণাল ঠাকুর। কিছুদিন আগেই অভিনেত্রী বিপাশা বসুকে নিয়ে খোঁচা মেরে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। এবার তার খোচার মুখে পড়লেন বলিউডের শীর্ষ নায়িকাদের একজন ।
ম্রুণাল এক পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, সালমান খানের সুপারহিট ছবি ‘সুলতান’-এর মাধ্যমে তার বলিউড অভিষেক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি নিজেই সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কারণ, তখন নিজেকে প্রস্তুত মনে করেননি। শেষ পর্যন্ত ছবিতে নায়িকা হন আনুশকা শর্মা। ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি বক্স অফিসে বিশাল সাফল্য পায় এবং আনুশকাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দেয়।
ম্রুণালের মন্তব্য নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে। তিনি বলেন, ‘এ রকম অনেক ছবি আছে। আমি না করেছিলাম। কারণ, সেই ছবির জন্য তখন আমি প্রস্তুত ছিলাম না। আমি নিশ্চিত যে আমার এ কথায় বিতর্ক শুরু হবে। ছবিটা সুপারহিট হয়েছিল। কিন্তু ছবির অভিনেত্রীর এতে কোনো ফায়দা হয়নি। এ ছবির মাধ্যমে তিনি এগিয়ে যেতে পারেননি। পরে আমার মনে হয়েছিল, আমি যদি ওই সময় ওই ছবি করতাম, তাহলে আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলতাম। তিনি এখন কাজ করছেন না, কিন্তু আমি করছি। এটা আমার জন্য এক বড় জয়।’
ম্রুণাল আরও বলেছেন, ‘আমি তাৎক্ষণিক আনন্দ, তাৎক্ষণিক পরিচিতি আর তাৎক্ষণিক খ্যাতি চাই না। কারণ, যেটা চটজলদি পাওয়া যায়, সেটা চটজলদি চলেও যায়।‘ নাম সরাসরি না নিলেও তার ইঙ্গিত আনুশকার দিকেই বলে মনে করেন নেটিজেনরা।
আনুশকার সাফল্য
আনুশকা শর্মার বলিউডযাত্রা শুরু হয়েছিল শাহরুখ খানের বিপরীতে ‘রব নে বনা দি জোড়ি’ দিয়ে। প্রথম ছবিতেই দর্শকের মন জয় করেছিলেন তিনি। এরপর একে একে ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’, ‘জব হ্যারি মেট সেজাল’, ‘এ দিল হ্যায় মুশকিল’—প্রতিটি ছবিতেই তিনি প্রমাণ করেছেন নিজেকে। শুধু অভিনয় নয়, প্রযোজক হিসেবেও তিনি সফল। ‘এনএইচ ১০’, ‘পাতাল লোক’ এবং ‘বুলবুল’–এর মতো প্রযোজনাও করেছেন তিনি।
অন্যদিকে ম্রুণালের যাত্রা তুলনামূলক ধীর। ছোট পর্দা থেকে শুরু করে ‘সুপার ৩০’, ‘জার্সি’, ‘সীতা রামম’-এর মতো ছবিতে তিনি নজর কাড়লেও এখনো বলিউডের শীর্ষ নায়িকাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নাম লেখাতে পারেননি। তাই অনেকের মতে, আনুশকার তুলনায় ম্রুণালের মন্তব্য আত্মপ্রচারের কৌশলই।
সীতা রামম
বলিউডে নারী তারকাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বেশ পুরনো। প্রায় প্রতিটি প্রজন্মেই এই তুলনার মধ্যেই ছিলেন। আশির দশকে ছিলো হেমা মালিনী ও রেখার তুলনা। নব্বইয়ের দশকে মাধুরী দীক্ষিত ও শ্রীদেবী। পরবর্তী সময়ে ক্যাটরিনা কাইফ-প্রিয়াঙ্কা চোপড়া বা দীপিকা পাড়ুকোন-কারিনা কাপুরের মধ্যেও তুলনা টানা হয়েছে। কেউ কাজ দিয়ে প্রমাণ করেছেন নিজের অবস্থান, আবার কেউ কটাক্ষের জবাব দিয়েছেন নীরবতায়। তবে একটা বিষয় পরিষ্কার—নারী তারকাদের প্রতিযোগিতা বলিউডে সব সময়ই দর্শকের কৌতূহল বাড়িয়েছে, কিন্তু অনেক সময় শিল্পীর ইমেজ ক্ষুণ্ন করেছে।
আরও জানুন
ধানুশের সাথে প্রেমের গুঞ্জন অভিনেত্রী ম্রুনাল ঠাকুরের
ম্রুণালের মন্তব্যের পেছনে লুকিয়ে আছে পুরোনো এক ঘটনার স্মৃতি। ‘সুলতান’ ছবির প্রচারণার সময় সালমান খান খোলাসা করেছিলেন, কেন তিনি ম্রুণালের পরিবর্তে আনুশকাকে বেছে নিয়েছিলেন।
তার ভাষায়, ‘আমার পরিচিত একজন ম্রুণালকে ফার্ম হাউসে নিয়ে এসেছিলেন। তখন তিনি খুবই রোগা ছিলেন। তাই ছবির জন্য উপযুক্ত মনে হয়নি। সেই কারণে আনুশকাকে নেওয়া হয়েছিল।‘ এই মন্তব্য প্রমাণ করে, শুধু ইচ্ছা বা প্রস্তাব পাওয়া নয়, প্রস্তুতি ও উপযুক্ত সময়ও তারকার যাত্রাপথ নির্ধারণ করে দেয়।
আনুশকার উদ্দেশে মন্তব্য করার আগে ম্রুণাল বিপাশা বসুকে নিয়েও বিদ্রুপ করেছিলেন। তখন এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘এমন পেশিবহুল পুরুষালি চেহারার মেয়েকে কোনো ছেলে পছন্দ করে না।’ পরে অবশ্য তিনি বলেছিলেন, নায়িকার শরীর নিয়ে সমালোচনামূলক কথা, যা ভক্তদের কাছে একেবারেই গ্রহণযোগ্য হয়নি। ম্রুণাল ব্যাখ্যা দেন, ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে অজ্ঞতাবশত এমন মন্তব্য করেছিলেন।