মামলা ভিত্তিহীন-সপক্ষে প্রমাণ নেই: মেহজাবীন
দেশের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, ব্যবসায়িক পার্টনার করার নাম করে ২৭ লাখ টাকা আত্মসাতের। হুমকির অভিযোগও ছিল মেহজাবীনের বিরুদ্ধে করা মামলায়। তার ভাই আলিসান চৌধুরীরও নাম আছে মামলায়। পরে, মেহজাবীন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান। সোমবার সকালে মামলা নিয়ে মেহজাবীনের অফিসিয়াল বিবৃতি প্রকাশ । ঘটনার বিস্তারিত ব্যাখ্যা, নিজের অবস্থান ও আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে কী জানালেন তিনি । তিনি পুরো ঘটনাকে ‘ভিত্তিহীন’ দাবি করেন। অভিযোগের সপক্ষে কোনো প্রমাণ নেই বলে বিস্তারিত তুলে ধরেন মেহজাবীন।

প্রকাশিত সেই বিবৃতিতে তিনি লিখেছেন, ‘একজন অজানা ব্যক্তি ২০২৫ সালের মার্চে আমার ও আমার ১৯ বছর বয়সী ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কিন্তু গত ৯ মাসে আমি মামলার কোনো তথ্য পাইনি। কারণ অভিযোগকারী ব্যক্তি পুলিশকে আমার সঠিক ফোন নম্বর, সঠিক ঠিকানা বা কোনো যাচাইকৃত তথ্য দিতে পারেননি। তিনি দাবি করেন, ২০১৬ সাল থেকে তিনি আমার সঙ্গে ব্যবসা করছিলেন; কিন্তু কোনো যোগাযোগের প্রমাণ নেই’
অভিনেত্রী দাবি করেন, ২০১৬ সাল থেকে আমাকে ফেসবুকে মেসেজ দিতেন। কিন্তু তিনি দেখাতে পারেননি, একটি মেসেজও। হোয়াটসঅ্যাপ বা আমার নম্বর কিংবা আমার পক্ষ থেকে একটি উত্তর, এমনকি একটি স্ক্রিনশটও না। তার পরিচয় অসম্পূর্ণ, তার সম্পূর্ণ পরিচয়পত্র এখনো দেয়া হয়নি। এমনকি নেই এনআইডি পর্যন্ত। অভিযোগকারী ও তার আইনজীবী ফোন বন্ধ করে রেখেছেন গতকাল খবর প্রকাশের পর থেকে।

আর্থিক লেনদেন কিংবা চুক্তির কোনো প্রমাণ নেই
মেহজাবীন আরও লিখেন, আর্থিক লেনদেনের কোনো প্রমাণ নেই। কিন্তু তিনি দাবি করেন আমাকে ২৭ লাখ টাকা দিয়েছেন। তবে, দেখাতে পারেননি ব্যাংক লেনদেন, কোনো চেক, বিকাশ লেনদেন, কোনো লিখিত চুক্তি, কোনো রসিদ, কোনো সাক্ষী কিছুই না। একটি কাগজপত্রও নেই। মামলায় বলা হয়েছে, ১১ ফেব্রুয়ারি হাতিরঝিলের একটি রেস্টুরেন্টে ডেকে নিয়ে তাকে হুমকি দেয়া হয়। এ অভিযোগকে “সম্পূর্ণ প্রমাণহীন” বলে উল্লেখ করেন মেহজাবীন। বলেন, “হাতিরঝিল ঢাকার সবচেয়ে সিসিটিভি নিয়ন্ত্রিত এলাকা। তবুও তিনি এক সেকেন্ডের ফুটেজ, কোনো ছবি বা সাক্ষী দেখাতে পারেননি।”
গত ৯ মাসে কোনো পুলিশি যোগাযোগ, আইনি নোটিশ বা আদালতের চিঠি পাননি বলেও জানান তিনি। তার ভাষায়, “একটি নোটিশ পেলেও আমি অনেক আগেই আইনি পদক্ষেপ নিতাম।” মেহজাবীন বলেন, মামলার ভিত্তি না থাকলেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর আইনকে সম্মান জানিয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন।“মিডিয়া ট্রায়াল না করার” আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রমাণ ছাড়া মামলা কখনো সত্য হয় না। সত্য খুব দ্রুতই আদালতে পরিষ্কার হবে।” অভিযোগকারীর উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তার মতে, আজকাল কাউকে অপমান বা মানহানি করে ভাইরাল হওয়া খুব সহজ।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে জানান, খবর প্রকাশের পর থেকে অভিযোগকারী ও তার আইনজীবীর ফোন নম্বর বন্ধ আছে। ১৫ বছরের ক্যারিয়ারের প্রসঙ্গ তুলে মেহজাবীন লেখেন, “এত দীর্ঘ পরিশ্রমের পর আজ আমাকে এসব ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে এটাই সবচেয়ে কষ্টের।”
মেহজাবীন চৌধুরীর পাশে দাঁড়ালেন সহশিল্পীরা
এদিকে, মেহজাবীনের পাশে দাঁড়িয়েছেন অভিনয় শিল্পীরা। জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাবিলা নূর মেহজাবীনের স্ট্যাটাস শেয়ার দিয়ে লেখেন, ‘বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে সত্যের পাশে থাকুন’। আরেক অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ লিখেছেন, ‘শিল্পীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি বন্ধ করা হোক। শিল্পকে এগিয়ে নিতে হলে শিল্পীদের নিরাপত্তা ও সম্মান নিশ্চিত করা জরুরি’।
