বাংলাদেশের প্রথম ম্রো ভাষার চলচ্চিত্র ‘কিওরি পেক্রা উও’। সিনেমাটি ‘ডিয়ার মাদার’ শিরোনামে অনুদিত হয়ে আজ ৫ মার্চ বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিখ্যাত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ঐতিহাসিক স্ক্রিনিং অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়টির ইন্ডিজিনিয়াস স্টাডিজ গ্রুপ এই সিনেমা আয়োজনের উদ্যোগে নিয়েছে।
২০২৩ সালে মুক্তিপায় সিনেমাটি। দৈর্ঘ্য ৬৭ মিনিট। সিনেমাটি আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্ব করে, কমিউনিটি-ভিত্তিক নির্মাণপ্রক্রিয়া, এবং পুঁজিবাদী বাধার বাইরে শিল্পের সম্ভাবনার এক গভীর সম্ভাবনা তৈরি করেছে। সিনেমাটি দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে প্রদর্শিত হয়ার পরে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়া ও স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরার মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বেশ প্রশংসিত হয়েছে।
চলচ্চিত্রটির নৃতাত্ত্বিক ও শৈল্পিক গুরুত্বকে বিবেচনা করে আমস্টারডামের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সোশ্যাল সায়েন্স এটি সংরক্ষণ করেছে, যাতে এটি ভবিষ্যতে গবেষক ও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়ে ওঠে।
সিনেমা নিয়ে পরিচালক এস কে শুভ সাদিক বলেন, ‘এটি শুধু একটি চলচ্চিত্র নয়; এটি একপ্রকার ঘোষণাপত্র, একটি প্রতিরোধ, একটি প্রমাণ যে সিনেমা কোনো করপোরেশন বা বিনিয়োগকারীদের সম্পত্তি নয়—এটি তাদের, যারা সাহস করে নিজেদের গল্প বলে। আমরা অতি সীমিত বাজেটে কাজ করেছি, কিন্তু প্রমাণ করেছি যে সিনেমার সফলতা টাকার অঙ্কে নয়, বরং এর ক্ষমতায় এবং হারিয়ে যেতে বসা কণ্ঠগুলোকে সংরক্ষণ করার। এখন প্রযুক্তি আমাদের হাতে; আমাদের আর প্রচলিত সিনেমার ছক মেনে চলতে হবে না। সময় এসেছে নতুন আখ্যান খোঁজার, বাধাধরা কৌশল থেকে বেরিয়ে আসার এবং সিনেমাকে শিল্প হিসেবে পুনরুদ্ধার করার’।
সিনেমাটির চিত্রনাট্য সাইয়িদ শাহজাদা আল করীমের, হাসনাত সোহানের চিত্রগ্রহণ, নিশাত রাফার শিল্প নির্দেশনা, বায়েজীদ খানের সম্পাদনা এবং মশিউর রহমানের প্রযোজনায় সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে। পরিচালক জানান লামার ম্রো পল্লীর মানুষেরাই এই সিনেমার প্রাণ, যারা শুধু অভিনয় করেননি বরং নিজেরাই নিজেদের গল্প বলেছেন। সিনেমাটি অপোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে (কোরিয়া) অফিশিয়াল সিলেকশনে জায়গা পেয়েছে।