আরজি কর কাণ্ডে অপরাধীদের বিচারের দাবিতে রাত দখল কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। কিন্তু শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে পৌঁছানোর পর জনতার বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৪ সেপ্টেম্বর রাত দখল কর্মসূচিতে যোগ দেন ঋতুপর্ণা। অভিনেত্রী গাড়ি থেকে নামতেই ‘গো ব্যাক…গো ব্যাক’ শ্লোগান দিতে থাকেন উপস্থিত জনতা। এমন শ্লোগান শুরু হওয়ারপরও তিনি প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যান। তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ফলে দ্রুত অভিনেত্রীকে গাড়িতে তোলেন তার দেহরক্ষীরা।
বিষয়টি নিয়ে আরও জানা গেছে, ১৪ আগস্ট যখন রাত দখল কর্মসূচি পালন করা হয়, তখন দেশে না থাকার কারণে যোগ দিতে পারেননি ঋতুপর্ণা। তবে দুইদিন পর শঙ্খ বাজিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান তিনি। এতে চরম কটাক্ষের শিকার হন অভিনেত্রী। ঐ ঘটনার পর ৪ সেপ্টেম্বর নির্যাতিতার বিচার চেয়ে ফের রাত দখলের ঘোষণা আসলে নাগরিকদের পাশে দাঁড়াতে এসেছিলেন ঋতুপর্ণা। কিন্তু সশরীরে এসেও জনগণের মন রক্ষা করতে পারলেন না তিনি। উল্টো জনরোষের মুখে ফিরে যেতে হলো তাকে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পর সাংবাদিকদের ঋতুপর্ণা জানিয়েছিলেন, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আন্দোলনে যোগ দিতে এসেছেন তিনি। তবে কেন তাকে এমন বিক্ষোভের মুখে পড়তে হলো, তা স্পষ্ট নয় তার কাছে।
১৪ আগস্টের মত ৪ সেপ্টেম্বরের কর্মসূচিতেও ছিল লাখ লাখ মানুষ। রাত যত গভীর হচ্ছিলো কলকাতায় শ্লোগানের জোরও আরও বেড়ে যাচ্ছিলো। প্রতিবাদী জনতার হাতে এসময় দেখা গেছে মোমবাতি ও প্ল্যাকার্ড।
হঠাৎ সেখানে ঋতুপর্ণার আগমন ঘটলেই ক্ষোভে চিৎকার করে ওঠেন আন্দোলনকারীরা। পরবর্তীতে গাড়িতে উঠে চলে যেতে চাইলেও নিস্তার পাননি তিনি। অভিনেত্রীর গাড়িতে রীতিমতো ধাক্কা দেন আন্দোলনকারীরা। কিছুটা দূরে এগিয়ে গিয়ে অভিনেত্রীর গাড়িকে একটু দাঁড়াতে দেখা যায়। তখন আবারও গাড়িতে ধাক্কা মারতে দৌড়ান এক যুবক। পাশাপাশি আন্দোলনকারীরা চিৎকার করে বলেন, ‘ঋতুপর্ণা পালিয়ে গেছে’।
উল্লেখ্য যে, ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট ভোরের দিকে কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের বিশ্রামকক্ষ থেকে এক নারী ট্রেইনি চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তে জানা যায়, সেই চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছিল। তবে মরদেহ উদ্ধারের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন ঐ চিকিৎসক আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাটির খোলাসা হতেই বিচারের দাবিতে ফুঁসে ওঠে কলকাতাবাসী।