‘বিবৃতি চাই না- মব সামলা’ সরকারকে নির্মাতা নিপুন
দেশের আলোচিত নির্মাতা আশফাক নিপুন আবারও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়েছেন। বরাবরের মতো এবারও তিনি নীরব থাকেননি, বরং সরাসরি সরকারের উদ্দেশে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। ‘বিবৃতি চাই না- মব সামলা’ সরকারকে নির্মাতা নিপুন । নুরাল পাগলা ইস্যুতে তার ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে, আলোচনায় এসেছে সরকারের ভূমিকা ও জনমানসের প্রতিক্রিয়া।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুরে জুমার নামাজের পর রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জুড়ান মোল্লাপাড়ায় নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগলা’-র মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। এর আগে স্থানীয় দরবার শরিফে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। এসময় ইউএনওর গাড়ি ও পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এই সহিংসতায় ১ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হন বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম ।
নিপুনের ক্ষোভভরা পোস্ট
ঘটনার পরপরই আশফাক নিপুন ফেসবুকে লিখেন—
“কবর থেকে উল্লাস করে মৃতদেহ তুলে পুড়িয়ে দেওয়া বর্বরতার চূড়ান্ত। হে সরকার, ‘ভিক্ষা চাই না, কুত্তা সামলা’র মতো বলতেছি—‘বিবৃতি চাই না, মব সামলা!
তার এই পোস্টে অনেক অনুরাগী একমত প্রকাশ করেছেন। আবার কেউ কেউ কটাক্ষ করেছেন।
মুন্নী–নিপুন বিতর্ক
সংগীতশিল্পী ও উপস্থাপিকা দিনাত জাহান মুন্নী ওই পোস্টের কমেন্টে লিখেছেন—
“স্যরি আশফাক—তোমাদের কথা এখন কৌতুকের মতো শোনায়। জানি এই কমেন্টের নিচে এখন ‘শেখ হাসিনা’, ‘ফ্যাসিবাদ’ ইত্যাদি টেনে নানা বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা চলবে। তবে দিনশেষে তোমাদের এসব পোস্ট কিন্তু আমরা আগে দেখিনি।”
উত্তরে আশফাক নিপুন লিখেছেন—
“তাহলে হাসেন মুন্নী আপা। প্রাণখুলে হাসেন।”
সরকারের প্রতিক্রিয়া
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এক বিবৃতিতে ঘটনাকে “অমানবিক ও ঘৃণ্য” আখ্যা দিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—“কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী আইনের ঊর্ধ্বে নয়, জড়িতদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।”
ধর্মীয় সংগঠনের নিন্দা
হেফাজতে ইসলাম ঘটনাটিকে “অমানবিক ও ইসলামবিরোধী” আখ্যা দিয়েছে। সংগঠনটির নেতারা বলেছেন—“ইসলাম মানব মর্যাদা রক্ষা করে, তাই কবর থেকে লাশ তুলে পুড়িয়ে দেওয়া বর্বরতা। প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।”
বিশ্লেষণ: ‘বিবৃতি নয়, কাজ চাই’
আশফাক নিপুনের বক্তব্য মূলত সরকারের উদ্দেশে এক ধরনের প্রতিবাদ।
তার ভাষায়—“বিবৃতি চাই না, মব সামলা”—অর্থাৎ কেবল প্রেস নোট বা প্রতিশ্রুতি নয়, বরং বাস্তবে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ চাই।
এ ঘটনার পর সাধারণ মানুষও প্রশ্ন তুলছে—
- বিবৃতি দিয়ে দায় শেষ করা সম্ভব, নাকি প্রকৃত জবাবদিহি প্রয়োজন?
- কেন আগেভাগে প্রশাসন এ ধরনের সহিংসতা ঠেকাতে পারেনি?
- মব সহিংসতা রোধে সরকারের পদক্ষেপ কতটা কার্যকর?