মায়ের নির্যাতনই তাঁকে বিনোদন জগতে ঠেলে দেয়
অভিনেত্রী জয়ার স্বীকারোক্তি তে উঠে এসেছে শৈশবে মায়ের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। জনপ্রিয় টেলিভিশন অভিনেত্রী জয়া ভট্টাচার্য সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে শৈশবের ভয়াবহ নির্যাতনের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে আলোচনায় এসেছেন। অভিনেত্রীর দাবি, শিশু বয়সে তাঁর মা নিয়মিত মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতেন এবং নিজের অপূর্ণ স্বপ্ন পূরণের উদ্দেশ্যে তাঁকে জোর করে বিনোদন জগতে ঠেলে দেন।

জয়া জানান, বাঙালি হলেও জন্ম ও বড় হওয়া মুম্বাইয়ে। অল্প বয়সেই তাঁকে বিজ্ঞাপন ও টেলিভিশনের কাজ করতে বাধ্য করা হয়। স্টুডিওতে যেতে আপত্তি জানালেই মারধর, চাবুকের আঘাত এমনকি গরম লোহার ছ্যাঁকার মতো নির্মম আচরণের মুখে পড়তে হতো। জয়ার কথায়, শৈশবে এই ঘটনা ছিল প্রায় দৈনন্দিন ব্যাপার।
মায়ের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযোগ
অভিনেত্রীর মতে, তাঁর মা নিজের অপূর্ণ ক্যারিয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টা করতেন মেয়ের মাধ্যমে। তিনি বলেন, “আমার মা যা করতে পারেননি, তা আমাকে দিয়ে করানোর চেষ্টা করতেন। আমি যেতে না চাইলে অত্যাচার করা হতো। ছোটবেলায় এসব সহ্য করা ছিল অসম্ভব।”
নির্যাতনের সময় জয়ার একমাত্র মানসিক ভরসা ছিলেন তাঁর বাবা, তবে তিনিও শারীরিক বা পারিবারিক অশান্তির আশঙ্কায় প্রতিবাদ জানাতে পারতেন না। ফলে দীর্ঘসময় ধরে নির্মম পরিবেশের মধ্যেই বড় হতে হয় অভিনেত্রীকে।
তবে ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিকূলতা সত্ত্বেও জয়া ধীরে ধীরে অভিনয় জগতে নিজের জায়গা তৈরি করেন। একতা কাপুরের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘কিঁউকি সাস ভি কভি বহু থি’ তে ‘পায়েল’ চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে পরিচিতি পান তিনি। পরবর্তীতে ‘কসম সে’, ‘ঝাঁসি কি রানি’ সহ আরও বেশ কয়েকটি সিরিয়ালে অভিনয় করে দর্শকমনে জায়গা করে নেন। টেলিভিশনের পাশাপাশি তিনি সঞ্জয়লীলা বনশালির ‘দেবদাস’ এ শাহরুখ খানের মায়ের ভূমিকায় ও ‘লজ্জা’ ছবিতেও অভিনয় করেন।

তবুও শৈশবের নির্যাতনের স্মৃতি আজও পুরোপুরি ভুলতে পারেননি জয়া ভট্টাচার্য। সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “সেই সময়গুলো মনে পড়লে এখনও ভয়ে চুপসে যাই। অনেক দৃশ্য আজও চোখে ভাসে।”
অভিনেত্রীর এই কঠিন অতীত নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে বিশেষত শিশুদের ওপর পারিবারিক চাপ, মানসিক নির্যাতন এবং বিনোদন জগতে অপ্রাপ্তবয়স্কদের অংশগ্রহণ নিয়ে।