দেলুপী নির্মাতা মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম
কিছুদিন আগে দেশব্যাপী মুক্তি পেয়েছে সিনেমা দেলুপী। সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন তরুণ নির্মাতা মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম। তিনি এর আগে ওটিটি ওয়েব সিরিজ ‘শাটিকাপ’ ও ‘সিনপাট’ নির্মাণ করেছিলেন যা দর্শক মহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিলো। সম্প্রতি দেশের এক গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন এই নির্মাতা। সেখানে উঠে এসেছে দেলুপী সিনেমা নির্মাণ, গল্প নির্ধারণ, অভিনেতা বাছাইকরণের মতো বিষয়গুলো। এছাড়াও প্রত্যেক মানুষ জন্মগতভাবে অভিনেতা বললেন নির্মাতা তাওকীর ।

গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে দেলুপীর গল্প নির্ধারণের প্রক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে নির্মাতা তাওকীর বলেন, এক বন্যা আক্রান্ত গ্রাম থেকেই এই গল্পের শুরু। তার ভাষ্যে, ২০২৪ সালে সারা দেশের অনেক জায়গার মতো খুলনার দেলুটি ইউনিয়নেও বন্যা হয়। সেখানে তার গিয়েছেন। গল্প খুঁজতে শুরু করেন। তিনি বলেন, “আমরা যখন গেছি, তখনই পরিকল্পনা ছিল, ওখানে ফিচার ফিল্ম বানাব। গেছি, গল্প খুঁজেছি; গল্প দাঁড় করিয়েছি। তারপর শুট করেছি। ‘দেলুপি’র গল্পটা আসলে আমাদের খুঁজে নিয়েছে, আমরা গল্পটাকে পিক করিনি। কারণ, আমরা ওই সময়ের বাস্তবতাটাকে অনুসরণ করেছিমাত্র।
প্রত্যেক মানুষই জন্মগতভাবে অভিনেতা। ঠিকঠাকমতো চরিত্রের জন্য প্রস্তুত করতে পারলে আর নিবেদন থাকলে যে কেউই ভালো চরিত্র হয়ে উঠতে পারে।

দেলুপী সিনেমার গল্প স্থানীয় পটভূমিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। নির্মাতার বাকিসব গল্পের মতোই মফস্বলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা। নির্মাতার গল্পগুলো মফস্বলকে কেন্দ্র করেই কেন গড়ে উঠা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি রাজশাহীতে বড় হয়েছি। নির্মাতা হিসেবে চলার শুরুও হয়েছে রাজশাহীতে। আমার এ ধরনের আঞ্চলিক গল্প, সাধারণ মানুষের গল্প বলতে খুবই ভালো লাগে; সত্যিকারের আনন্দ পাই। সেখান থেকে আসলে লোকাল গল্প নিয়ে কাজ করা। তবে তিনি এই ছাড়াও নানা ধরনের গল্প বলতে চান বলেও জানান।
প্রত্যেক মানুষই জন্মগতভাবে অভিনেতা -নির্মাতা তাওকীর
নির্মাতার অভিনেতারা প্রায় সবাইই অজনপ্রিয় ও কিছুটা অপেশাদারও। বড় তারকাদেরকে না নেয়ার কারণ কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শাটিকাপ’, ‘সিনপাট’ ও ‘দেলুপি’ গল্পগুলোতে এমন অভিনেতাদের নেয়া হয়েছে গল্পের প্রয়োজনেই। তিনি বলেন, ‘আমার নতুন মুখ দরকার ছিল, যাদের দেখে, ডায়ালেক্টে মনে হবে সব অর্থেই সেখানকারই মানুষ। আমার কাছে মনে হয়, প্রত্যেক মানুষই জন্মগতভাবে অভিনেতা। ঠিকঠাকমতো চরিত্রের জন্য প্রস্তুত করতে পারলে আর নিবেদন থাকলে যে কেউই ভালো চরিত্র হয়ে উঠতে পারে।

অপেশাদার অভিনেতাদের নিয়ে কাজ করা চ্যালেঞ্জের কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, অপেশাদার শিল্পীদের নিয়ে কাজ করা চ্যালেঞ্জের হলেও সেখানে সুযোগও আছে। নতুনদের কাদামাটির মতো তৈরি করে নেওয়া যায়।
‘দেলুপি’তে যাত্রাপালা, স্থানীয় শিল্পীদের সমস্যার সাথে বর্তমান সময়কেও ধরা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তাওকীর জানান তিনি এই সময়টাকেই ধরতে চেয়েছেন। তার ভাষ্যে, গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়, এই বন্যা, সাংস্কৃতিক অবস্থার প্রতিনিধিত্ব করেছে দেলুটি গ্রাম। জাজমেন্টাল না হয়ে সময় ও পরিস্থিতিটাকে সরলভাবে বলে গেছেন।