রাজধানীর বনানীর তৎকালীন ট্রাম্প ক্লাবের সামনে ২৫ বছর আগে গুলি করে হত্যা করা হয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে। তারিখটি ছিল- ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর। এই ঘটনার পরপরই গুলশান থানায় মামলা করা হয়। অবশেষে ২০২৪ সালের ৯ মে ঘোষণা করা হলো মামলাটির রায়।
ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক অরুণাভ চক্রবর্তী কর্তৃক এ রায় ঘোষণা করা হয়। মামলায় আজিজ মোহাম্মদ সহ তিনজনের যাবজ্জীবন আদেশ দিয়েছে আদালত।
জানা গেছে, কারাদণ্ডের পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া বাকি আরও ৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়নি। ফলে তাদের আদালত খালাস দিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, সোহেল চৌধুরীর হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ প্রমাণের জন্য ৩৩ জন সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মাত্র ১০ সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তাদের ১০ জনের মধ্যে ৩ জন সোহেল চৌধুরীকে খুনের অভিযোগ সমর্থন করে আদালতে সাক্ষ্য দেননি।
মূলত ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর গুলি করে চিত্রনায়ককে হত্যা করার পর সোহেলের ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন। নায়ক নিহত হওয়ার পরপরই এই হত্যাকাণ্ডে চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে।
আইনজীবী ও আদালত সংশ্লিষ্টদের সূত্রানুযায়ী, সেই মামলার অভিযুক্ত ৯ আসামির মধ্যে পাঁচজন পলাতক ছিলেন। তারা হলেন- ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আবদুল আজিজ, ট্রাম্প ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন ও আদনান সিদ্দিকী। এছাড়া আসামি আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী, তারিক সাঈদ মামুন ও ফারুক আব্বাসী জামিনে ছিলেন। আর কারাগারে ছিলেন সানজিদুল ইসলাম ইমন।
পরবর্তীকালে মামলাটির তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর আরও কিছু কার্যক্রম শেষে ২০০৩ সাল থেকে দীর্ঘ ১৯ বছর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটি স্থগিত ছিল।
সর্বশেষ, ২৯ এপ্রিল ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক অরুণাভ চক্রবর্তী রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার (৯ মে) ধার্য করেন। আর ৯ মে রায় ঘোষণা করা হলো।