সুকুমার রঞ্জন ঘোষ
‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ৯০ দশকের ঢাকাই সিনেমার অন্যতম ব্যবসা সফল সিনেমা। এই ছবি দিয়ে দেশবিখ্যাত সালমান শাহ ও মৌসুমী জুটির শুরু হয়। সিনেমাটি তৈরি হয় আনন্দমেলা সিনেমা লিমিটেডের ব্যানারে। এই প্রতিষ্ঠানের অন্যতম কর্ণধার ছিলেন সুকুমার রঞ্জন ঘোষ। সোমবার ভোরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির এই প্রযোজক । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
সুকুমার রঞ্জন ঘোষ মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের জনপ্রতিনিধি ছিলেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন। সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (কুলা প্রতীক) ও সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনকে (ধানের শীষ) পরাজিত করেন। এরপর ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়া এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছাড়াও তার প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে নির্মিত হয়েছে ‘স্বজন’, ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’, ‘লড়াই’, ‘অমর সঙ্গী’, ‘বিয়ের ফুল’সহ অনেক ব্যবসাসফল সিনেমা। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে চলচ্চিত্র প্রযোজক–পরিবেশক সমিতি। তার মৃত্যুতে দেশের চলচ্চিত্রশিল্পে এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ্য করেছে সংগঠনটি। এছাড়া তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে সংগঠনটি।

সুকুমার রঞ্জন ঘোষের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর ধরে পারকিনসন রোগে ভুগছিলেন। সম্প্রতি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন তিনি। ধানমন্ডির বাসায় অবস্থানকালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
সুকুমার রঞ্জন ঘোষের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় ঢাকার বড়দেশ্বরী কালীমন্দিরে।
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা সদরে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ঝুমুর সিনেমা হল। এছাড়াও তার ‘ফিল্ম হাউজ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান ছিল।