আজ বাংলা বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ বাংলা নববর্ষ । এবারের উৎসবে বেশ আনন্দ উদ্দীপনা নিয়ে পালিত হচ্ছে দিনটি।
দিনটি নিয়ে বলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন ‘পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐক্য ও মেলবন্ধনের বড় একটি ধাপ। এটি শুধু বাঙালিরই নয়, বাংলাদেশে বাস করা অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী চাকমা, মারমা, গারোসহ সবার উৎসব’।
আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বর্ষবরণের আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নিতে এসে এসব কথা বলেন তিনি।
নববর্ষকে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐক্যের বড় উপলক্ষ্য উল্লেখ করে এসময় উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার থেকে আমরা এ উৎসবকে জাতীয়ভাবে পালন করা শুরু করলাম। আমি মনে করি এটা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐক্য এবং সম্মিলনের একটি বড় ধাপ। আমরা হয়তো ২০-৩০ বছর পর থাকবো না, কিন্তু আজকের বছরটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারণ এরপর থেকে বাংলাদেশ এভাবেই চলবে’।
‘এবারের শোভাযাত্রা রাজনৈতিক নয়’ উল্লেখ করে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘বিগত সময়ে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক গ্রুপ এটিকে নিজেদের সুবিধার্থে ব্যবহার করেছে। এবার ‘ফ্যাসিস্টের মুখাকৃতি’ মোটিফ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে ফ্যাসিস্ট রাজনীতির অভিধানে একেবারে বাইরের বিষয়। ফ্যাসিস্ট কোনো রাজনীতির অংশ নয়। ফ্যাসিস্ট সবচেয়ে বড় অশুভ শক্তি।
তবে হ্যাঁ, আরেক দৃষ্টিকোণে এটিকে বাংলাদেশের আপামর জনতার মহামিলনমেলা হিসেবে বড় ঐক্যের প্ল্যাটফর্ম। এখানে মুঘল থেকে সুলতানি আমল কিংবা বর্তমান আবহ সবকিছু উপস্থিত। গতানুগতিক সংকীর্ণ রাজনৈতিক মনোভাব এখানে নেই।’
১৯৮৯ সালে চারুকলায় আনন্দ শোভাযাত্রা নামে বর্ষবরণ শোভাযাত্রা শুরু হয়েছিল। পরে ১৯৯৬ সালে এটিকে মঙ্গল শোভাযাত্রা নাম দেওয়া হয়। এবার কর্তৃপক্ষ এটিকে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা নাম দিয়েছে।
বর্ষবরণ শোভাযাত্রার নামকরণের বিবর্তন নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘যশোরে প্রথমে ‘বর্ষবরণ শোভাযাত্রা’ নাম থাকলেও পরবর্তীতে ঢাকায় এটির নামকরণ করা হয় ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। এরপর পুনরায় সেটিকে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ করা হয়। এবার চারুকলা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে নামে এটির উৎপত্তি হয়েছিল, তারা সেই পুরোনো নামে ফিরে যাবে।’
সংস্কৃতি উপদেষ্টা আরো বলেন, অনেকদিন ধরে এটাকে আমরা বাঙালির প্রাণের উৎসব বানিয়ে রেখেছি। কিন্তু এটা বাংলাদেশের প্রাণের উৎসব। বাঙালি, চাকমা, মারমা, গারোসহ সব জাতিগোষ্ঠী বর্ষবরণ পালন করে। ফলে আমরা এটাকে বাংলাদেশের উৎসব হিসেবে পালন করা শুরু করলাম।