“থ্রি ইডিয়টস টু”
একটা ভালো সিনেমা শুধু হলে শেষ হয় না, শেষ হওয়ার বহু বছর পরও মানুষের জীবনে বেঁচে থাকে। ‘থ্রি ইডিয়টস’ ঠিক তেমনই এক ছবি। ২০০৯ সালে মুক্তি পেয়েছিল এই সিনেমাটি। এতো বছরেও ছবিটির জনপ্রিয়তা ও প্রাসঙ্গিকতা কমেনি একটুকুও। তারই ধারাবাহিকতায় এবার আসছে থ্রি ইডিয়টসের সিক্যুয়েল অর্থ্যাৎ “থ্রি ইডিয়টস টু”।
২০০৯ সালে রাজকুমার হিরানির তৈরি ‘থ্রি ইডিয়টস’ ভারতীয় সিনেমায় এনে দিয়েছিল নতুন দিগন্ত। এটি শুধু একটি ব্লকবাস্টার ছিল না। একটি প্রজন্মের কাছে এটি হয়ে উঠেছিল সাহস, বন্ধুত্ব, স্বপ্ন আর আত্মবিশ্বাসের রূপক। আমির খান, আর মাধবন ও শর্মন জোসি- এই ত্রয়ীর নির্ভুল অভিনয়, সহজ ভাষায় গভীর গল্প বলা এবং হাস্যরস মিলিয়ে ছবিটি তৈরি হয়েছিল জীবনবোধেরই আরেক নাম হিসেবে। গান, সংলাপ, চরিত্র সবই এতটাই শক্তিশালী ছিল যে আজও দর্শকের স্মৃতিতে একই উজ্জ্বলতায় টিকে আছে।

১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর প্রতি দর্শকদের ভালোবাসা এতটুকু কমেনি। তাই ছবিটির সিক্যুয়েলের খবর সামনে আসতেই যেন নস্টালজিয়া আর উত্তেজনা একসঙ্গে ফিরে এসেছে। এনডিটিভি জানিয়েছে, ‘থ্রি ইডিয়টস ২’-এর চিত্রনাট্য ইতোমধ্যে চূড়ান্ত, এবং আগামী বছর শুটিং শুরু হবে। প্রথম ছবির মূল দল আমির খান, করিনা কাপুরসহ প্রধান অভিনেতারা ফিরছেন নতুন কাহিনিতে। নির্মাতাদের বিশ্বাস, প্রথম ছবির যে অনন্য আবেগ দর্শকের হৃদয়ে ঢেউ তুলেছিল, সেটি আবারও জেগে উঠবে।
থ্রি ইডিয়টসের সিক্যুয়েল-এ যা থাকছে
সিক্যুয়েলের সময়রেখাও দারুণভাবে বদলানো হয়েছে। আগের ঘটনার ঠিক পর থেকে গল্প শুরু হচ্ছে না। বরং এগিয়ে যাচ্ছে পুরো ১৫ বছর। ক্লাইম্যাক্সে আলাদা পথে হাঁটা সেই তিন বন্ধু এবার আবার মিলবে। এত বছরে তাদের জীবন কীভাবে বদলেছে? রাঞ্চোর দার্শনিক ভাবনা, ফারহানের ক্যারিয়ারপথ আর রাজুর সংগ্রাম—এসবই ফিরে আসবে নতুন বয়স, নতুন বাস্তবতা আর নতুন দায়-দায়িত্বের ভেতর দিয়ে।
এই কারণেই অনেকে মনে করছেন, সিক্যুয়েলটি হবে আগের চেয়ে আরও বাস্তবমুখী, আরও আবেগঘন।
নির্মাতারা জানিয়েছেন, নতুন গল্পে থাকবে হাসি, থাকবে কান্না, আর থাকবে নিজের কাছে ফিরে আসার আনন্দ। সাথে যুক্ত হবে বর্তমান সময়ের শিক্ষা-ব্যবস্থা, প্রতিযোগিতা আর জীবনের চাপ, যা আজকের প্রজন্মের খুব চেনা। তাই ছবিটি শুধু স্মৃতি ফিরিয়ে আনার জন্য নয়, বরং নতুনদের জন্যও তৈরি করবে নতুন এক ভাবনা, নতুন এক বার্তা।
শেষ পর্যন্ত, ‘থ্রি ইডিয়টস ২’ যেন সেই প্রশ্নটাই ফের তুলে আনছে। সময় বদলায়, বয়স বাড়ে, জীবন থেমে থাকে না, কিন্তু সত্যি কি বন্ধুত্ব আর স্বপ্ন এত সহজে পুরোনো হয়ে যায়? হয়তো সিক্যুয়েলটাই এর নতুন উত্তর দিতে চলেছে।